নয়াদিল্লি, ১৯ নভেম্বর: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আগামী মাসে ভারত সফরে আসছেন, কিন্তু তার আগেই মস্কো থেকে এমন খবর এসেছে যা ভারতীয় বিমান বাহিনীর ভবিষ্যৎ শক্তি বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে। রাশিয়া ভারতের কাছে তার সবচেয়ে আধুনিক এবং মারাত্মক অস্ত্র, পঞ্চম প্রজন্মের স্টিলথ ফাইটার জেট, Su-57-এর জন্য ‘খোলা প্রস্তাব’ দিয়েছে (Russia offers Su-57 Tech)। বিশেষ বিষয় হলো, রাশিয়া কেবল ভারতের প্রযুক্তিগত দাবি মেনে নেয়নি, বরং কোনও বাধা ছাড়াই এই বিমানের প্রযুক্তি হস্তান্তর করতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত বলেও জানিয়েছে।
কোনও শর্ত ছাড়াই প্রযুক্তি সরবরাহ করা হবে
দুবাই এয়ার শো ২০২৫ চলাকালীন, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিরক্ষা সংস্থা রোস্টেকের সিইও সের্গেই চেমেজভ ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেন যে রাশিয়া ভারতের নিরাপত্তা চাহিদা পূরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। চেমেজভ বলেন যে ভারতের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরেও রাশিয়া অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে এবং আজও সেই অবস্থান একই রকম রয়েছে।
Su-57 বা S-400 সিস্টেমের চাহিদা সম্পর্কে তিনি স্পষ্ট করে বলেন যে, ভারত যা চাইবে রাশিয়া তাই দেবে। রোস্টেকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইউএসি-র মহাপরিচালক ভাদিম বাদেখাও নিশ্চিত করেছেন যে, এসইউ-৫৭ নিয়ে ভারতের উত্থাপিত যেকোনো প্রযুক্তিগত উদ্বেগ বা শর্ত রাশিয়া মেনে নিয়েছে। এই পদক্ষেপ দুই দেশের মধ্যে আস্থার একটি নতুন উদাহরণ উপস্থাপন করে।
ইঞ্জিন থেকে শুরু করে রাডার পর্যন্ত সবকিছুই পাওয়া যাবে। এই খবরটি গড় ভারতীয়দের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি কেবল একটি বিমান কেনার চুক্তি নয়, বরং এটি ভারতে তৈরির পরিকল্পনা। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অস্ত্র রফতানিকারক সংস্থা রোসোবোরোনেক্সপোর্ট প্রস্তাব করেছে যে Su-57 ভারতেও তৈরি করা যেতে পারে।
এই প্রস্তাবের অধীনে, রাশিয়া ভারতকে এমন প্রযুক্তি হস্তান্তর প্রদান করবে যা পূর্বে অত্যন্ত গোপনীয় বলে বিবেচিত হত। এর মধ্যে রয়েছে যুদ্ধবিমান ইঞ্জিন, AESA রাডার, অপটিক্স, AI উপাদান এবং শত্রু রাডার এড়াতে কম স্বাক্ষর প্রযুক্তি।
শুধু তাই নয়, রাশিয়া ভারতের জন্য এই বিমানের একটি ‘দুই আসনের’ সংস্করণ যৌথভাবে তৈরির কথাও বলেছে। এর সহজ অর্থ হল, ভবিষ্যতে, ভারতকে খুচরো যন্ত্রাংশ বা সরবরাহ শৃঙ্খলের জন্য অন্য কোনও দেশের নিষেধাজ্ঞার ভয় পেতে হবে না, কারণ গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ ভারতেই তৈরি করা হবে।



