টাটা গোষ্ঠীর অন্যতম কর্ণধার, ল্যাকমির রূপকার এবং ভারতের প্রসাধন শিল্পে বিপ্লব ঘটানো সিমোনে টাটা আর নেই। শুক্রবার সকালে মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৯৫। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। বছরের শুরুতে অসুস্থ হয়ে দুবাইয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন সিমোনে। আগস্টে দেশে ফিরে তাঁকে ভর্তি করা হয় ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে। সেখানেই শেষ অধ্যায়।
সিমোনে ছিলেন টাটা সন্স-এর চেয়ারম্যান নোয়েল টাটার মা এবং শিল্পপতি রতন টাটার সৎমা। তাঁর প্রয়াণে টাটা গোষ্ঠী থেকে শিল্পমহল—সব জায়গাতেই নেমে এসেছে গভীর শোক। রেখে গেলেন ছেলে নোয়েল, পুত্রবধূ আলু মিস্ত্রি এবং তিন নাতি-নাতনি—নেভিল, মায়া ও লিয়া।
টাটা গোষ্ঠীর তরফে জারি করা বিবৃতিতে সিমোনের অবদানকে স্মরণ করে বলা হয়েছে, “ভারতের শীর্ষস্থানীয় কসমেটিক ব্র্যান্ড হিসেবে ল্যাকমির বিস্তার এবং ওয়েস্টসাইড চেনের বিকাশে তাঁর ভূমিকা চিরস্মরণীয় থাকবে। স্যার রতন টাটা ইনস্টিটিউট-সহ বহু জনহিতকর কাজে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।” শনিবার সকালে কোলাবার ক্যাথেড্রাল অফ দ্য হলি নেম চার্চে সিমোনেকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হবে।
জেনেভা থেকে মুম্বই — এক অসাধারণ যাত্রা
১৯৩০ সালের মার্চে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জন্ম সিমোনের। ১৯৫৩ সালে পর্যটক হিসেবে প্রথমবার ভারতে আসেন। দু’বছর পরে, ১৯৫৫ সালে শিল্পপতি নাভাল টাটার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়—যা শুরু করে টাটা পরিবারে তাঁর দীর্ঘ, কর্মময় অধ্যায়।
১৯৬১ সালে টাটা গোষ্ঠীতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেন সিমোনে। সে সময় ল্যাকমি ছিল টাটা অয়েল মিলসের একটি ছোট সহায়ক ইউনিট। সেখান থেকেই ব্র্যান্ডকে জাতীয় মানচিত্রে তুলে আনেন তিনি। ১৯৮২ সালে ল্যাকমির চেয়ারপার্সন হয়ে তিনি ভারতীয় প্রসাধন শিল্পকে এক নতুন দিগন্ত দেখান।
দেশে নারী পরিচর্যার বাজারে ল্যাকমিকে এক সুদৃঢ়, আধুনিক পরিচয়ে প্রতিষ্ঠিত করার কৃতিত্ব তাঁরই। এজন্যই তাঁকে বলা হয়—ভারতের কসমেটিক্স জগতের ‘সম্রাজ্ঞী’।
সিমোনে টাটার মৃত্যু ভারতের শিল্প–বাণিজ্যিক পরিসরে এক যুগের অবসান ঘটাল।

