পাণিপত: স্কুলে অকথ্য অত্যাচার৷ শকিং শিশু নির্যাতনের ঘটনায় সমাজ ও শিক্ষাক্ষেত্রে সতর্কতার ঝড়৷ দুইটি ভিডিয়ো সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর দেশজুড়ে ক্ষোভের ঝড় বয়ে গিয়েছে। ভিডিয়োগুলোতে দেখা যায়, ছোট শিশুদের ওপর শিক্ষকমণ্ডলীর সহিংস আচরণ ও অমানবিক শাস্তি।
উল্টো ঝুলিয়ে মার
প্রথম ভিডিয়োতে দেখা যায়, দ্বিতীয় শ্রেণির এক শিশুকে দড়ি দিয়ে বেঁধে জানালার বাইরে উল্টো ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে৷ তাকে অনবরত মেরে চলেছে স্কুলের ড্রাইভার অজয়৷ ওই শিশুটির মা ডলি জানান, তার ছেলের বয়স সাত৷ সম্প্রতি তাঁকে স্কুলে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযোগ, প্রিন্সিপাল রীনা নিজে শিশুটিকে শাস্তি দেওয়ার জন্য অজয়কে নির্দেশ দেন এবং অজয় সেই নির্দেশ মেনেই কাজ করেন। আরও অভিযোগ, ওই শিশুটিকে থাপ্পড় মারা হয় এবং ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে বন্ধুদের দেখানো হয়৷ পরে ভিডিয়োটি অনলাইনে আপলোডও করা হয়।
প্রিন্সিপালের মার School Child Abuse Viral Video
দ্বিতীয় ভাইরাল ভিডিয়োতে দেখা যায়, প্রিন্সিপাল রীনা নিজেও শিশুদের উপর হাত তুলছেন৷ একটি শিশুকে চর মারছেন৷ আর সবটা ঘটছে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের চোখের সামনে৷ তিনি পরে দাবি করেন, শিশুরা দুই বোনের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছিল এবং শাস্তির আগে অভিভাবকদের সে কথা জানানোও হয়েছিল। তবে শিক্ষা মন্ত্রকের নির্দেশিকা অনুযায়ী শারীরিক শাস্তি কড়া নিষিদ্ধ। অভিভাবকরা আরও অভিযোগ করেছেন, শিশুদের কখনও কখনও শৌচাগার পরিষ্কার করতে বাধ্য করা হতো শাস্তি হিসেবে।
অজয়কে নির্দেশ
প্রিন্সিপাল রীনা স্বীকার করেছেন, ১৩ আগস্ট তিনি অজয়কে শিশুটিকে শাসন করার জন্য নির্দেশ দেন। তবে তিনি দাবি করেন, অজয়কে ইতিমধ্যেই আগস্ট মাসে বরখাস্ত করা হয়েছে তার পূর্ববর্তী আচরণের কারণে। শিশুর পরিবার অভিযোগ করেছে, ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর অজয় তাদের বাড়িতে একদল লোক পাঠিয়ে ধমক দেওয়ার চেষ্টা করেন।
ঘটনার পর মডেল টাউন থানায় শিশু অধিকার আইনের (Juvenile Justice Act, 2015) বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, দোষীদের বিরুদ্ধে শ্রেষ্ঠ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ঘটনা শিক্ষাক্ষেত্রে শিশু নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক তত্ত্বাবধানের প্রয়োজনীয়তার দিকে তীব্র আলোকপাত করেছে। অভিভাবক ও সমাজকর্মীরা বলছেন, স্কুলগুলিতে শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কঠোর তদারকি, নিয়মিত মূল্যায়ন এবং দায়িত্বশীল প্রশাসন অপরিহার্য।