বিহার: বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফার মনোনয়নের সময়সীমা শেষ হতে আর মাত্র ২৬ ঘণ্টা বাকি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বিরোধী মহাগঠবন্ধন আসন বণ্টন নিয়ে চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছতে পারেনি। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার সক্রিয় ভূমিকা নিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এবং আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ যাদব (Rahul Gandhi Lalu Prasad)।
সূত্রের খবর, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে ও রাহুল গান্ধী আরজেডির সঙ্গে একাধিক দফায় আলোচনা করেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন লালু প্রসাদ যাদবও। তিনি কংগ্রেস নেতাদের জানান, “মহাগঠবন্ধনের অন্য শরিকদেরও যথাযথ গুরুত্ব দিতে হবে। জোটের ঐক্যই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”
তবে এখনও পর্যন্ত কোনও আসন বণ্টনের তালিকা প্রকাশ পায়নি। ইতিমধ্যে কংগ্রেস ও আরজেডির একাধিক নেতা প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়ে ফেলেছেন। ফলে জোটের মধ্যে বিভ্রান্তি এবং চাপা অসন্তোষ স্পষ্ট।
কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা বলেন, “সব কিছু ঠিকঠাক চলছে। প্রতীকের বণ্টন চলছে, মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি সব কিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে। মহাগঠবন্ধন সরকার গঠনের পথে এগোচ্ছে।”
বামপন্থী শরিক সিপিআই (এমএল) ইতিমধ্যেই ১৮টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। তবে মূল দুই শরিক— আরজেডি ও কংগ্রেসের মধ্যে আসন বণ্টন নিয়ে দর কষাকষি এখনও চলছে। জানা গিয়েছে, আরজেডি প্রায় ১১৫টি আসনে এবং কংগ্রেস ৬০টির কাছাকাছি আসনে লড়াই করতে চায়। বাকি আসন বাম দল ও অন্যান্য সহযোগী সংগঠনগুলিকে দেওয়া হতে পারে।
মনোনয়নের শেষ তারিখ ১৭ অক্টোবর। প্রথম দফায় ২৪৩টির মধ্যে ১২১টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে ৬ নভেম্বর। দ্বিতীয় দফার ভোট হবে ১১ নভেম্বর এবং গণনা হবে ১৪ নভেম্বর।
অন্যদিকে, শাসক এনডিএ ইতিমধ্যেই আসন বণ্টনের ঘোষণা শেষ করেছে। বিজেপি ও জেডিইউ ১০১টি করে আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে, লোক জনশক্তি পার্টি (রামবিলাস) লড়বে ২৯টি আসনে, আর হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা ও রাষ্ট্রীয় লোক মোর্চা ৬টি করে আসনে। এনডিএ প্রায় সব ২৪৩টি আসনেই প্রার্থী ঘোষণা করেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মহাগঠবন্ধনের এই বিলম্ব ভোটারদের মনে বিভ্রান্তি তৈরি করছে। প্রথম দফার নির্বাচনে যেহেতু ১২১টি আসনে ভোট, সেই আসনগুলিতে প্রার্থী চূড়ান্ত না হওয়ায় প্রচারে বড় সমস্যা হতে পারে। তবে আরজেডি ও কংগ্রেস— দুই দলই আশাবাদী যে শেষ মুহূর্তে সমঝোতা হয়ে যাবে।
বিহারের রাজনীতিতে লালু প্রসাদ যাদব ও রাহুল গান্ধীর এই যৌথ উদ্যোগ তাই গুরুত্বপূর্ণ। জোটের ঐক্য এবং বিরোধী শিবিরের দৃঢ় সংকল্পের বার্তা পৌঁছে দিতে চাইছেন দুই নেতা। আগামী কয়েক ঘণ্টা বিহারের নির্বাচনী সমীকরণ নির্ধারণে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে।