Salman Khan Receives Fresh Death Threat, Bishnoi Gang Under Radar
বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা সলমান খান (salman khan) আবারও প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছেন। এবার হুমকিটি মুম্বইয়ের ওয়ার্লি ট্রান্সপোর্ট ডিপার্টমেন্টের অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে পাঠানো হয়েছে। বার্তায় সলমান খানকে তাঁর বান্দ্রার বাসভবনে হত্যা এবং তাঁর গাড়ি বোমা দিয়ে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। মুম্বই পুলিশ এই ঘটনায় ওয়ার্লি থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছে এবং তদন্ত শুরু করেছে।
মুম্বই পুলিশের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন
মুম্বই পুলিশের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, “আমরা হুমকি বার্তাটি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। ওয়ার্লি পুলিশ স্টেশনে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (বিএনএস) ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। হুমকির উৎস এবং এর সত্যতা যাচাইয়ে তদন্ত চলছে।” তবে হুমকি প্রেরণকারীর পরিচয় বা এটি কোনো সংগঠিত গোষ্ঠীর কাজ কিনা, তা এখনও নিশ্চিত করা যায়নি।
পটভূমি ও পূর্বের হুমকি
সলমান খান (salman khan) এর আগেও একাধিকবার প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছেন, যার বেশিরভাগই লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ। এই হুমকির মূল কারণ হিসেবে ধরা হয় ১৯৯৮ সালে রাজস্থানে ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’ চলচ্চিত্রের শুটিং চলাকালীন সলমানের বিরুদ্ধে দুটি কৃষ্ণসার হরিণ শিকারের অভিযোগ। বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের কাছে কৃষ্ণসার পবিত্র বলে বিবেচিত, এবং এই ঘটনার পর থেকে তারা সলমানের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ।
গত বছরের ১৪ এপ্রিল, সলমানের (salman khan) বান্দ্রার গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্টের বাইরে দুই ব্যক্তি মোটরবাইকে করে গুলি চালায়, যা লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সঙ্গে যুক্ত বলে পুলিশ সন্দেহ করে। এই ঘটনার পর সলমানের নিরাপত্তা বাড়ানো হয় এবং তাঁর বাড়ির ব্যালকনিতে বুলেটপ্রুফ কাচ স্থাপন করা হয়। এছাড়াও, সম্প্রতি মুম্বই ট্রাফিক পুলিশের হোয়াটসঅ্যাপ হেল্পলাইনে একাধিক হুমকি বার্তা পাঠানো হয়, যেখানে ৫ কোটি এবং ২ কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এই বার্তাগুলোর মধ্যে কিছুতে সলমানকে বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সঙ্গে ‘বিরোধ মেটাতে’ টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়।
চড়ক পুজোকে কেন্দ্র করে শিলিগুড়িতে গোষ্ঠী সংঘর্ষ
বাবা সিদ্দিকীর হত্যা
গত অক্টোবরে জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) নেতা এবং সলমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু বাবা সিদ্দিকীর হত্যার পর এই হুমকিগুলো আরও তীব্র হয়। বিষ্ণোই গ্যাং এই হত্যার দায় স্বীকার করে এবং সলমানের সঙ্গে সিদ্দিকীর বন্ধুত্বকে এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করে। এই ঘটনার পর মুম্বই পুলিশ সলমানের নিরাপত্তা আরও জোরদার করে এবং তাঁর বাসভবনের বাইরে এআই-চালিত উচ্চ-রেজোলিউশন সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করে।
তদন্তের অগ্রগতি
ওয়ার্লি পুলিশ বর্তমান হুমকির উৎস খুঁজে বের করতে প্রযুক্তিগত সহায়তা নিচ্ছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তারা হোয়াটসঅ্যাপ বার্তার ফোন নম্বর ট্র্যাক করার চেষ্টা করছে এবং বার্তাটি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর কাজ কিনা তা যাচাই করছে।
এর আগে, গত বছরের অক্টোবর এবং নভেম্বরে একই ধরনের হুমকির ঘটনায় মুম্বই পুলিশ জামশেদপুর, নয়ডা এবং কর্ণাটক থেকে কয়েকজন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করেছিল। এদের মধ্যে একজন, শেখ হুসেন শেখ মৌসিন নামে একজন সবজি বিক্রেতা, পরে দাবি করেছিলেন যে তিনি ভুলবশত হুমকি পাঠিয়েছিলেন এবং ক্ষমা চেয়েছিলেন।
মুম্বই পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চও এই তদন্তে সহায়তা করছে, বিশেষ করে বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো সূত্র খুঁজে বের করতে। গত বছর নভেম্বরে, পুলিশ লরেন্স বিষ্ণোইয়ের ‘ভাই’ বলে দাবিদার বিকরম জালারাম বিষ্ণোই নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছিল, যিনি ৫ কোটি টাকা দাবি করে হুমকি দিয়েছিলেন।
সলমানের (salman khan) নিরাপত্তা ও জনমনে প্রভাব
এই ঘটনার পর সলমান খানের নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হয়েছে। তাঁর বান্দ্রার বাসভবন গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্টে ইতিমধ্যেই ওয়াই+ ক্যাটাগরির নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সলমানের গাড়ি এবং চলাফেরার সময় অতিরিক্ত নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। তাঁর ভক্তদের মধ্যে এই ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে, এবং সামাজিক মাধ্যমে অনেকে তাঁর নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
সলমান খান নিজে এই হুমকি নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে, তিনি সম্প্রতি তাঁর রিয়েলিটি শো ‘বিগ বস ১৮’-এ অংশগ্রহণের সময় পরোক্ষভাবে এই হুমকির প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তিনি তাঁর কাজ এবং চলচ্চিত্র প্রযোজনার দিকে মনোনিবেশ করছেন বলে জানা গেছে।
আইনি ও সামাজিক প্রেক্ষাপট
এই হুমকি শুধু সলমান খানের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার বিষয় নয়, বরং মুম্বইয়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং সংগঠিত অপরাধের প্রভাব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িত এই ধরনের ঘটনাগুলো ভারতের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর জন্য একটি চ্যালেঞ্জ।
পুলিশ এবং সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা এই ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। তদন্তের অগ্রগতি এবং হুমকির পিছনে কারা রয়েছে, তা জানতে মুম্বই পুলিশের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে সবার নজর রয়েছে। এই ঘটনা সলমান খানের জীবনে নতুন উত্তেজনা যোগ করেছে, এবং তাঁর ভক্তরা তাঁর নিরাপত্তার জন্য প্রার্থনা করছেন।