বিজেপি নেতাদের উপর হামলায় মমতার সরকারকে তীব্র কটাক্ষ স্মৃতি ইরানির

উত্তরবঙ্গের বন্যা ও ভূমিধসে বিপর্যস্ত নাগরাকাটায় বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ও বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের উপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফের চড়ছে রাজনৈতিক পারদ। ঘটনাটি ঘিরে…

Smriti Irani

উত্তরবঙ্গের বন্যা ও ভূমিধসে বিপর্যস্ত নাগরাকাটায় বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ও বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের উপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফের চড়ছে রাজনৈতিক পারদ। ঘটনাটি ঘিরে মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন কেন্দ্রীয় প্রাক্তন মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি (Smriti Irani)।

Advertisements

স্মৃতি এক্স-এ লেখেন, “পশ্চিমবঙ্গে বন্যা দুর্গতদের সাহায্য করতে গিয়ে বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ও বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের উপর হওয়া নৃশংস হামলা রাজ্যের প্রশাসনিক ও নৈতিক অবক্ষয়কেই তুলে ধরে। বাংলার আইনশৃঙ্খলা আজ ভেঙে পড়েছে। সংগঠিত হিংসা ও ক্ষমতার দাম্ভিকতাই এখন বাস্তবতা। সন্দেশখালি থেকে নাগরাকাটা— সর্বত্র তৃণমূলের শাসন আতঙ্ক ও আইনহীনতার প্রতীক। বাংলা এই গুন্ডারাজের চেয়ে ভালো কিছু প্রাপ্য।”

   

ঘটনা প্রসঙ্গে জানা গেছে, সোমবার নাগরাকাটায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ও শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। সেই সময় তাঁদের গাড়িতে হামলা চালায় উত্তেজিত জনতার একটি অংশ। বিজেপির দাবি, হামলাকারীরা তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থক এবং ইচ্ছাকৃতভাবে এই আক্রমণ চালানো হয়েছে। এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ইতিমধ্যেই কমপক্ষে ৩০ জন প্রাণ হারিয়েছেন, অনেকে এখনও নিখোঁজ।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, “বিজেপি নেতাদের উপর এমন নৃশংস আক্রমণ একেবারে অগ্রহণযোগ্য। বাংলার আইনশৃঙ্খলার অবস্থা শোচনীয়। আমাদের কর্মীদের অনুরোধ করব, তাঁরা যেন উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে অবিচল থাকেন।”

অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা আক্রমণ করে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী একটি প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে রাজনৈতিক রঙ দিতে চাইছেন। যথাযথ তদন্তের আগে এমন মন্তব্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।”

কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলও মমতা সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করে বলেন, “এই নিন্দনীয় ঘটনা প্রমাণ করে দিয়েছে যে তৃণমূল সরকারের অধীনে আইনশৃঙ্খলা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। প্রশাসনের উদাসীনতা ও ব্যর্থতাকে আড়াল করতে সহিংসতার আশ্রয় নেওয়া হচ্ছে। বিজেপি কর্মীরা পিছিয়ে যাবে না, তাঁরা মানুষের পাশে থাকবেন।”

বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগ, “খগেন মুর্মু ও শঙ্কর ঘোষকে মমতার পুলিশের সামনেই নির্মমভাবে মারধর করা হয়েছে।”

অন্যদিকে, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, “স্থানীয় মানুষদের ক্ষোভ ও হতাশার ফলেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিজেপি নেতারা মিডিয়ার সামনে রাজনৈতিক প্রচারের চেষ্টা করছিলেন। আমরা কোনও হিংসাকে সমর্থন করি না, তবে এটি তাঁদের উস্কানির ফল।”

রাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গন এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিজেপি অভিযোগ করেছে যে রাজ্যে ‘গুন্ডারাজ’ চলছে এবং তৃণমূল সরকার প্রশাসনিকভাবে ব্যর্থ। পাল্টা তৃণমূল বলেছে, বিজেপি প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সুযোগ নিয়ে রাজনীতি করছে। তদন্ত শুরু হয়েছে, তবে হামলার ঘটনা ইতিমধ্যেই রাজ্যের রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।