নয়াদিল্লি: হঠাৎ ঘোষণায় নতুন করে আলোড়ন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে একলাফে এইচ-১বি ভিসার খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ মার্কিন ডলার। স্বাভাবিকভাবেই কেঁপে উঠেছে ভারতীয় প্রযুক্তি খাত৷ তবে কূটনৈতিক সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষায় সক্রিয় দুই দেশের শীর্ষ নেতৃত্ব। সোমবার নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের ফাঁকে বৈঠকে মিলিত হলেন মার্কিন বিদেশমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর। সাম্প্রতিক বাণিজ্য ও ভিসা-সংকটের আবহে এটাই ছিল তাঁদের প্রথম মুখোমুখি সাক্ষাৎ।
ভারত গুরুত্বপূর্ণ
এদিন আলোচনার আবহে ছিল দৃশ্যত সৌহার্দ্য ও আস্থার বার্তা। মার্কিন বিদেশ দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, ভারত সম্পর্ককে ‘গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অগ্রাধিকার’ হিসেবেই দেখছে ওয়াশিংটন। রুবিও বৈঠকের পর স্পষ্ট জানালেন, “ভারত আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা, জ্বালানি, ওষুধশিল্প কিংবা গুরুত্বপূর্ণ খনিজ— প্রতিটি ক্ষেত্রেই দিল্লির সঙ্গে অংশীদারিত্ব এগিয়ে নিয়ে যেতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মুক্ত ও উন্মুক্ত পরিবেশ রক্ষায়ও ভারত অপরিহার্য সহযোগী।”
জয়শঙ্করের কথায়, বৈঠকে বিস্তৃত আলোচনা হয়েছে দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক নানা ইস্যুতে। অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রগুলিতে মজবুত যোগাযোগ বজায় রাখার বিষয়ে দুই পক্ষ একমত হয়েছে। তাঁর বার্তা ছিল স্পষ্ট— অর্থনৈতিক টানাপড়েনের মাঝেও কূটনৈতিক সংলাপ থেমে নেই।
ভিসা ধাক্কা ও বাজারের সাড়া Rubio says India is critical to US
ভারতই এইচ-১বি ভিসার সবচেয়ে বড় ব্যবহারকারী দেশ। গত বছর মোট অনুমোদনের প্রায় ৭১ শতাংশই ভারতীয়দের দখলে ছিল, যেখানে চিনের অংশীদারিত্ব ছিল মাত্র ১২ শতাংশ। বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের ঘোষিত ফি-সংস্কার সরাসরি বাড়িয়ে দেবে ভারতীয় আইটি সংস্থাগুলির পরিচালন ব্যয়, যা প্রযুক্তি রফতানির ভবিষ্যতেও বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
শুল্ক-বিবাদ থেকে বাণিজ্যচুক্তি
ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত শুল্কের ছায়া এখনও কাটেনি। জুলাইয়ে ভারতীয় পণ্যের ওপর প্রথমে ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানো হয়, পরে তা দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশ করা হয়। কারণ হিসেবে দেখানো হয় রাশিয়ান তেল কেনা অব্যাহত রাখা। এর জেরে থমকে যায় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যচুক্তি সংক্রান্ত আলোচনা। যদিও সেপ্টেম্বরে ফের আলোচনার টেবিলে বসে দিল্লি ও ওয়াশিংটন, আর ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রকের দাবি— আলোচনার পরিবেশ ইতিবাচক।
কৌশলগত বার্তা
সব মিলিয়ে বার্তা একটাই, অর্থনৈতিক চাপ যতই থাক, কৌশলগত অংশীদারিত্বের ধারা ভাঙতে রাজি নয় দুই দেশই। জাপান ও অস্ট্রেলিয়াকে সঙ্গে নিয়ে কোয়াডের টেবিলে যেমন তারা একে অপরের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী, নিউ ইয়র্কের বৈঠকও স্পষ্ট করল- টানাপড়েনকে সঙ্গী করেই এগোচ্ছে দিল্লি-ওয়াশিংটন সম্পর্ক।

আমাদের Google News এ ফলো করুন
২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।
