গঙ্গাসাগর মেলা ( Maha kumbh Mela)Nউপলক্ষে ভিড়ের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়া পুণ্যার্থীদের চিকিৎসার জন্য রাজ্য সরকার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। একদিকে যেমন মেলায় আস্থায় থাকেন অসংখ্য তীর্থযাত্রী, অন্যদিকে তীর্থযাত্রীদের অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনা সামাল দিতে সরকার বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স সেবা, যা অনেকের জীবন বাঁচানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
গঙ্গাসাগর মেলায় পুণ্যস্নান করতে এসে আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়া একাধিক পুণ্যার্থীকে দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছানোর জন্য গত বছর থেকেই এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স সেবার ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। গত বছর ১৩ জন অসুস্থকে কলকাতায় দ্রুত পাঠানো হয়েছিল এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সের মাধ্যমে। এবছরও অবস্থা বিশেষ উন্নত হয়েছে। মেলা শুরুর আগে থেকেই রাজ্য প্রশাসন অসুস্থদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ৮ জন অসুস্থ পুণ্যার্থীকে এয়ারলিফ্ট করে কলকাতায় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিন গঙ্গাসাগরে পুণ্যস্নান করতে এসে দুই বৃদ্ধ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁদের হেলিকপ্টারে করে হাওড়ার ডুমুরজলা হেলিপ্যাডে নিয়ে আসা হয় এবং সেখান থেকে এমআর বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুণ্যার্থীদের জন্য এই বিশেষ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন বিশেষভাবে ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। এমনকি রবিবার সকালেও এক অসুস্থ পুণ্যার্থীকে সাগর থেকে হেলিকপ্টারে তুলে হাওড়ায় আনা হয়েছে।
গঙ্গাসাগর মেলায়, যেখানে লাখো মানুষ একত্রিত হন, সেখানে তীর্থযাত্রীদের চিকিৎসার জন্য একাধিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু থাকে। সেখানে ২৪ ঘণ্টা ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম উপস্থিত থাকে। তবে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে, হৃদরোগ বা অস্বাভাবিক শারীরিক অবস্থায় সময় খুব গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুত চিকিৎসা না পেলে রোগীর প্রাণ বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়ে। আর তাই রাজ্য সরকার এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করেছে, যাতে সময়মতো হাসপাতাল পৌঁছানো সম্ভব হয়।
রবিবার, উত্তপ্রদেশের এক ৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধ, যিনি পুণ্যস্নান করতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, তাঁকে দ্রুত সাগর থেকে হেলিকপ্টারে তুলে কলকাতায় পাঠানো হয়। চিকিৎসকদের মতে, তিনি ট্রানজিয়েন্ট ইস্কিমিক অ্যাটাকের শিকার ছিলেন, এবং তাঁর চিকিৎসার জন্য কলকাতায় পাঠানোই ছিল জীবনের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। একইভাবে, সোমবার ঝাড়খণ্ডের রমেশ দুবে ও মধ্যপ্রদেশের লখন সিংসহ পাঁচজনকে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়।
রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, গঙ্গাসাগর মেলার ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এই ধরনের উদ্যোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচেষ্টায় এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয়েছে, যার ফলে অসুস্থ রোগীদের দ্রুত কলকাতার হাসপাতালে পাঠিয়ে জীবন বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে।
এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স সেবা চালু হওয়ার পর থেকে গঙ্গাসাগর মেলায় পুণ্যার্থীদের চিকিৎসা পরিষেবার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সঠিক সময়ে চিকিৎসা পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে, যা অসংখ্য মানুষের জীবন রক্ষা করতে সাহায্য করছে।