বাস উল্টে আহত ২৬, শিশু সহ ছয়জনের অবস্থা গুরুতর

উত্তরপ্রদেশের কুশীনগরে বৃহস্পতিবার ভোরে ঘটে গেল এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা (Bus accident)। জয়পুর থেকে মধ্যবনীগামী একটি বিলাসবহুল স্লিপার বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডিভাইডারে ধাক্কা মেরে উল্টে যায়। ঘটনায় অন্তত ২৬ জন যাত্রী আহত হয়েছেন, যার মধ্যে ছয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের মধ্যে শিশুদেরও উপস্থিতি রয়েছে।

Advertisements

ঘটনাটি ঘটেছে কুশীনগরের তমকুহিরাজ থানার অন্তর্গত এলাকায় সকাল প্রায় ৬টা নাগাদ। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য অনুযায়ী, দ্রুতগতিতে চলা ওই বাসটি সামনে থাকা একটি ট্রাককে ওভারটেক করার সময় হঠাৎ ভারসাম্য হারিয়ে ডিভাইডারে ধাক্কা খায়। সঙ্গে সঙ্গেই বাসটি রাস্তার একপাশে উল্টে পড়ে। ঘটনার শব্দে চারপাশের গ্রামবাসীরা ছুটে এসে উদ্ধার কাজে হাত লাগান।

স্থানীয়রা বাসের জানালা ভেঙে ভেতরে আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধার করে বাইরে আনেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং স্থানীয়দের সহায়তায় আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। গুরুতর আহত ছয়জনকে দ্রুত পদ্রাউনা মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গুরুতর আহতদের মধ্যে রয়েছেন দরভঙ্গার বিজয় মিশ্র (৫৫), মধ্যবনীর প্রেমনগরের বিজয় মহতো (৪৫), তাঁর স্ত্রী ববিতা দেবী (৪০), এবং তাঁদের তিন কন্যা শিবানি (১১), অনামিকা (৯) ও আঁচলা (৭)। এঁদের অবস্থা উদ্বেগজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

অন্য আহত যাত্রীদের মধ্যে বেশিরভাগই মধ্যবনী, সমস্থিপুর ও চম্পারণ জেলার বাসিন্দা। তমকুহিরাজ কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে তাঁদের চিকিৎসা চলছে। প্রায় এক ডজন যাত্রী সামান্য আহত হন, যাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

Advertisements

দুর্ঘটনার জেরে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে ওই হাইওয়েতে যান চলাচল বন্ধ ছিল। দীর্ঘ যানজটে বিপর্যস্ত হয় সকালবেলার পথচারী ও যানবাহন চলাচল। পরে সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট (এসডিএম) অঙ্কাক্ষা মিশ্র ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা তদারকি করেন। তিনি জানান, “একটি ক্রেনের সাহায্যে উল্টে যাওয়া বাসটিকে রাস্তা থেকে সরানো হয়েছে। তিন ঘণ্টার প্রচেষ্টার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।”

পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে মনে করছে অতিরিক্ত গতি এবং চালকের অসাবধানতাই দুর্ঘটনার মূল কারণ। চালক ও সহচালক দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় বলে জানা গেছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে আহতদের চিকিৎসার খরচ বহন করা হবে বলে জানানো হয়েছে। কুশীনগর প্রশাসন ইতিমধ্যেই বাস সংস্থার বিরুদ্ধে অবহেলার মামলা রুজু করেছে।

এই ঘটনার জেরে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্থানীয়রা দাবি করেছেন, ওই রাস্তায় প্রায়ই দ্রুতগতির গাড়ি চলাচলের কারণে দুর্ঘটনা ঘটে। তাঁরা প্রশাসনের কাছে ওই এলাকায় স্পিড ব্রেকার ও পর্যাপ্ত আলোকসজ্জা স্থাপনের দাবি তুলেছেন।