ভাঙল পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের নিরাপত্তা, চূড়ায় উঠতে গিয়ে ধরা পড়ল যুবক

পুরী: ফের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনায় সরগরম পুরীর জগন্নাথ মন্দির (Puri Jagannath Temple) চত্বর। শনিবার রাঁচি থেকে আসা এক ব্যক্তি মন্দিরের দক্ষিণ প্রাচীর বেয়ে চূড়ায় ওঠার…

Puri Jagannath temple

পুরী: ফের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনায় সরগরম পুরীর জগন্নাথ মন্দির (Puri Jagannath Temple) চত্বর। শনিবার রাঁচি থেকে আসা এক ব্যক্তি মন্দিরের দক্ষিণ প্রাচীর বেয়ে চূড়ায় ওঠার চেষ্টা করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়লেন। মন্দিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের তৎপরতায় বড়সড় বিপদ এড়ানো গেলেও, একাধিক প্রশ্ন উঠছে মন্দিরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ব্যক্তির নাম পঞ্চম মাহত। তিনি মন্দিরের দক্ষিণ দিকের প্রাচীর বরাবর প্রায় ৫ থেকে ৭ ফুট পর্যন্ত উঠতে সক্ষম হন। উপস্থিত কর্মী এবং পুলিশ কর্মীরা বিষয়টি চোখে পড়তেই তাঁকে নিচে নামিয়ে আটক করেন। এরপর তাঁকে সিংহদ্বার থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ওই ব্যক্তি মানসিকভাবে অসুস্থ হতে পারেন। ইতিমধ্যেই তাঁর শারীরিক ও মানসিক অবস্থার পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, সমস্ত তথ্য জেনে উপযুক্ত আইনি পদক্ষেপ করা হবে।

   

এই ঘটনা কিন্তু নতুন নয়। এর আগেও একাধিকবার জগন্নাথ মন্দিরের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছে। কয়েকদিন আগে ওড়িশার গঞ্জাম জেলার এক ব্যক্তি মন্দিরের চূড়ায় ওঠার চেষ্টা করেছিলেন। ফলে সাধারণ ভক্ত থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

কেবল তাই নয়, সম্প্রতি বুধি মা ঠাকুরাণী মন্দিরের দেওয়ালে হুমকির বার্তা লেখা পাওয়া গিয়েছে। তাতে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করে জগন্নাথ মন্দির উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনা সামনে আসতেই শুধু পুরী নয়, গোটা ওড়িশার ধর্মীয় স্থানের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন চাপে।

Advertisements

প্রসঙ্গত, জগন্নাথ মন্দিরকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ ভক্ত সমবেত হন। বিশেষ করে রথযাত্রার সময় ভক্ত সমাগম হয় কয়েক লক্ষাধিক। এমন পরিস্থিতিতে বারবার নিরাপত্তা ঘাটতির ঘটনা সামনে আসায় চিন্তিত প্রশাসনও। পুরীর জগন্নাথ মন্দির শুধু ধর্মীয় দিক থেকে নয়, পর্যটন ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্যবাহী স্থান। তাই এখানে কোনও ধরনের হামলা বা নিরাপত্তা বিঘ্ন ঘটলে তা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।

বর্তমানে পুলিশ ধৃত পঞ্চম মাহতের মানসিক অবস্থা পরীক্ষা করছে। তবে স্থানীয়দের দাবি, প্রশাসনকে আরও কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। মন্দির চত্বরের প্রতিটি প্রাচীর ও প্রবেশদ্বারে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর নজরদারি ব্যবস্থা চালু করা প্রয়োজন। সিসিটিভি, মেটাল ডিটেক্টর, বায়োমেট্রিক চেক—সবকিছুর মাধ্যমে নজরদারি জোরদার না করলে যে কোনও সময়ে বড় বিপদ ঘটতে পারে বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।

বারবার একই ধরনের ঘটনা ঘটায় প্রশাসনের গাফিলতি প্রশ্নের মুখে পড়ছে। পুণ্যার্থীরা মন্দির চত্বরে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। মন্দিরের সেবায়েতরাও সমানভাবে চিন্তিত। এখন দেখার বিষয়, পুলিশি তদন্ত ও প্রশাসনিক পদক্ষেপের পর ভবিষ্যতে জগন্নাথ মন্দির চত্বরে কীভাবে নিরাপত্তা আরও আঁটসাঁট করা যায়।