বিস্ফোরণের দশ দিন আগে হুন্ডাই i20-র পলিউশন চেক! CCTV-র নজরে তিন সন্দেহভাজন

Red Fort Car Blast Investigation

নয়াদিল্লি: দিল্লির লালকেল্লার কাছে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণের তদন্তে সামনে এল এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিস্ফোরণে ব্যবহৃত সাদা রঙের হুন্ডাই i20-টি ঘটনার অন্তত দশ দিন আগে থেকেই রাজধানীতে ঘোরাফেরা করছিল, এমনই দাবি তদন্তকারী সংস্থার। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ২৯ অক্টোবর বিকেল ৪টা ২০ মিনিট নাগাদ গাড়িটি একটি পেট্রল পাম্পে দূষণ পরীক্ষা (পলিউশন চেক) করাচ্ছে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তিনজন ব্যক্তি, একজন গাড়ি চালাচ্ছেন, বাকিরা পরে গাড়ির ভিতরে উঠে বসছেন।

Advertisements

বিস্ফোরণের দিন: আতঙ্কে রাজধানী

৪ নভেম্বর সন্ধ্যা সাতটার পর হুন্ডাই i20 গাড়িটি থামানো হয় লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের কাছে ট্রাফিক সিগন্যালে। মুহূর্তের মধ্যে ঘটে যায় প্রবল বিস্ফোরণ। চারপাশের তিন থেকে চারটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, উড়ে যায় কাচ ও ধাতব অংশ। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান অন্তত ১২ জন, আহত হন বহু পথচারী ও অটো রিকশার যাত্রী। বিস্ফোরণের অভিঘাত এতটাই তীব্র ছিল যে আশপাশের ভবনগুলিও কেঁপে ওঠে।

   

গাড়ির মালিকানা নিয়ে জটিল ধোঁয়াশা Red Fort Car Blast Investigation

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণে ব্যবহৃত হুন্ডাই i20 (নম্বর HR26CE7674) গাড়িটি একাধিকবার হাতবদল হয়েছে, কিন্তু কোনওবারই সরকারি নথিতে মালিকানা পরিবর্তনের রেকর্ড নেই।
তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ১৮ মার্চ গাড়িটি প্রথম কেনেন সালমান নামে এক ব্যক্তি। পরে তা বিক্রি হয় দেবেন্দ্র, সোনু ও তারিক নামে আরও তিনজনের কাছে— কিন্তু কোনও আনুষ্ঠানিক হস্তান্তরের কাগজ নেই। ফলে গাড়ির শেষ ক্রেতা কে, বিস্ফোরণের দিন কার হাতে ছিল গাড়িটি— সেই রহস্যই এখন তদন্তের মূল কেন্দ্রবিন্দু।

Advertisements

সন্ত্রাস দমনে কঠোর আইন

ঘটনার পর দিল্লি পুলিশ মামলা দায়ের করেছে অবৈধ কার্যকলাপ (রোধ) আইন (UAPA), বিস্ফোরক দ্রব্য আইন এবং ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (BNS)-এর একাধিক ধারায়।
তদন্তকারীদের মতে, এই বিস্ফোরণ পরিকল্পনা অত্যন্ত পেশাদারভাবে সাজানো হয়েছিল— এমনভাবে যাতে গাড়িটি ও তার আরোহীদের চিহ্নিত করা কঠিন হয়। গাড়ির মালিকানার এই অস্বচ্ছ ইতিহাসই তাই জঙ্গি নেটওয়ার্কের সম্ভাব্য সংযোগের দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে।

তদন্তের নয়া দিক

সূত্রের খবর, বিস্ফোরণের আগে ওই গাড়িটিকে দিল্লি, গুরগাঁও এবং ফরিদাবাদের একাধিক স্থানে দেখা গিয়েছিল। এখন নিরাপত্তা সংস্থা টোলপ্লাজা, সিসিটিভি ও মোবাইল টাওয়ারের তথ্য মিলিয়ে গাড়ির গতিপথ পুনর্গঠন করছে। দিল্লি পুলিশের এক জ্যেষ্ঠ আধিকারিক জানিয়েছেন, “গাড়ির চালক এবং সেই তিন সন্দেহভাজনের পরিচয় স্থির করতে পারলে পুরো চক্রের চেহারা স্পষ্ট হয়ে যাবে।”