পটনা: বিহারের রাজনৈতিক ময়দানে নতুন মন্ত্রীমণ্ডলের গঠনের পরপরই অপরাধ দমনের নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে। গত শুক্রবার বিজেপির নেতা সম্রাট চৌধুরীকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদে দায়িত্বভার গ্রহণ করার প্রথম দিনেই রাজ্য পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) এবং স্থানীয় পুলিশের যৌথ অভিযানে এক কুখ্যাত অপরাধীকে আহত অবস্থায় গ্রেফতার করা হয়েছে। বেগুসরাই জেলার বরৌয়ী থানা এলাকার নাঙ্গল বারাজের কাছে রাতের অন্ধকারে সংঘটিত এই এনকাউন্টারে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কারের অপরাধী শিবদত্ত রায় গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি।
এই ঘটনা রাজ্যের অপরাধীদের মধ্যে আতঙ্কের সঞ্চার করেছে এবং সম্রাট চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির প্রথম সংকেত হিসেবে দেখা হচ্ছে।ঘটনার সূত্রপাত হয় শনিবার ভোরের দিকে, যখন এসটিএফের একটি দল গোপনে শিবদত্ত রায়ের গোপন আস্তানায় হানা দেয়। পুলিশের তথ্য অনুসারে, রায় তার সঙ্গীদের নিয়ে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে লুকিয়ে ছিল এবং অস্ত্রসহ বিস্ফোরক তৈরির পরিকল্পনা করছিল।
আরবিআইয়ের বড় উদ্যোগ, ভারত ও ইউরোপের মধ্যে ডিজিটাল পেমেন্ট সহজ হবে
পুলিশ যখন তাকে গ্রেফতার করার চেষ্টা করে, তখন রায় তার সঙ্গীরা সঙ্গে পুলিশের উপর গুলি চালায়। আত্মরক্ষার জন্য পুলিশও গুলি চালায়, ফলে রায়ের ডান পায়ে গুলি লাগে এবং সে আহত অবস্থায় ধরা পড়ে। তার সঙ্গীরা পালাতে গিয়ে অন্ধকারে লুকিয়ে যায়, কিন্তু পুলিশের অবরোধ ভেদ করতে ব্যর্থ হয়। এই অভিযানে উদ্ধার করা হয়েছে এক বিশাল অস্ত্রের খোঁজা – পিস্তল, দেশী কার্তুজ, কাঁচা বোমা তৈরির উপকরণ, কাটারি এবং অন্যান্য মারক অস্ত্র।
এছাড়া, নারকোটিকসের ব্যবসায় জড়িত রায়ের কাছে থেকে বিরাট পরিমাণ কাশির সিরাপ (কোডিন-ফসফেট মিশ্রিত) এবং কয়েক লক্ষ টাকার মূল্যের নগদ অর্থ উদ্ধার হয়েছে। এই খোঁজাগুলো অপরাধীদের অর্থনৈতিক নেটওয়ার্কের একটি অংশ বলে পুলিশ সন্দেহ প্রকাশ করেছে। শিবদত্ত রায় বিহারের অপরাধজগতের এক বিশ্বখ্যাত নাম। বেগুসরাই, খাগড়িয়া এবং সমস্তীপুরের সীমান্তবর্তী এলাকায় তার দাপট ছিল অচল।
হত্যা, অপহরণ, জোরপূর্বক অর্থ আদায় এবং নারকোটিকসের ব্যবসা – এসব অপরাধের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ২০টিরও বেশি মামলা চলছে। বিশেষ করে, গত কয়েক মাসে সে দুটি হত্যাকাণ্ড এবং একটি ব্যাপক অপহরণের ঘটনায় জড়িত ছিল বলে পুলিশের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। ৫০ হাজার টাকা পুরস্কারের এই অপরাধীকে ধরতে পুলিশ গত তিন মাস ধরে ছিল তাড়া করে।
এই এনকাউন্টারের পর রাজ্য পুলিশের এসটিএফের নেতৃত্ব দিয়েছেন এডিজিপি মণিলাল মণ্ডল, যিনি বলেছেন, “এটি আমাদের নতুন কড়া নীতির প্রথম ফল। অপরাধীরা যতই লুকিয়ে থাকুক, তাদের ধরে আনবই।” শিবদত্তকে এখন বেগুসরাইয়ের সদর হাসপাতালে চিকিত্সাধীন রাখা হয়েছে এবং তার সঙ্গীদের খোঁজে বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে।
