সম্ভল দাঙ্গায় অবশেষে চার্জশিট, প্রশংসা কেশবের

উত্তর প্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য সম্ভল দাঙ্গার ৭৯ জন আসামির বিরুদ্ধে বিশেষ তদন্তকারী দলের (SIT) চার্জশিট জমা দেওয়ার পর পুলিশের কঠোর পরিশ্রমের প্রশংসা করেছেন।…

উত্তর প্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য সম্ভল দাঙ্গার ৭৯ জন আসামির বিরুদ্ধে বিশেষ তদন্তকারী দলের (SIT) চার্জশিট জমা দেওয়ার পর পুলিশের কঠোর পরিশ্রমের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, “এটি ভালো যে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। পুলিশ অনেক পরিশ্রম করেছে, অপরাধীরা ধরা পড়েছে এবং এটি একটি ভালো বিষয়। পুলিশ তাদের কাজ চালিয়ে যাবে।” এই ঘটনায় সম্ভল জেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে, এবং তারপর থেকে জেলা প্রশাসন অবৈধ জমি দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। এছাড়া, ২৪ জানুয়ারি, সুপ্রিম কোর্ট উত্তর প্রদেশ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এক অবমাননার মামলা এক সপ্তাহের জন্য মুলতবি করে। বিচারপতি বি আর গাভাই ও এ জি মাসিহের বেঞ্চ মামলাটি এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন, কারণ আবেদনকারী আইনজীবী শুনানির জন্য অনুপস্থিত ছিলেন না ।

Advertisements

২০২৪ সালের ২৪ নভেম্বর উত্তর প্রদেশের সম্ভল জেলায় একটি ৫০০ বছরের শাহী মসজিদের জরিপ শুরু হয়। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া এই জরিপের দায়িত্ব নেয়। প্রথম জরিপ টি সুস্থ ভাবে শেষ হলেও দ্বিতীয় জরিপের সময় শুরু হয় ধর্মীয় বিবাদ। বলা হচ্ছিলো এটি প্রাচীন কোনো হিন্দু মন্দির ধ্বংস করে বানানো হয়েছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে জয় শ্রীরাম স্লোগান দেয় কিছু ব্যাক্তি এবং স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। ঘটনায় ৪ জন প্রাণ হারান এবং বহু সংখ্যক মানুষ আহত হয়েছিলেন।

   

তারপর থেকেই জেলা কর্তৃপক্ষ সরকারি জমি দখলের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপ করতে থাকে। আবেদনকারী মোহাম্মদ ঘয়ূর আদালতে একটি অবমাননা মামলা দায়ের করেছেন, যেখানে দাবি করা হয়েছে যে, ১০-১১ জানুয়ারি, ২০২৫ তারিখে তার জমির একটি অংশ অবৈধভাবে সরকারী কর্তৃপক্ষের দ্বারা ভাঙচুর করা হয়েছে। তিনি আরও দাবি করেন, আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও, তার পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস, একটি কারখানা, উচ্ছেদ করা হয়েছে, যার ফলে তাদের জীবিকা সংকটে পড়েছে। গত ১৩ নভেম্বর, ২০২৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট একটি রায় দেয়, যেখানে বলা হয়, কোনো সম্পত্তি ভাঙার আগে শোকজ নোটিশ পাঠানো বাধ্যতামূলক এবং আক্রান্ত পক্ষকে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে। তবে, এই নির্দেশিকা সাধারণত সড়ক, ফুটপাথ, রেললাইন বা নদী বা জলাশয়ের মতো জনসাধারণের স্থানগুলির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না, এবং আদালতের কোনো নির্দেশ অনুযায়ী যে সম্পত্তি ভাঙা হচ্ছে, সেটি এর অন্তর্ভুক্ত হবে না।

সম্ভল দাঙ্গার ঘটনা এবং পরবর্তী পদক্ষেপগুলির পরিপ্রেক্ষিতে, পুলিশ ও প্রশাসনের কার্যক্রম দ্রুত এবং কঠোরভাবে এগিয়ে চলেছে। কেশব প্রসাদ মৌর্য এর আগে আরও জানিয়েছিলেন যে, পুলিশ ও প্রশাসন একইভাবে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কাজ করবে এবং সমস্ত দোষীদের শাস্তি দেওয়া হবে। এখন, সম্ভল দাঙ্গার ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল হওয়া এবং প্রশাসনের কড়া পদক্ষেপ পরিস্থিতিকে সামলাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।