মণিপুরের ইম্ফল পশ্চিম জেলার লামশাং পুলিশ স্টেশনের অধীনে সাইরেমখুল এলাকায় এক যৌথ অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। এই অভিযানটি ছিল নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে হিল এবং ভ্যালি জেলার প্রান্তিক এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় পরিচালিত সার্চ অপারেশন ও অঞ্চল ডমিনেশন কর্মসূচির অংশ।
এই অভিযানে উদ্ধার হওয়া সামগ্রীর মধ্যে ছিল একাধিক ভারী এবং আধুনিক অস্ত্র, যা নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে বড় ধরনের সাফল্য হিসেবে গণ্য হচ্ছে। উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে ছিল একটি ৫.৫৬ মিমি ইনসস লাইট মেশিন গান সহ একটি ম্যাগাজিন, একটি একে-৫৬ রাইফেল এবং একাধিক সেলফ-লোডিং রাইফেল যার গোলাবারুদ ছিল ভিন্ন ভিন্ন পরিমাণে। আরও উদ্ধার হয় একটি ৯ মিমি সাবমেশিন বন্দুক কার্বাইন সহ একটি লোডেড ম্যাগাজিন, একটি .৩০৩ রাইফেল এবং একটি স্ট্যান্ডার্ড গান ওয়ার্কস।
এছাড়া ৪টি এইচ ই নং ৩৬ হ্যান্ড গ্রেনেড, একটি চিনা হ্যান্ড গ্রেনেড (যা কালো সেলোটেপ দিয়ে মোড়া ছিল), দুটি কেমোফ্লাজ হেলমেট, তিনটি বুলেটপ্রুফ ভেস্ট, চারটি বুলেটপ্রুফ প্লেট, একটি কেমোফ্লাজ ম্যাগাজিন পাউচ এবং একটি চাকু উদ্ধার করা হয়েছে। এই অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতির দিকে একটি বড় পদক্ষেপ।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি, মণিপুর পুলিশ সফলভাবে একটি অভিযান চালিয়ে ৪৮টি অস্ত্র উদ্ধার করে। এই অভিযানটি ভারতীয় সেনা, অসম রাইফেলস, এবং মণিপুর পুলিশের সমন্বিত প্রচেষ্টায় পরিচালিত হয়, যার মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক অস্ত্র জমা দিতে সাহায্য করা হয়। অভিযানে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের মধ্যে ছিল ১২টি কার্বাইন মেশিন গান, ৮টি ৭.৬২ মিমি স্ব-লোডিং রাইফেল, একটি একে-৪৭ রাইফেল, একটি ইনসাস লাইট মেশিন গান, ছয়টি .৩০৩ রাইফেল, চারটি ১২-বোর সিঙ্গেল-ব্যারেল রাইফেল, একটি সিঙ্গেল-ব্যারেল রাইফেল, দুটি দেশীয় রাইফেল, ছয়টি দেশীয় বা ইমপ্রোভাইজড মর্টার, একটি আন্ডার-বারেল গ্রেনেড লঞ্চার গান, একটি রিভলভার, একটি পিস্তল, চারটি রকেট এবং অন্যান্য গোলাবারুদ।
অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দেওয়ার এই প্রচেষ্টা মণিপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। নিরাপত্তা বাহিনীর তরফ থেকে জানানো হয়েছে, অস্ত্র উদ্ধার অভিযানগুলি অব্যাহত থাকবে এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এই ধরনের অভিযানগুলি শুধু নিরাপত্তা বাহিনীর সক্ষমতাকেই বৃদ্ধি করে না, বরং মণিপুরের জনসাধারণের মধ্যে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়তা করে। নিরাপত্তা বাহিনীর এই সাফল্য স্থানীয় জনগণের জন্য আশার আলো এনে দিয়েছে, এবং স্থানীয় প্রশাসনও এই ধরনের অভিযানে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।