ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদী দমন অভিযানে এক বড় সাফল্য এসেছে। বিজাপুরে গত রবিবার পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে ১২ জন মাওবাদী নিহত হয়েছেন। তবে, পাল্টা হামলায় নিরাপত্তাবাহিনীর দু’জন সদস্যের মৃত্যু হয়েছে এবং আরও দু’জন গুরুতর আহত হয়েছেন। গত সপ্তাহে বিজাপুরে একই ধরনের একটি এনকাউন্টারে ৮ জন মাওবাদী নিহত হয়েছিলেন। এই ঘটনাটি ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে চলমান দমন অভিযানের একটি অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত শুক্রবার বিজাপুরের জঙ্গলের একটি এলাকায় মাওবাদীদের উপস্থিতি সম্পর্কে খবর পাওয়া যায়। এর পরেই সিআরপিএফ, ছত্তীসগঢ় সশস্ত্র পুলিশ এবং কোবরা ইউনিটের যৌথ বাহিনী অভিযানে নামে। শনিবার রাত থেকে শুরু হওয়া গুলির লড়াইয়ে ১২ জন মাওবাদী নিহত হন। তবে মাওবাদীরা পাল্টা আক্রমণ করলে নিরাপত্তাবাহিনীর দু’জন সদস্য প্রাণ হারান এবং আরও দু’জন আহত হন।
প্রসঙ্গত, ছত্তীসগঢ়ের মাওবাদী সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চলমান, তবে গত কয়েক বছরে দেশ থেকে মাওবাদীদের উৎখাত করার জন্য ব্যাপক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বারবার ঘোষণা করেছেন, ২০২৬ সালের ৩১ মার্চ মাওবাদীদের দেশের মাটি থেকে চিরতরে নির্মূল করা হবে। মাওবাদীদের আত্মসমর্পণেও উৎসাহিত করা হয়েছে, যারা আত্মসমর্পণ করবেন, তাদের জন্য চাকরি এবং অন্যান্য সরকারি সুবিধা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
গত বছর সরকারের হিসেব অনুযায়ী, ২০৭ জন মাওবাদী নিহত হয়েছেন এবং বহু অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। বিশেষ করে বস্তার ডিভিশনে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে যৌথবাহিনীর অভিযান তীব্র হয়েছে। ৩ জানুয়ারি থেকে নতুন করে মাওবাদী দমন অভিযান শুরু হয়েছে। এই অভিযানের আওতায় বিজাপুর, সুকমা, নারায়ণপুর, দন্তেওয়াড়া, জগদলপুর, কাঁকের এবং কোন্ডাগাঁও জেলার পাহাড়-জঙ্গল এলাকায় চলছে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান।
এছাড়া, মাওবাদী গেরিলাদের মূল স্রোতে ফিরে আসার জন্য প্রচার অভিযানও চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যেই কয়েকজন মাওবাদী নেতা আত্মসমর্পণ করেছেন, তাদের মধ্যে গান্ধী তাঁতি ওরফে কমলেশ, মাইনু ওরফে হেমলাল কোর্রাম, রঞ্জিত লেকামি ওরফে অর্জুন এবং তার স্ত্রী কোসি ওরফে কাজল অন্যতম। এই আত্মসমর্পণগুলি সরকারের মাওবাদী দমন অভিযানে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।
মাওবাদী দমন অভিযানে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে সরকারের অভিযান এখনও চলমান রয়েছে, এবং আশা করা হচ্ছে, এ ধরনের সাফল্য ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। তবে, দেশের বিভিন্ন অংশে মাওবাদী গেরিলাদের উপস্থিতি এখনো বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে রয়েছে, এবং সেগুলি মোকাবিলা করতে সরকারের পক্ষ থেকে আরও কড়া পদক্ষেপের প্রয়োজন হতে পারে।