নয়াদিল্লি, ২২ অক্টোবর: দেশের যুবসমাজকে কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত উপহার দিতে চলেছে কেন্দ্র। আগামী শুক্রবার অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ‘রোজগার মেলা’-র (Rozgar Mela) ১৭তম সংস্করণ, যেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজ হাতে তুলে দেবেন ৫১ হাজারেরও বেশি প্রার্থীর চাকরির নিয়োগপত্র। এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে ব্যাপক উত্তেজনা ও আশাবাদ।
কী হচ্ছে রোজগার মেলা?
২০১৪ সালে কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকার আসার পর থেকেই কর্মসংস্থান বৃদ্ধি অন্যতম অগ্রাধিকার হিসেবে ধরা হয়। সেই লক্ষ্য পূরণে নেওয়া হয় বিভিন্ন প্রকল্প ও পরিকল্পনা। তার মধ্যেই অন্যতম হলো ‘রোজগার মেলা’—একটি বিশেষ উদ্যোগ, যার মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে সরকারি চাকরির সুযোগ দেওয়া হয় নিয়মিত বিরতিতে।
শুধু চাকরি দেওয়া নয়, বরং এই উদ্যোগের লক্ষ্য হল তরুণদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি করা, তাঁদের সরকারি দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত করা এবং সরকারি প্রশাসনিক কাঠামোকে আরও মজবুত করা।
এবারের বিশেষত্ব
আগামী শুক্রবারের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করবেন। জানা গিয়েছে, তিনি শুধুমাত্র নিয়োগপত্র বিতরণই করবেন না, পাশাপাশি প্রার্থীদের উৎসাহিত করবেন এবং তাঁদের দায়িত্ব ও সুযোগ সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দেবেন।
সরকারি সূত্র অনুযায়ী, এইবারের নিয়োগ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সরকারি সংস্থার মধ্যে হবে। এর মধ্যে রয়েছে প্রতিরক্ষা, স্বরাষ্ট্র, রেল, ডাক, স্বাস্থ্য, শিক্ষা সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ খাত। ফলে একদিকে কর্মসংস্থানের সুযোগ যেমন তৈরি হচ্ছে, অন্যদিকে বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা খাতও পাচ্ছে নতুন জনবল।
কর্মসংস্থান বৃদ্ধির প্রভাব
অর্থনীতিবিদদের মতে, ৫১ হাজার নতুন সরকারি চাকরি দেশের অর্থনৈতিক গতিকে আরও চাঙ্গা করবে। সরকারি চাকরি কেবলমাত্র একটি পরিবারকে আর্থিক নিরাপত্তা দেয় না, বরং একটি স্থিতিশীল ভোক্তা শ্রেণি তৈরি করে, যারা দীর্ঘমেয়াদে অর্থনীতির চাকা ঘুরিয়ে রাখে।
এছাড়াও, প্রত্যন্ত ও গ্রামীণ এলাকা থেকে আসা বহু প্রার্থী এই সুযোগ পাচ্ছেন। এর ফলে সেখানকার সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নও ত্বরান্বিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এতদিনে কী সাফল্য?
২০১৪ সাল থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচির আওতায় ইতিমধ্যেই লক্ষাধিক তরুণ-তরুণী চাকরির সুযোগ পেয়েছেন। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত ১৬টি রোজগার মেলায় প্রায় ৪.৫ লাখ প্রার্থী নিয়োগপত্র হাতে পেয়েছেন। এবার সেই সংখ্যা আরও বাড়তে চলেছে।
ভবিষ্যতের পরিকল্পনা
কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, আগামী দিনেও এই কর্মসূচি চলতে থাকবে। সরকারের লক্ষ্য আগামী কয়েক বছরের মধ্যে অন্তত ১০ লক্ষ সরকারি চাকরি প্রদান করা। পাশাপাশি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে নিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ ও দ্রুত করা হচ্ছে।
চাকরি প্রার্থীদের কাছে শুক্রবারের রোজগার মেলা নিঃসন্দেহে একটি ঐতিহাসিক দিন হতে চলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উদ্যোগ কেবল কর্মসংস্থানই নয়, বরং দেশের যুব সমাজকে জাতি গঠনের মূল স্রোতে যুক্ত করবে। আর প্রধানমন্ত্রী মোদীর বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট হবে, এই নতুন প্রজন্মের প্রতি সরকারের কতটা আস্থা এবং প্রত্যাশা রয়েছে।