আরএসএস-এর বার্ষিক সভায় বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপের আহ্বান

রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (RSS) তাদের বার্ষিক আখিল ভারতীয় প্রতিনিধি সভা (এবিপিএস) মিটিং-এ একটি প্রস্তাব পাস করেছে। যেখানে তারা বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর চলমান নির্যাতনের বিরুদ্ধে…

RSS

রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (RSS) তাদের বার্ষিক আখিল ভারতীয় প্রতিনিধি সভা (এবিপিএস) মিটিং-এ একটি প্রস্তাব পাস করেছে। যেখানে তারা বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর চলমান নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং জাতিসংঘের হস্তক্ষেপের জন্য আহ্বান জানিয়েছে। তাদের মতে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর চলমান সহিংসতা, জোরপূর্বক ধর্মান্তকরণ এবং বৈষম্যের ঘটনার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি গুরুতর উদাহরণ।

শুক্রবার বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত তিন দিনের জাতীয় সভার দ্বিতীয় দিনে এক সংবাদ সম্মেলনে আরএসএস-এর সা.সরকরি বাহ (সাহ সঙ্ঘ চালক) অরুণ কুমার বলেন, “প্রতিটি আরএসএস কর্মীকে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে।” তিনি বাংলাদেশের হিন্দুদের ওপর নির্যাতন প্রসঙ্গে বলেন, “বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর যে অত্যাচার চলছে তা নিন্দনীয় এবং এর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সরব হতে হবে।”

   

আরএসএস-এর প্রস্তাবে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের ঘটনা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। আমরা বিশ্বসম্প্রদায়ের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, যাতে তারা এই মানবাধিকার লঙ্ঘন বিষয়টির ওপর নজর দেয় এবং জাতিসংঘ এই বিষয়ের তদন্ত শুরু করে।” এই প্রস্তাবে আরএসএস বাংলাদেশের হিন্দুদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক পরিচয় রক্ষা করার বিষয়টি মানবিক এক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছে এবং এটি শুধু রাজনৈতিক নয়, বরং একটি মানবাধিকার বিষয় বলেও উল্লেখ করেছে।

Advertisements

সভায় সিনিয়র আরএসএস নেতারা বাংলাদেশের হিন্দুদের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক নির্যাতনের দিকে আঙ্গুল তুলেছেন এবং জানান, “বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হওয়া নানান অত্যাচার অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং এটি আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণ থেকে সমাধান হওয়া উচিত।” প্রস্তাবের মধ্যে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সরকারকে এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় উদ্যোগী হতে হবে এবং ভারত সরকারকে তার প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধান করতে হবে।

আরএসএস আরও জানিয়েছে, “বিশ্বব্যাপী হিন্দু সংগঠনগুলিকে বাংলাদেশে হিন্দুদের প্রতি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আওয়াজ তোলার এবং তাদের প্রতি সহানুভূতি ও সাহায্য পৌঁছানোর আহ্বান জানানো হচ্ছে।”
এছাড়া এবিপিএস-এর উদ্বোধনী দিনে আরএসএস-এর সর্দার মোহন ভাগবত এবং সারকরি বাহ দত্তাত্রেয় হোসাবালে বাংলাদেশে হিন্দুদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা জানিয়েছেন, “এই ধরনের নির্যাতন একেবারেই অগ্রহণযোগ্য এবং এর প্রতিকার হওয়া দরকার। বাংলাদেশ সরকারকে অবশ্যই তাদের দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।”

এবিপিএস সভায় বাংলাদেশের হিন্দুদের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষার জন্য হিন্দু সংগঠনগুলিকে একত্রিত হয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।

আরএসএস-এর বার্ষিক আখিল ভারতীয় প্রতিনিধি সভা বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানটি শুরু হয়েছিল শুক্রবার এবং চলবে তিন দিন ধরে। এই সভায় আরএসএস-এর শীর্ষ নেতা, সর্দার মোহন ভাগবত ও সারকরি বাহ দত্তাত্রেয় হোসাবালে উপস্থিত ছিলেন। তারা ভারতীয় হিন্দু সমাজের ঐক্য এবং সাংস্কৃতিক সংহতি বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।

আরএসএস-এর এবিপিএস সভায় বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা, সুরক্ষা এবং তাদের সাংস্কৃতিক পরিচয় রক্ষা করার বিষয়ে দৃষ্টিপাত করা হয়েছে, যা ভবিষ্যতে আরও কার্যকর পদক্ষেপের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এছাড়া আরএসএস তাদের কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যে তারা সক্রিয়ভাবে এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করবেন এবং বাংলাদেশে হিন্দুদের প্রতি অবিচারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলবেন।