জেলে নৃশংস মার খেয়ে বেহাল অবস্থা ধৃত জঙ্গির

sabarmati-jail-terror-accused-saiyed-assault

আহমেদাবাদ, ১৯ নভেম্বর: গুজরাটের সবরমতি জেলে ফের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠল (sabarmati)। ‘হাজার হাজার মানুষকে বিষ প্রয়োগ করে হত্যার ছক’ করার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া ডা. আহমেদ মোহিউদ্দিন সাইয়েদকে জেলের ভেতরেই নৃশংস মারধরের শিকার হতে হয়েছে।

Advertisements

জানা গিয়েছে, উচ্চ-নিরাপত্তাবেষ্টিত আলাদা সেলে রাখা সাইয়েদকে অন্য কয়েদিরা ঘিরে ধরে নির্মমভাবে প্রহার করে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে ওঠে যে জেলের স্টাফরা দৌড়ে এসে না থামালে আরও বড় অঘটন ঘটতে পারত।

   

সন্ত্রাসবাদ নিয়ে জয়শঙ্করের কড়া বার্তায় কোনঠাসা পাকিস্তান

ঘটনার পর রাতেই তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় দ্রুত আহমেদাবাদ সিভিল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, তার মাথা, মুখ এবং পাঁজরে গুরুতর আঘাত লেগেছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলেও আশঙ্কামুক্ত নন তিনি। জেল সূত্রে খবর, সাইয়েদের ওপর হামলা ছিল সম্পূর্ণ হঠাৎ।

সন্ধ্যার কিছু পরই জেলের ভিতরে টহলরত কর্মীরা আর্তচিৎকার শুনে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে দেখা যায় তিন থেকে চারজন বন্দি সাইয়েদকে ঘুষি, লাথি ও লাঠি দিয়ে আছড়ে মারছে। জেলকর্মীরা বাধা দিলে হামলাকারীরা পালানোর চেষ্টা করে।

Advertisements

“ওই নির্দিষ্ট সেলকে আমরা বিশেষ নিরাপত্তা জোন বলেই চিহ্নিত করি। তবুও কীভাবে অন্য বন্দিরা সেখানে ঢুকল তা তদন্তের বিষয়।” তদন্তকারী সংস্থা দাবি করেছে, ডা. সাইয়েদ ছিলেন একটি বিপজ্জনক মডিউলের সদস্য, যারা বিষ ছড়িয়ে ব্যাপক প্রাণহানির পরিকল্পনা করেছিল। তার ডাক্তার পরিচয় ব্যবহার করেই নাকি বৃহত্তর নাশকতার ছক কষা হচ্ছিল। সেই কারণেই তাকে আলাদা সেলে রাখা হয়েছিল নিরাপত্তার জন্য। এখন সেই নিরাপত্তাই যে বড় প্রশ্নের মুখে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।

মানবাধিকার কর্মীরা অভিযোগ তুলেছেন—এত সুরক্ষিত জেলেও যদি এক বন্দিকে প্রায় মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া যায়, তবে জেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং নজরদারিই প্রশ্নের মুখে পড়ে। অন্যদিকে জেল প্রশাসন বলছে “এটা একটি আকস্মিক ঘটনা।

দোষীদের চিহ্নিত করা হয়েছে, শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” আইনজীবীদের মতে, এই ধরনের ঘটনা আদালতের সামনে প্রশ্ন তুলতে পারে একজন বিবাদী বিচারাধীন অবস্থায় জেলে নিরাপদ কি না। এক প্রবীণ আইনজীবী জানান “বিচারাধীন বন্দির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব। এই হামলা সেই দায়িত্ব পূরণে ব্যর্থতার প্রমাণ।”

আহমেদাবাদ সিভিল হাসপাতালে সাইয়েদের ওয়ার্ডের বাইরে কড়া নিরাপত্তা মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তাকে এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলে তদন্তকারী সংস্থা তাকে আবার কাস্টডিতে নেওয়ার আবেদন করতে পারে।সবরমতি জেল কর্তৃপক্ষ একটি উচ্চ-স্তরের অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করেছে। কীভাবে অন্যান্য বন্দি নিরাপত্তা ভেঙে সেখানে ঢুকল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। CCTV ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।