বিজেপির (BJP) পশ্চিমবঙ্গ শাখার সাংগঠনিক নির্বাচন নিয়ে এখন চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পশ্চিমবঙ্গ শাখার নির্বাচনী প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার পর সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে নতুন একটি পদক্ষেপ নিয়েছে। সাংগঠনিক নির্বাচন বন্ধ করার পর, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এই সংক্রান্ত সমস্ত নথি তলব করেছে, যাতে রাজ্য পর্যায়ের নির্বাচন সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য তাদের কাছে পৌঁছাতে পারে। এর ফলে, রাজনৈতিক মহলে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এই সিদ্ধান্তের পিছনে হয়তো কোনো বড় পরিকল্পনা বা কৌশল রয়েছে।
রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্বের মধ্যে কয়েকজন বলছেন যে, নতুন সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পরে রাজ্য কমিটির বাকি সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হবে। এক অর্থে, বিজেপির নতুন ‘ক্যাপ্টেন’ রাজ্যের দলীয় দলকে সাজিয়ে নেবেন। তাঁদের মতে, নির্বাচন স্থগিত হলেও অনেক কাজই ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। তার মধ্যে মণ্ডল সভাপতি নির্বাচন প্রায় শেষের পথে। গত বুধবার বিভিন্ন জেলা থেকে পাঠানো নামের মধ্যে তিনটি বাছাই করে মণ্ডল সভাপতির পদে চূড়ান্ত করা হয়েছে।
বিজেপির নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ৪৩টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ৪০টি জেলায় মণ্ডল সভাপতি নির্বাচনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তিনি আরও জানান, এরা সবাই নির্বাচনযোগ্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। এখন, পরবর্তী ধাপে জেলা সভাপতি এবং রাজ্য সভাপতি নির্বাচনের কাজ শুরু হবে খুব দ্রুত। অর্থাৎ, বিজেপির সাংগঠনিক প্রক্রিয়া প্রায় শেষ হতে চলেছে।
এদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও বিজেপির সাংগঠনিক পরিস্থিতি নিয়ে কটাক্ষ করা হচ্ছে। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বিজেপির সংগঠনকে নিয়ে খোঁচা দিয়ে বলেছেন, “বিজেপির সংগঠনের হাল এমনিতেই খারাপ। সংগঠন করতে এবার অন্নপ্রাশনে যোগদান করবে।” তাঁর এই মন্তব্যে তৃণমূলের দলীয় মহলে বেশ মজা দেখা গেছে, কারণ বিজেপির অন্দরমহলে সংগঠনকে গুছিয়ে তোলার প্রচেষ্টার মধ্যেও রাজনৈতিক চাপানউতোরের পরিস্থিতি বিরাজমান।
তবে, বিজেপির মধ্যে একাংশ মনে করছে যে, এই সমস্ত প্রক্রিয়া শুধুমাত্র সাংগঠনিক দুর্বলতা থেকে উত্তরণের জন্য নয়, বরং রাজ্য রাজনীতিতে বিজেপির শক্তি বৃদ্ধি ও দীর্ঘমেয়াদী কৌশল হিসেবে নেওয়া হয়েছে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বিজেপি রাজ্য সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে।
বিজেপির (BJP) এই নতুন সিদ্ধান্তে আরও কিছু প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, যেমন—রাজ্য সভাপতি পদে কে আসবেন? জেলা সভাপতি নির্বাচনের পর, রাজ্য কমিটির বাকি সদস্যরা কীভাবে নির্বাচন করা হবে? দলের ভিতরে সাংগঠনিক নির্বাচন নিয়ে আরও কী সিদ্ধান্ত আসতে পারে? এসব বিষয় নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলতে থাকলেও, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবং রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যে ঐক্যমত্য ও সমন্বয় সৃষ্টির প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে একের পর এক ঘটনা সামনে আসছে। বিজেপির সাংগঠনিক সিদ্ধান্তের ফলাফল কেমন হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়, তবে রাজনৈতিক নজর রাখতে হবে রাজ্য জুড়ে।