আমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট এআই ১৭১-এর ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় (plane-crash) ২৪১ জন যাত্রী ও ক্রু সদস্যের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন যশা কামদার, তাঁর দুই সন্তান রুদ্র কামদার ও রক্ষা কামদার এবং তাঁর শাশুড়ি। এই ঘটনায় শোকস্তব্ধ যশার বাবা মনীষ কামদার।
তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে জানিয়েছেন, “কেউ আমাদের মৃত্যুর খবর জানায়নি, এবং বিমানবন্দর (plane-crash) কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কোনো সাহায্যও পাইনি। যশা তার শাশুড়ি ও ছেলের সঙ্গে লন্ডন যাচ্ছিলেন… আমার ছেলে এখানে হাসপাতালে ডিএনএ নমুনা দিচ্ছে।” এদিকে, এই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনায় একমাত্র জীবিত ব্যক্তি বিশ্বাস কুমার রমেশ।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই ব্রিটিশ নাগরিক অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে গেছেন। দূরদর্শনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি তাঁর আতঙ্কের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন(plane-crash) । বিশ্বাস জানিয়েছেন, তাঁর আসন ১১-এ ছিল, যেটি বিমানের এমন একটি অংশে অবস্থিত ছিল যা দুর্ঘটনার সময় একটি ভবনের নিচতলায় আঘাত পেয়েছিল।
তিনি বলেন, “আমি আমার সিটবেল্ট খুলে বিমান থেকে বেরিয়ে আসি। আগুন লাগার সময় আমার বাঁ হাত পুড়ে যায়। আমি যে পাশে বসেছিলাম, সেটি হোস্টেলের দিকে ছিল না, বরং ভবনের নিচতলায়। আমি জানি না অন্যরা কী অবস্থায় ছিল, তবে আমার আসনের অংশটি নিচতলায় পড়েছিল এবং সেখানে কিছু ফাঁকা জায়গা ছিল। দরজা ভেঙে যাওয়ার পর আমি দেখি, একটু জায়গা আছে। আমি চেষ্টা করে বেরিয়ে আসি।”
বিশ্বাস আরও বলেন(plane-crash) , “বিমানের অন্য পাশে একটি ভবনের দেয়াল ছিল, এবং সেই দিকে বিমানটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। সম্ভবত সেই কারণেই ওই দিক থেকে কেউ বেরোতে পারেনি। শুধু আমার জায়গাটিতে কিছু ফাঁকা স্থান ছিল। আমি জানি না কীভাবে বেঁচে গেলাম।”
তিনি তাঁর ভয়াবহ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, “আমি শুধু যাত্রী ও ক্রু সদস্যদের মৃতদেহ দেখেছি। কিছুক্ষণের জন্য মনে হয়েছিল আমিও মরে যাব। কিন্তু চোখ খুলে দেখি, আমি বেঁচে আছি(plane-crash) । আমি সিটবেল্ট খুলে সেখান থেকে পালিয়ে আসি। চারপাশে শুধু মৃতদেহ—মামা-মাসি, এয়ার হোস্টেসদের দেহ।”
দুর্ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে বিশ্বাস বলেন, “টেকঅফের পর ৫-১০ সেকেন্ডের মধ্যে মনে হল সবকিছু থমকে গেছে। বিমানে সবুজ ও সাদা আলো জ্বলে উঠেছিল। আমার মনে হয়, টেকঅফের জন্য বিমানের গতি বাড়ানো হয়েছিল, এবং তখনই এটি হোস্টেলের ভবনে ধাক্কা মারে। সবকিছু আমার চোখের সামনে ঘটেছে।”
বিশ্বাসের বেঁচে যাওয়াকে সত্যিই অলৌকিক বলা যায়। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদী আমার সঙ্গে ঘটনা সম্পর্কে কথা বলেছেন(plane-crash) । আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না যে আমি কীভাবে বেঁচে গেলাম।” বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিশ্বাস জানিয়েছেন, “এখানকার মানুষ আমার সঙ্গে খুব ভালো ব্যবহার করছে। সবাই খুব সদয়।”
এই দুর্ঘটনা (plane-crash) শুধু যশা কামদারের পরিবারকেই নয়, বহু পরিবারকে শোকে ডুবিয়েছে। মনীষ কামদারের মতো অনেকেই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো তথ্য বা সাহায্য না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। দুর্ঘটনার কারণ এখনও স্পষ্ট নয়, তবে তদন্ত চলছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, বিমানটি টেকঅফের কিছুক্ষণ পরই একটি হোস্টেল ভবনে আছড়ে পড়ে। এই ঘটনায় আমেদাবাদের বাসিন্দারা শোকাহত।
দিঘার রথযাত্রার নিরাপত্তা নিয়ে নবান্নে বিশেষ বৈঠক মুখ্যমন্ত্রীর
বিশ্বাস কুমারের এই অলৌকিক বেঁচে ফেরার গল্প যেমন আশার আলো জাগায়, তেমনই এই দুর্ঘটনার ভয়াবহতা সবাইকে স্তম্ভিত করে দিয়েছে। সরকার ও বিমান সংস্থার পক্ষ থেকে এখনও বিস্তারিত কোনো বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি। তবে এই ঘটনা বিমান চলাচলের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো সকলের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী(plane-crash) । তিনি বিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলে তাঁর অবস্থার খোঁজখবর নিয়েছেন। এই ঘটনার তদন্তে স্বচ্ছতা ও দ্রুততার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এই মর্মান্তিক ঘটনা আমাদের সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেয় জীবনের অনিশ্চয়তা। যশা, রুদ্র, রক্ষা এবং অন্যান্য যাত্রীদের স্মৃতি আমাদের মনে থাকবে। আমরা প্রার্থনা করি, তাঁদের আত্মা শান্তি লাভ করুক।