জমি কাণ্ডে ইডির তলবকে “রাজনৈতিক প্রতিহিংসা” বলে কটাক্ষ রবার্ট বঢরার

Robert Vadra Criticizes ED Summons in Land Case as “Political Vendetta কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর স্বামী রবার্ট বঢরা (robert vadra) সম্প্রতি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ED) তলবে…

robert-vadra-ed-summons-land-case-political-vendetta

Robert Vadra Criticizes ED Summons in Land Case as “Political Vendetta

কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর স্বামী রবার্ট বঢরা (robert vadra) সম্প্রতি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ED) তলবে সাড়া দিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। শিখোপুর জমি চুক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত অর্থ পাচার মামলায় তদন্তের জন্য তাকে ডাকা হয়েছে।

“রাজনৈতিক প্রতিহিংসা”

বঢরার (robert vadra) এই তলবকে “ডাইনি শিকার” এবং “রাজনৈতিক প্রতিহিংসা” বলে অভিহিত করেছেন। মঙ্গলবার ইডি তাকে দ্বিতীয়বার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করার পর তিনি সরাসরি ইডি-র দফতরে উপস্থিত হন। এর আগে, গত ৮ এপ্রিল জারি করা প্রথম তলবে তিনি হাজিরা দেননি। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ইডি তার প্রতিষ্ঠান স্কাইলাইট হসপিটালিটির বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত করছে।

মামলার পটভূমি

শিখোপুর জমি চুক্তি মামলাটি হরিয়ানার গুরুগ্রামের শিখোপুর এলাকায় স্কাইলাইট হসপিটালিটির একটি জমি কেনাবেচার সঙ্গে সম্পর্কিত। ইডি-র অভিযোগ, এই লেনদেনে অর্থ পাচার এবং আর্থিক তছরুপের আভাস রয়েছে। স্কাইলাইট হসপিটালিটি, যার প্রধান রবার্ট বঢরা, এই মামলায় কেন্দ্রীয় ভূমিকায় রয়েছে। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, এই চুক্তিতে জড়িত কিছু আর্থিক লেনদেন স্বচ্ছ নয় এবং এর পিছনে অবৈধ কার্যকলাপের সম্ভাবনা রয়েছে।

ইডি এই মামলায় বিভিন্ন নথি এবং আর্থিক রেকর্ড পরীক্ষা করছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, ভদ্রার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত বেশ কিছু ব্যক্তি ও সংস্থার ভূমিকাও তদন্তের আওতায় রয়েছে। এই মামলার তদন্তে গত কয়েক বছর ধরে ধীরগতিতে অগ্রগতি হলেও, সাম্প্রতিক সময়ে ইডি এই বিষয়ে তৎপরতা বাড়িয়েছে।

দলের এই নাইজেরিয়ান ফুটবলারকে বিদায় জানাতে পারে চেন্নাইয়িন

বঢরার (robert vadra) প্রতিক্রিয়া

ইডি-র দফতরে পৌঁছে রবার্ট বঢরা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “এটি একটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ। আমাকে এবং আমার পরিবারকে টার্গেট করা হচ্ছে। এই তদন্তের পিছনে কোনো সত্যতা নেই, এটি শুধুই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।” তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, কেন্দ্রীয় সরকার তদন্ত সংস্থাগুলোকে ব্যবহার করে বিরোধী দলের নেতাদের পরিবারের উপর চাপ সৃষ্টি করছে।

বঢরা (robert vadra) দাবি করেন, তিনি এবং তার প্রতিষ্ঠান সবসময় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সমস্ত আর্থিক লেনদেন স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, “আমি তদন্তে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করব, কিন্তু এই ধরনের হয়রানির বিরুদ্ধে আমি লড়াই চালিয়ে যাব।” তিনি জনগণের প্রতি আহ্বান জানান, এই ধরনের “অন্যায়” তদন্তের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে।

Advertisements

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

এই ঘটনায় কংগ্রেস দল তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। দলের মুখপাত্ররা অভিযোগ করেছেন, বিজেপি সরকার তদন্ত সংস্থাগুলোকে বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, “এটি একটি স্পষ্ট রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। রবার্ট বঢরাকে টার্গেট করা হচ্ছে কারণ তিনি প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর স্বামী। বিজেপি এই ধরনের কৌশলের মাধ্যমে কংগ্রেসকে দুর্বল করতে চাইছে।”

অন্যদিকে, বিজেপি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দলের মুখপাত্র সম্বিত পাত্র বলেন, “ইডি একটি স্বাধীন সংস্থা এবং এটি আইন অনুযায়ী কাজ করছে। যদি কেউ অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকে, তবে তাকে জবাবদিহি করতে হবে। এখানে রাজনীতির কোনো প্রশ্নই নেই।”
আইনি দিক

আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, শিখোপুর জমি চুক্তি মামলায় অর্থ পাচারের অভিযোগ গুরুতর। ইডি-র হাতে যদি পর্যাপ্ত প্রমাণ থাকে, তবে এই মামলায় বঢরা বা তার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। তবে, তদন্তে কোনো রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে কিনা, তা নিয়ে বিতর্ক চলছে।

ইডি সূত্রে জানা গেছে, তদন্তে বঢরার কাছ থেকে আরও কিছু নথি এবং তথ্য চাওয়া হয়েছে। তার বক্তব্য রেকর্ড করা হবে এবং প্রয়োজনে তাকে আবার তলব করা হতে পারে। তবে, বঢরার আইনজীবী দল জানিয়েছে, তারা এই তদন্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত।

জনমত ও প্রভাব

এই ঘটনা রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সাধারণ মানুষের মধ্যেও এই বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ মনে করছেন, এটি একটি ন্যায়সঙ্গত তদন্ত, আবার অনেকে এটিকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসেবে দেখছেন। আগামী দিনে এই মামলার গতিপ্রকৃতি রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর কী প্রভাব ফেলবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে ইডি-র তদন্ত এবং তার প্রতিক্রিয়া দেশের রাজনৈতিক মঞ্চে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। তিনি এই তলবকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করলেও, ইডি তদন্তে অগ্রগতির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই মামলার পরবর্তী গতিবিধি কী হবে, তা নির্ভর করছে তদন্তের ফলাফল এবং আইনি প্রক্রিয়ার উপর। তবে, এই ঘটনা কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।