নারী নিরাপত্তা ও উন্নয়ন অস্ত্র, বিহারে মোদীর নির্বাচনী বার্তা

ভাগলপুর: বিহার বিধানসভা নির্বাচনের (Bihar Election) রাজনৈতিক উত্তাপ আরও বাড়িয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার ভাগলপুরে নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি মহাজোটের দুই প্রধান শরিক দল কংগ্রেস ও আরজেডি-কে সরাসরি নিশানা করেন। মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী বাছাই, মহাজোটের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, ‘জঙ্গলরাজ’, আইনের শাসন, নারী নিরাপত্তা ও পরিবারতন্ত্র সমস্ত ইস্যুকে সামনে রেখে বিরোধী শিবিরের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানান তিনি।

Advertisements

প্রধানমন্ত্রী মোদী দাবি করেন, কংগ্রেস নেতৃত্ব প্রকাশ্যে আরজেডিকে ‘ছোট শরিক’ বলে অভিহিত করলেও বাস্তবে আরজেডিই জোটের মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী ঠিক করার ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়েছে। তার ভাষায়,
“কংগ্রেসের মাথায় কাট্টা (দেশি পিস্তল) ঠেকিয়ে আরজেডি মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদারিত্ব কেড়ে নিয়েছে।”

   

তিনি আরও বলেন, কংগ্রেস নেতৃত্ব বিহারে প্রচারে আসতে আগ্রহী ছিল না, কিন্তু রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার কারণে এখানে নামতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কটাক্ষ, “যিনি বিহারে আসতেই চাননি, তাঁকে জোর করে আনা হয়েছে। আর এসে এখন নিজেদের জোট-সঙ্গীকেই ক্ষতি করার খেলায় নেমেছেন।”

আরজেডি শাসনকালকে ‘জঙ্গলরাজ’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “কাট্টা, কঠোরতা, তিক্ততা, কুশাসন আর দুর্নীতি বিহারে ১৫ বছরের আরজেডি শাসন এই পাঁচ শব্দেই ধরা পড়ে।” আরজেডির রাজনীতিকে পরিবারতন্ত্র ও অপরাধনির্ভর রাজনীতির সঙ্গে জুড়ে দিয়ে তিনি ব্যঙ্গ করে বলেন, “আরজেডির অভিধানে A মানে অপহরণ, F মানে ফেরত (মুক্তিপণ), আর P মানে পরিবারতন্ত্র।”

Advertisements

প্রথম দফা ভোট চলাকালীন মোদির বক্তৃতায় বিশেষ গুরুত্ব পান নারী ভোটাররা। তিনি বলেন, “বিহারের মা-বোনেরা আজ রেকর্ড সংখ্যায় ভোট দিচ্ছেন। তাঁরা দুর্গের দেওয়ালের মতো ভোটকেন্দ্রে দাঁড়িয়ে আছেন, যাতে বিহারে আর জঙ্গলরাজ ফিরে না আসে।”

নারীর নিরাপত্তা ও সম্মান নিয়ে মোদি দাবি করেন, এনডিএ আমলেই নারীরা প্রকৃত সম্মান ও সুরক্ষা পেয়েছেন। ‘জীবিকা দিদি’ প্রকল্পের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “মহাজোটের সরকার কখনও নারীদের আর্থিকভাবে স্বনির্ভর করার কথা ভাবেনি। আমরা নারী শক্তিকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়েছি।”

উল্লেখ্য, নির্বাচনের আগেই ইন্ডিয়া জোট আনুষ্ঠানিকভাবে আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবকে মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী এবং মুকেশ সাহানিকে উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করেছে। এই ঘোষণার পর থেকেই এনডিএ নেতৃত্ব বারবার অভিযোগ তুলেছে যে, কংগ্রেসকে কোণঠাসা করে আরজেডি নেতৃত্ব দখল করেছে।