হাসিনার ফাঁসির আদেশে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের পোস্টে চাঞ্চল্য

sheikh-hasina-verdict-india-reaction

নয়াদিল্লি: বাংলাদেশের রাজনীতির আকাশে যেন আরেকবার বজ্রপাত হল সোমবার (Sheikh Hasina )। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) তিন সদস্যের বেঞ্চ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড দিল। গত বছরের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সরকারের নির্দেশে চালানো নির্মম দমন-পীড়নের জন্য এই রায়। কিন্তু হাসিনা এখন ভারতে শরণার্থী জীবন যাপন করছেন, তাই এই রায়ের পর দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক মঞ্চে ভারতের ভূমিকা নিয়ে সবার আগ্রহ।

Advertisements

এই আবহেই মুখ খুললেন ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সয়াল। তিনি তার এক্স হ্যান্ডেলের পোস্টে লিখেছেন “বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যে রায় ঘোষণা করেছে, তা ভারতের নজরে এসেছে। ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হিসেবে ভারত বাংলাদেশের জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থ বিশেষত শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

   

2025 Tata Sierra-র আনঅফিসিয়াল বুকিং শুরু, লঞ্চ কবে দেখুন

এই লক্ষ্যেই আমরা সব পক্ষের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে আলোচনা ও সম্পৃক্ততা বজায় রাখব।” এই বক্তব্যেই বেড়েছে দুই দেশের কূটনৈতিক চাপানউতোর। কেউ কেউ বলেছেন তাঁর বক্তব্য যেন একটা সূক্ষ্ম ভারসাম্যের নমুনা। কোনো সরাসরি সমর্থন নয়, কোনো প্রত্যর্পণের ইঙ্গিত নয়, শুধু বাংলাদেশের ‘শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি এবং স্থিতিশীলতা’র প্রতি প্রতিশ্রুতি।

এই বক্তব্যের পর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। সোমবার দুপুরে ঢাকায় আইসিটির রায় ঘোষণার পর বাংলাদেশে উত্তেজনা চরমে। হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। বিচারকরা বলেছেন, হাসিনা উস্কানি দিয়েছিলেন, হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং অপরাধ প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়েছিলেন।

Advertisements

গণঅভ্যুত্থানে অন্তত ১৪০০ মানুষ নিহত হয়, হাজারো আহত এবং গুমের ঘটনা ঘটে। রায়ের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররা উল্লাসে মেতে উঠলেও আওয়ামী লীগের নেতারা এটাকে ‘রিগড ট্রাইব্যুনালের ফলস্বরূপ’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন। হাসিনা নিজে ইমেলের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, “এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। আমি কোনো নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত, কিন্তু এই ‘ক্যাঙ্গারু কোর্ট’ আমার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার সুযোগই দেয়নি।”

তাঁর ছেলে সাজীব ওয়াজেদ জয়ও বলেছেন, এটা ‘অবৈধ সরকারের ষড়যন্ত্র’। রায় ঘোষণার পরেই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হাসিনার প্রত্যর্পণের অনুরোধ জানিয়েছে। আইসিটির প্রধান অভিযোগকারী মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, “আমরা ২০১৩ সালের এক্সট্রাডিশন ট্রিটির অধীনে ভারতকে অনুরোধ করেছি। এটা রাজনৈতিক অপরাধ নয়, মানবতাবিরোধী অপরাধ। ভারত বাধ্য।”

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সরকার এই রায়কে ‘ঐতিহাসিক’ বলে অভিহিত করেছে, বলেছে এতে ‘জুলাইয়ের শহীদদের ন্যায়বিচার’ হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ বলছে, এটা ‘অবৈধ সরকারের রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড’। দলটি ফেব্রুয়ারির নির্বাচন বয়কট করার হুমকি দিয়েছে যদি তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা না তুলে নেওয়া হয়। সামাজিক মাধ্যমে তো বন্যা কেউ বলছে ‘হয়েছে শেষ’, কেউ বলছে ‘ভারত হাসিনাকে বাঁচাবে না’