কাশ্মীরের জঙ্গি কার্যকলাপের পর্দাফাঁস করতে অভিযান এস আই এ

কাশ্মীরের (kashmir) রাজ্য তদন্ত সংস্থা (SIA) দক্ষিণ কাশ্মীরের ২০টি স্থানে জঙ্গি ষড়যন্ত্র মামলার সঙ্গে সংযুক্ত তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে। পুলিশের বিবৃতি অনুসারে, এই অভিযানগুলি পাকিস্তান-ভিত্তিক…

kashmir sia is investigating for terrorist

কাশ্মীরের (kashmir) রাজ্য তদন্ত সংস্থা (SIA) দক্ষিণ কাশ্মীরের ২০টি স্থানে জঙ্গি ষড়যন্ত্র মামলার সঙ্গে সংযুক্ত তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে। পুলিশের বিবৃতি অনুসারে, এই অভিযানগুলি পাকিস্তান-ভিত্তিক হ্যান্ডলারদের জন্য মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করা জঙ্গি সহযোগী এবং ওভারগ্রাউন্ড ওয়ার্কারদের (ওজিডব্লিউ) উপর নজরদারি বৃদ্ধির মধ্যে পরিচালিত হয়েছে। এই অভিযানগুলি জঙ্গি কার্যকলাপের বিরুদ্ধে ভারতের দৃঢ় অবস্থান এবং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার প্রতিশ্রুতিকে পুনরায় নিশ্চিত করে।

পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে (kashmir)

পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে, প্রযুক্তিগত নজরদারির মাধ্যমে জানা গেছে যে এই অঞ্চলের বেশ কয়েকটি স্লিপার সেল সীমান্তের ওপারে থাকা জঙ্গি হ্যান্ডলারদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করছিল। এই সেলগুলি ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার সঙ্গে সম্পর্কিত সংবেদনশীল এবং কৌশলগত তথ্য হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম এবং সিগন্যালের মতো এনক্রিপ্টেড মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পাঠাচ্ছিল।

   

কর্মকর্তারা (kashmir) জানিয়েছেন, সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা লস্কর-ই-তৈয়বা এবং জৈশ-ই-মোহাম্মদের মতো নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের কমান্ডারদের নির্দেশে অনলাইনে উগ্র প্রচারণা ছড়াচ্ছিল। কর্তৃপক্ষের মতে, এই ক্রিয়াকলাপগুলি ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় অখণ্ডতার জন্য হুমকিস্বরূপ এবং জনগণের মধ্যে বিশৃঙ্খলা ও সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছিল।

এই অভিযানগুলি পুলিশ স্টেশন সিআই/এসআইএ কাশ্মীরের অধীনে নথিভুক্ত মামলা এফআইআর নং ০১/২০২৫-এর অধীনে পরিচালিত হয়েছে, যা বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের বিভিন্ন ধারা, যেমন ধারা ১৩, ১৭, ১৮, ১৮-বি, ৩৮ এবং ৩৯-এর অধীনে নথিভুক্ত করা হয়েছে। অভিযানের সময় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে অপরাধমূলক উপকরণ উদ্ধার করা হয়েছে এবং একাধিক সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।

এসআইএ-র একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন

এসআইএ-র একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে জঙ্গি ষড়যন্ত্র পরিচালনা এবং অনলাইন ও অফলাইনে ভারত-বিরোধী প্রচারণা ছড়ানোর জন্য একটি সুসংগঠিত প্রচেষ্টার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এসআইএ জানিয়েছে, তারা জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা এবং জনশৃঙ্খলা বজায় রাখার মিশনে অটল রয়েছে। সংস্থাটি জোর দিয়ে বলেছে, “যারা কোনো ধরনের জঙ্গি বা বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে।”

