সেলুনে (salon) অশ্লীল কাজ, রেকর্ডিং করে ব্ল্যাকমেলিংয়ের (blackmailing) অভিযোগ। উত্তরপ্রদেশের মিরাট (Mirat) শহরে চৌধুরী চরণ সিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে একটি ইউনিসেক্স সেলুন এবং ম্যাসাজ পার্লারে পতিতাবৃত্তির র্যাকেট ফাঁস করেছে পুলিশ। রবিবার, মানব পাচার প্রতিরোধ ইউনিট (এএইচটিইউ) এবং মহিলা থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে ওই সেলুন থেকে নয়জন মহিলা এবং সাতজন পুরুষকে আটক করা হয়। এক ব্যাঙ্ক কর্মীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই অভিযান শুরু হয়। ওই কর্মী অভিযোগ করেছিলেন যে তাকে ব্ল্যাকমেইল করে তিন লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে, এবং তাকে আরও পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল।
ব্ল্যাকমেইলিংয়ের অভিযোগে পুলিশি অভিযানঃ
এ মামলার সূত্রপাত ঘটে, যখন এক ব্যাঙ্ক কর্মী অভিযোগ করেন যে, তিনি একটি ম্যাসাজ পার্লারে গিয়েছিলেন। সেখানে গোপন ক্যামেরার মাধ্যমে তার ভিডিও করা হয় এবং তারপর তাকে ব্ল্যাকমেইল করে তিন লাখ টাকা দাবি করা হয়। ভিডিওটি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিলে, ওই কর্মী আরও পাঁচ লাখ টাকা দিতে বাধ্য হন। অভিযোগের ভিত্তিতে এসএসপি ডক্টর ভিপিন টাডা দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে সিও সিভিল লাইনের নেতৃত্বে একটি তদন্তকারী দল গঠন করেন এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
পুলিশের তদন্তে জানা গেছে, এই সেলুনটি প্রতি মাসে প্রায় ৬ লাখ টাকার বেশি আয় করত। ম্যাসাজের নাম করে গ্রাহকদের কাছ থেকে ৫,০০০ টাকা থেকে ১০,০০০ টাকা আদায় করা হতো। এর পাশাপাশি, সেলুন কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের ভিডিও করে ব্ল্যাকমেইল করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করত। বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে এইভাবে টাকা আদায় করে, সেলুনটি মাসে লক্ষাধিক টাকা আয় করত।
এই ঘটনায় সেলুনের অপারেটর অহনা খানসহ মোট ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে খালিদ, সুরেন্দ্র, সৌরভ, সমীর, হায়াত, শাদাব এবং উবাইজের নাম রয়েছে। পুলিশ তাদের কাছ থেকে আপত্তিকর সামগ্রী, সিসিটিভি ফুটেজ এবং অন্যান্য প্রমাণ উদ্ধার করেছে। তবে, সেলুনের মহিলা মালিক সাইনা এখনও পলাতক রয়েছেন এবং তার বিরুদ্ধে ধরপাকড় চালানো হচ্ছে।
মিরাটের অন্যান্য স্পা সেন্টারেও নজরদারিঃ
পুলিশ মিরাটের অন্যান্য ম্যাসাজ পার্লারেও নজর রাখছে। শাস্ত্রী নগর, আবুলেন এবং দিল্লি রোডের বিভিন্ন স্পা সেন্টারে বেআইনি কার্যকলাপের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসপি সিটি আয়ুশ বিক্রম সিং জানিয়েছেন, “আমরা এসব স্পা সেন্টারগুলোর কার্যক্রম সম্পর্কে তথ্য পেয়েছি এবং যৌথ অভিযানে আরো নজরদারি চালানো হচ্ছে।”
মিরাট পুলিশ জানিয়েছে যে, এই ধরনের বেআইনি কার্যকলাপের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা এবং সম্মান রক্ষা করার জন্য আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করা হবে। পুলিশের তদন্ত চলছে এবং আরও তথ্য পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আরো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া, পুলিশ জনগণকে সচেতন করতে এবং এসব বেআইনি কার্যকলাপ বন্ধ করতে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে চলেছে।