মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) রাজনীতিতে বড় ধাক্কা খেল মহা বিকাশ আঘাড়ি (MVA) জোট। বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে এই জোট ছেড়ে বেরিয়ে গেল সমাজবাদী পার্টি (Samajwadi Party)। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ৩২তম বার্ষিকীতে শিবসেনা (UBT)-র নেতা মিলিন্দ নারভেকারের একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে এই সিদ্ধান্ত নেয় সমাজবাদী পার্টি (Samajwadi Party)।
বড় ধাক্কা ইউনূসকে ! বাংলাদেশে ‘হিন্দু-নির্যাতনে’ ইস্যুতে সরব মার্কিন কংগ্রেস
৬ ডিসেম্বর, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের (Babri Masjid demolition) বার্ষিকীতে মিলিন্দ নারভেকার তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি পোস্ট করেন। ছবিতে বাবরি মসজিদের ধ্বংসাবশেষের পাশে শিবসেনা প্রতিষ্ঠাতা বালাসাহেব ঠাকরের একটি মন্তব্য দেখা যায়। তাতে লেখা ছিল, “আমি তাদের নিয়ে গর্বিত যারা এটি করেছে।” পোস্টে মিলিন্দ নারভেকারের সঙ্গে উদ্ধব ঠাকরে এবং আদিত্য ঠাকরের ছবিও যুক্ত ছিল।
এই পোস্টের পরই শুরু হয় তীব্র বিতর্ক। মুসলিম সম্প্রদায় এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে। তাদের বক্তব্য, এই ধরনের মন্তব্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার লক্ষ্যে করা হয়েছে এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে।
‘ইন্ডিয়া’র রাশ মমতার হাতে? পাশে সপা, মানতে নারাজ কংগ্রেস
মিলিন্দ নারভেকারের এই মন্তব্যের পরেই সমাজবাদী পার্টি সিদ্ধান্ত নেয় মহা বিকাশ আঘাড়ি জোট থেকে বেরিয়ে আসার। সমাজবাদী পার্টির মহারাষ্ট্র শাখার প্রধান আবু আজমি বলেছেন, “এই ধরনের মন্তব্য মেনে নেওয়া যায় না। আমাদের দলের নীতি সম্প্রীতির পক্ষে। এই জোটে থাকা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।”
আজমি আরও বলেন, “আমরা সংখ্যালঘুদের অধিকার এবং সম্মানের পক্ষে লড়াই করি। কিন্তু এমভিএ-র প্রধান শরিকদের এমন মন্তব্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করে। তাই আমরা আর এই জোটে থাকতে পারি না।”
পাক-জঙ্গি ইন্ধনে চলছে ইউনূস! ভারতের সঙ্গে ব্যান্ডউইথ ট্রানসিট চুক্তি প্রত্যাহার বাংলাদেশের
মহা বিকাশ আঘাড়ি জোট গঠিত হয়েছিল মহারাষ্ট্রে বিজেপি বিরোধী শক্তিকে একত্রিত করার জন্য। উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা (ইউবিটি), এনসিপি এবং কংগ্রেস এই জোটের মূল শক্তি। সমাজবাদী পার্টির বেরিয়ে যাওয়া জোটের শক্তি অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
সমালোচনার মুখে উদ্ধব ঠাকরের শিবির অবশ্য এই পোস্টের দায় পুরোপুরি নারভেকারের ব্যক্তিগত মতামত বলে দাবি করেছে। শিবসেনা (ইউবিটি)-র মুখপাত্র বলেন, “এটি দলের অবস্থান নয়। নারভেকার তাঁর ব্যক্তিগত অনুভূতি প্রকাশ করেছেন।” তবে এই সাফাইতে বিতর্ক প্রশমিত হয়নি।
সমাজবাদী পার্টির সরে দাঁড়ানোর পর মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সংখ্যালঘু ভোটারদের সমর্থন ধরে রাখতে এমভিএ-র বাকি শরিকদের এখন আরও কৌশলী হতে হবে।
এদিকে বিজেপি এই ঘটনায় এমভিএ-র অভ্যন্তরীণ ফাটলকেই দায়ী করেছে। তাদের দাবি, এই জোট শুধু ক্ষমতার জন্য তৈরি হয়েছিল, আদর্শগত কোনও ভিত্তি নেই।