এই অভিযানগুলি এমন এক সময়ে পরিচালিত হয়েছে যখন দক্ষিণ কাশ্মীরে (kashmir) জঙ্গি কার্যকলাপের বিরুদ্ধে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পহেলগাঁওয়ে ২২ এপ্রিল ২০২৫-এ ঘটে যাওয়া জঙ্গি হামলার পর, যেখানে ২৬ জন নিরীহ পর্যটক নিহত হয়েছিল, ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী জঙ্গি নেটওয়ার্কগুলির উপর তীব্র নজর রাখছে। এই হামলার জন্য কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স নামে একটি স্বল্প পরিচিত গোষ্ঠী দায় স্বীকার করেছিল, যাকে ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলি লস্কর-ই-তৈয়বা এবং হিজবুল মুজাহিদিনের মতো পাকিস্তান-ভিত্তিক সংগঠনের মুখোশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

ভারতীয় ক্রিকেটে এই ক্ষেত্রে প্রভাব পড়বে কোহলির অবসরে!

Advertisements

অপারেশন সিঁদুরের প্রেক্ষাপটে আরও তাৎপর্যপূর্ণ

এই অভিযানগুলি অপারেশন সিঁদুরের প্রেক্ষাপটে আরও তাৎপর্যপূর্ণ, যেখানে ভারত পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে (kashmir) নয়টি জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করেছিল। এই অভিযান ছিল পহেলগাঁও হামলার প্রতিশোধ হিসেবে পরিচালিত।

তবে, শনিবার ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যেখানে দুই দেশের সামরিক অপারেশনের মহাপরিচালকরা (ডিজিএমও) স্থল, আকাশ এবং সমুদ্রে গোলাগুলি ও সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ করতে সম্মত হয়েছেন। ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকাকে কম গুরুত্ব দিয়ে বলেছে যে এই সমঝোতা দুই দেশের মধ্যে সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে হয়েছে।

ভারত বারবার তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করেছে

জম্মু ও কাশ্মীরের বিষয়ে ভারত বারবার তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং স্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে এই অঞ্চল ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই অভিযানগুলি এই অবস্থানকে আরও জোরালো করে। এসআইএ-র অভিযানে উদ্ধারকৃত উপকরণগুলির মধ্যে ডিজিটাল ডিভাইস, নথি এবং অন্যান্য প্রমাণ রয়েছে, যা তদন্তকে আরও গভীর করতে সহায়তা করবে। সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে এই নেটওয়ার্কের পাকিস্তানি হ্যান্ডলারদের সঙ্গে সংযোগ এবং তাদের পরিকল্পনার বিস্তারিত তথ্য বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

এই অভিযানগুলি দক্ষিণ কাশ্মীরের (kashmir) শোপিয়ান, কুলগাম, অনন্তনাগ এবং পুলওয়ামা জেলায় পরিচালিত হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই অভিযানগুলি ভোরবেলা শুরু হয় এবং স্থানীয় পুলিশ ও কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনীর (সিআরপিএফ) সহায়তায় পরিচালিত হয়। অভিযানের সময় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল, এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছিল।

এসআইএ জানিয়েছে

এই অভিযানগুলি ভারতের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার নীতির প্রতিফলন। এসআইএ জানিয়েছে, তারা এই অঞ্চলে জঙ্গি নেটওয়ার্কগুলি ভেঙে ফেলতে এবং তাদের সমর্থন ব্যবস্থা নির্মূল করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সংস্থাটি স্থানীয় জনগণের কাছে আহ্বান জানিয়েছে, যাতে তারা সন্দেহজনক কার্যকলাপ সম্পর্কে তথ্য প্রদান করে নিরাপত্তা বাহিনীকে সহায়তা করে।

এই ঘটনা কাশ্মীরে (kashmir) চলমান সন্ত্রাসবাদী হুমকির জটিলতাকে তুলে ধরে। যদিও শান্তি চুক্তি সাময়িকভাবে সংঘর্ষ কমিয়েছে, তবুও সীমান্ত পেরিয়ে জঙ্গি কার্যকলাপ অব্যাহত রয়েছে। এসআইএ-র এই অভিযানগুলি ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর সতর্কতা এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তাদের অবিরাম লড়াইয়ের প্রমাণ। তবে, এই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আরও ব্যাপক কূটনৈতিক এবং সামাজিক প্রচেষ্টার প্রয়োজন।