সামনেই উৎসবের মরশুম। বাঙালির দুর্গাপুজো থেকে দীপাবলি, ছট! তাঁর আগেই আমজনতার ঘাড় থেকে জিএসটির (GST) বোঝা লাঘবের সুখবর! খাদ্যসামগ্রী থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস, এমনকি এসি, ছোট গাড়ি বা স্কুটার, দাম কমতে চলেছে প্রায় সবকিছুর। মধ্যবিত্তের জন্য নির্মলা সীতারমণের (Nirmala Sitaraman) এই “দ্বিপাবলির উপহার” নিয়ে বিরোধীদের গলায় অন্য সুর!
কংগ্রেস (Congress) সহ একাধিক বিরোধী দলের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরে চড়া জিএসটি নিয়ে বিতর্ক, অভিযোগ জানানো হলেও সেই বিষয়ে ভ্রূক্ষেপ ছিল না কেন্দ্রের। এখন বিহার-বাংলা ভোটের আগে মানুষের “মন জয়” করতে করের বোঝা লাঘব করা হল! এর আগেও কেন্দ্র সরকার জিএসটি-সরলীকরণের প্রচার চালালেও বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি। এই নিয়ে কংগ্রেস প্রধান মল্লিকার্জুন খাড়গে (Mallikarjun Kharge)বলেছেন, ২০১৭ সালে যখন জিএসটি ব্যবস্থা চালু হয়েছিল সরকার ‘এক জাতি, এক কর’ ট্যাগলাইন ব্যবহার করেছিল যা পরবর্তীকালে ‘এক জাতি, নয়টি কর’-এ পরিণত করে।
পাশাপাশি, নতুন জিএসটি নিয়ে এক্স-কে আপত্তি জানিয়েছেন চারবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর পদে থাকা পি চিদম্বরমও। তিনি বলেন, বিগত আত বছর ধরে চড়া জিএসটির হার কমানোর আর্জি জানিয়ে আমরা চোখের জল ফেলেছি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। এখন আচমকা সরকারের এই মন পরিবর্তনের পেছনের আসল কারণটা কি?” মন্থর অর্থনৈতিক বৃদ্ধি, মানুষের মাথায় ঋণের বোঝা, আমজনতার সঞ্চয় হ্রাস নাকি অন্যকিছু? মূলত বিহারের আসন্ন নির্বাচনের দিকেই ইঙ্গিত করে চিদম্বরমের এই ‘খোঁচা’ বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। নতুন জিএসটি নিয়ে কংগ্রেসের বিরোধিতায় পাল্টা সরব হয়েছেন খোদ অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ।
বুধবার দিনভর আলোচনার পর ১২ এবং ২৮ শতাংশের জিএসটি তুলে নিয়ে তাঁর পরিবর্তে ৫, ১৮ এবং ৪০ শতাংশ নয়া জিএসটি চালু করতে উদ্যোগী জিএসটি পরিষদ। নবরাত্রির প্রথম দিন থেকেই নতুন জিএসটি চালু হবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। ৫ এবং ১৮ ছাড়াও স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকারক পণ্যের উপরে ৪০ শতাংশ জিএসটি চাপানো নিয়ে কংগ্রেস আপত্তি জানিয়েছে বলে ইঙ্গিত দেন তিনি। “কংগ্রেস কি চায় চা, সিগারেট, তামাকের মত ক্ষতিকারক পণ্যের উপর ৪০ এর পরিবর্তে ৫ শতাংশ জিএসটি বসানো হোক?” বলে তোপ দাগেন নির্মলা।
সেইসঙ্গে তিনি বলেন, নিজেদের জমানায় জিএসটি চালু করার কথা ভাবতেও পারেনি কংগ্রেস। বিজেপি (BJP) ক্ষমতায় আসার মাত্র ৩ বছরের মধ্যে তা করে দেখিয়েছে। এবার সেটির সংশোধনও করে দেখাল। নতুন জিএসটির ফলে জিনিসপত্রের দাম কমায় বিকিকিনি বাড়বে বলে আশাবাদী কেন্দ্র সরকার। যা অর্থনীতিতে উদ্দীপক (Stimulation) এর কাজ করবে। কংগ্রেস আপত্তি করলেও নতুন জিএসটিকে স্বাগত জানিয়েছে যদিও শিবসেনা এবং তামিলনাড়ুর ডিএমকে (DMK)-এর মত বিরোধীরা।