দাউদ-যোগ সন্দেহে ২৫২ কোটির মাদক মামলায় শ্রদ্ধা–নোরার নাম!

shraddha-kapoor-nora-fatehi

মুম্বই পুলিশের অ্যান্টি-নারকোটিকস সেল পরিচালিত এক ২৫২ কোটি টাকার ড্রাগ ট্রাফিকিং তদন্ত ঘিরে নতুন চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে বলেই সূত্রের দাবি। বিভিন্ন মিডিয়া রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে এই মামলায় বলিউডের দুই জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রদ্ধা কাপুর (Shraddha Kapoor) এবং নোরা ফাতেহির নাম উঠে এসেছে। যদিও পুলিশ এখনও পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করেনি বা তাদের বিরুদ্ধে কোনও অপরাধ প্রমাণিত হয়নি।

Advertisements

পুলিশের অ্যান্টি-নারকোটিকস সেল সম্প্রতি ড্রাগ ট্রাফিকিং চক্রের সঙ্গে যুক্ত সন্দেহে শেখ নামের এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তদন্তকারী কর্মকর্তাদের দাবি, অভিযুক্ত তাঁর জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কয়েকজন বলিউড তারকার নাম উল্লেখ করেন, যারা নাকি বিভিন্ন ব্যক্তিগত পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন। এই পার্টিগুলি বেশ কিছু প্রাইভেট ফার্মহাউসে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলেই পুলিশ নথিতে উল্লেখ রয়েছে।

   

তবে কর্মকর্তারা স্পষ্ট করেছেন—

➡ “কেউ পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন মানেই তিনি অপরাধে জড়িত—এমন নয়।”

➡ “এখনও পর্যন্ত কোনও তারকার বিরুদ্ধে অপরাধমূলক প্রমাণ মেলেনি।”

এই বক্তব্যে বোঝা যাচ্ছে, তদন্ত এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে এবং পুলিশ শুধুমাত্র সাক্ষ্য, বিবৃতি ও তথ্য মিলিয়ে কাজ এগোচ্ছে।

দাউদ চক্র–যোগ নিয়ে তদন্ত তীব্র

মিডিয়া রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, এই ড্রাগ র‌্যাকেটের সঙ্গে দাউদ ইব্রাহিমের নেটওয়ার্কের যোগ থাকতে পারে। যদিও মুম্বই পুলিশ আনুষ্ঠানিকভাবে এমন কোনও মন্তব্য করেনি। তদন্তকারী সূত্রগুলির বক্তব্য—

➡ “র‌্যাকেটের আর্থিক লেনদেনে কিছু সন্দেহজনক চ্যানেল পাওয়া গেছে।”

➡ “অভিযুক্তদের কল রেকর্ড, ব্যাংক লেনদেন ও বিদেশি যোগাযোগ তদন্ত করা হচ্ছে।”

দাউদ বা তার চক্রের যোগ আছে কিনা, তা জানতে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থার সঙ্গে মুম্বই পুলিশ তথ্য ভাগ করছে বলেই জানা গেছে।

বলিউডে উথাল-পাথাল প্রতিক্রিয়া

শ্রদ্ধা কাপুর ও নোরা ফাতেহি—দু’জনই জনপ্রিয় বলিউড মুখ। তাঁদের নাম তদন্তে উঠতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা জল্পনা শুরু হয়।

➡ দু’জনের টিমের পক্ষ থেকেই এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি।

➡ তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও চার্জ বা FIR নেই।

➡ পুলিশ সূত্র বলছে, “প্রয়োজনে তাঁদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।”

বলিউডের অভ্যন্তরে কিছু ব্যক্তিত্ব বলেছেন,

Advertisements

“কোনও অভিনেত্রীর নাম তদন্তে উঠে এলেই তাঁরা অভিযুক্ত হয়ে যান—এটি ঠিক নয়। আইনের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হোক।”

অ্যান্টি-নারকোটিকস সেলের চলমান তদন্ত

তদন্তকারী দল এই মামলার তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যাচাই করছে—

  1. মাদক পাচারের আর্থিক প্রবাহ কোথা থেকে কোথায় গেছে

  2. কোন কোন ব্যক্তি র‌্যাকেটের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত

  3. প্রাইভেট পার্টিগুলোতে কী ধরনের কার্যকলাপ চলত এবং কারা সেই পার্টিতে নিয়মিত আসতেন

একাধিক সূত্র বলছে, তদন্তে সোশ্যাল মিডিয়া চ্যাট, ডিজিটাল ফরেনসিক ডেটা, ফার্মহাউসের CCTV ফুটেজ, আর্থিক লেনদেন ও কাস্টমস রেকর্ড পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

এখনও পর্যন্ত কী প্রমাণ পেল পুলিশ?

মুম্বই পুলিশের মতে—

➡ এখনও পর্যন্ত অভিনেত্রীদের বিরুদ্ধে কোনও অপরাধমূলক প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

➡ তদন্তে তাঁদের নাম এসেছে কেবলমাত্র একজন অভিযুক্তের বিবৃতি থেকে

এই আওতায় পুলিশ বারবার বলছে—

“বিবৃতি মানেই প্রমাণ নয়।”

সুতরাং এই পর্যায়ে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও সিদ্ধান্তমূলক মন্তব্য করা তদন্তের স্বার্থে ভুল হবে বলে জানাচ্ছেন কর্মকর্তারা।

সামাজিক মাধ্যমে বিভ্রান্তি—পুলিশের সতর্কবার্তা

এই ঘটনায় জল্পনা বাড়তেই মুম্বই পুলিশ সাধারণ মানুষকে সতর্ক করেছে—

➡ “অভিযোগ প্রমাণের আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে মানহানিকর মন্তব্য করবেন না।”

➡ “তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই গুজব ছড়ানো আইনত অপরাধ।”

২৫২ কোটি টাকার এই ড্রাগ ট্রাফিকিং মামলায় বলিউড তারকাদের নাম উঠলেও,

✔ এখনও পর্যন্ত তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ প্রমাণিত নয়

✔ তদন্ত চলছে প্রাথমিক পর্যায়ে

✔ পুলিশের ফোকাস এখন মূল র‌্যাকেট, আর্থিক চ্যানেল ও অপরাধী নেটওয়ার্কের ওপর

তদন্ত যত এগোচ্ছে ততই নতুন তথ্য সামনে আসছে, কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তদন্ত শেষ হওয়ার পরই জানানো যাবে বলে জানিয়েছে মুম্বই পুলিশ অ্যান্টি-নারকোটিকস সেল।