গুজরাটের (Gujrat) জুনাগঢ়-ভারাভাল হাইওয়েতে সোমবার সকালে একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় (Road Accident) সাতজন প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে পাঁচজন ছাত্রও ছিলেন। এই দুর্ঘটনাটি একটি বৃহত্তর বিপর্যয়ে পরিণত হয়, কারণ একটির সিএনজি সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে গাড়িটি আগুনে পুড়ে যায়, যা পরে আশপাশের ঝুপড়ি ঘরগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।
পুলিশ জানিয়েছে, দুটি গাড়িই দ্রুত গতিতে চলছিল যখন এই দুর্ঘটনা ঘটে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, একটি গাড়ি রোড কাটের কাছে একটি ডিভাইডারের বিপরীতে চলে যায় এবং বিপরীত দিক থেকে আসা অন্য গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটায়। এতে দুটি গাড়ি উলটে যায়। বিস্ফোরণের পর, সিএনজি সিলিন্ডারটি আগুন ধরে যায় এবং গাড়ির ভিতরে বসে থাকা যাত্রীরা তাৎক্ষণিকভাবে আগুনে ঝলসে যায়। গাড়ির আগুন দ্রুত আশেপাশের ঝুপড়ি ঘরগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে, যা পুরো এলাকাকে সঙ্কটে ফেলে দেয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুর্ঘটনাটি এতটাই মারাত্মক ছিল যে, ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয় এবং কিছু সময়ের মধ্যেই আরও কয়েকজন মারা যান। আহতদের দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, তবে তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। পুলিশ ও উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করেন।
জুনাগঢ় জেলা পুলিশ ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে এবং দুর্ঘটনার কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। প্রথম দিকে ধারণা করা হচ্ছে যে, এক গাড়িটি ডিভাইডারের কাছাকাছি স্থানান্তরিত হয়ে বিপরীত দিকের গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষে পড়ে, যা পুরো বিপর্যয় সৃষ্টি করে। এছাড়াও, সিএনজি সিলিন্ডারের বিস্ফোরণ আরও বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, কারণ এটি আগুনকে দ্রুত ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে।
এই দুর্ঘটনা গুজরাটের রাস্তায় নিরাপত্তা সংক্রান্ত আলোচনাকে আরও প্রাসঙ্গিক করে তুলেছে। বিশেষ করে, সিএনজি গাড়ির সিলিন্ডারের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিধি-নিষেধ নিয়ে নতুন করে চিন্তা-ভাবনা শুরু হয়েছে। যদিও সিএনজি গাড়ির ব্যবহার পরিবেশবান্ধব এবং সস্তা হলেও, সঠিকভাবে ব্যবহৃত না হলে এটি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সড়কগুলোতে অব্যবস্থাপনা এবং পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা না থাকায় এই ধরনের দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারা বলেন, কর্তৃপক্ষের উচিত রাস্তায় সঠিক চিহ্ন, ডিভাইডার এবং ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করা, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধ করা যায়।
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো সাতজনের পরিবার ও বন্ধুদের জন্য শোকপ্রকাশ করেছে পুরো এলাকাবাসী। পাশাপাশি, প্রশাসন এই দুর্ঘটনার তদন্ত করে এর মূল কারণ বের করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা রোধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।