নয়াদিল্লি: লালকেল্লার সামনে বিস্ফোরণের (Red Fort Blast) ঘটনার তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই নতুন নতুন দিক উঠে আসছে। প্রাথমিকভাবে এটি দুর্ঘটনা হিসেবে দেখা হলেও, রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ ও বহু স্তরের বিশ্লেষণের পর বিষয়টিকে ক্রমশ সন্ত্রাস–সংশ্লিষ্ট সম্ভাবনা হিসেবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত সরকারি বিবৃতি প্রকাশ পায়নি, তবে বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থা একসঙ্গে কাজ করছে এবং সব ধরনের সম্ভাব্য সংযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এই তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে কয়েকটি বড় খবর এখন একসঙ্গে সামনে এসেছে, যা নিরাপত্তা সংস্থা এবং গোয়েন্দা বিভাগের নজর কেড়েছে। ভারতের রাজধানীতে বিস্ফোরণ একটি বিশেষ সংবেদনশীল বিষয়, আর এর পাশাপাশি বাংলাদেশ সীমান্তঘেঁষা এলাকার কিছু সাম্প্রতিক গতিবিধি তদন্তকে আরও জটিল করে তুলেছে। এই দুই ধারাকে নিরাপত্তা সংস্থাগুলি আলাদাভাবে পরীক্ষা করছে, তবে সময়কাল এবং কিছু ব্যক্তি–আমলার উপস্থিতির মিল তদন্তকারীদের আরও সতর্ক করেছে।
✅ সীমান্ত অঞ্চলে পাকিস্তানি ধর্মীয় নেতার সফর নজরে
২৫ অক্টোবর ঢাকায় পৌঁছে পাকিস্তানের Markazi Jamiat Ahl-e Hadis–এর সাধারণ সম্পাদক ইবতিসাম ইলাহী জহির রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রংপুর, লালমনিরহাট এবং নীলফামারীসহ ভারতের সীমান্তঘেঁষা এলাকায় সফর করেন। ইবতিসাম ইলাহী জহির লস্কর-ই-তৈয়বা চিফ হাফিজ সৈয়দ ঘনিষ্ট৷ তাঁকে বিমানবন্দরে গ্রহণ করেন আব্দুর রহিম বিন আবদুর রাজ্জাক, যিনি Al Jamia As Salifa–র সঙ্গে যুক্ত।
এই সফর বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার নজরে আসে কারণ তাঁর সফরসূচি ছিল অত্যন্ত ব্যস্ত এবং সীমান্ত–সংবেদনশীল এলাকাগুলো কেন্দ্র করে। জানা গেছে, ২০২৪ সালের আগস্টের পর এটি তাঁর দ্বিতীয় সফর। তাঁর সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে আসাদুল্লাহ আল গালিব, যিনি বাংলাদেশের Ahl-e Hadis Andolan–এর চেয়ারম্যান।

✅ লালকেল্লা বিস্ফোরণ: তদন্তে নতুন মাত্রা
অন্যদিকে দিল্লির লালকেল্লা বিস্ফোরণ মামলায় তদন্ত চলেছে গভীর রাতে। প্রথমে দুর্ঘটনা হিসেবে দেখলেও এখন তদন্তকারীরা সন্ত্রাস–যোগের সম্ভাবনাও বিবেচনা করছেন। কারণ:
- বিস্ফোরণ ঘটেছে উচ্চ–নিরাপত্তা এলাকায়
- সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ চলছে
- ফরেনসিক দল রাসায়নিক ও ধাতব অবশিষ্ট পরীক্ষা করছে
- এনসিআর এলাকায় বিশেষ নজরদারি জারি
তদন্তকারীরা মনে করছেন, ঘটনা যতই সংবেদনশীল হোক না কেন, কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাবে না প্রমাণ ছাড়া।
✅ সময়কাল ও ঘটনাবলির মিল তদন্তে সতর্কতা বাড়াচ্ছে
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিরাপত্তা তদন্তে সবসময় “timeliness pattern” দেখা হয়।
একদিকে:
🔸 দিল্লিতে বিস্ফোরণ → তদন্ত জোরদার
অন্যদিকে:
🔸 সীমান্ত এলাকায় পাকিস্তানি ধর্মীয় নেতার ঘন সফর → নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণে
দুটি ঘটনায় সরাসরি সম্পর্ক আছে কিনা তা নিশ্চিত নয়। কিন্তু সময়ের কাছাকাছি সময়ে সীমান্ত–সংবেদনশীল ভৌগোলিক এলাকায় কিছু গতিবিধি দেখা গেলে তা তদন্তের অংশ হয়ে যায় স্বাভাবিকভাবেই।
একজন কর্মকর্তা বলেন— “দুটি ঘটনা আলাদা হতে পারে। আবার বৃহত্তর নেটওয়ার্ক বিশ্লেষণে মিলও থাকতে পারে। আমরা সবই যাচাই করছি।”
✅ সতর্কতামূলক দিক
ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ নজরদারি সীমান্তে আরও সক্রিয় হয়েছে। ১৬ অক্টোবরের হেলিকপ্টার–পরিদর্শন এবং এখন জহিরের সীমান্ত সফর—উভয়ই তদন্তে Parallel Line হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সরকারি সূত্র বলছে— “কোনো ঘটনাকে যুক্ত করা বা বিচ্ছিন্ন বলা — দুটিই তদন্তের স্বার্থে এখনই বলা যাবে না। সময়কাল, অবস্থান, চলাচল — সবকিছু মিলিয়ে বিশ্লেষণ চলছে।”
নিরাপত্তা–সংস্থার মূল লক্ষ্য এখন দুটি
১) দিল্লি বিস্ফোরণের প্রকৃতি বোঝা
২) সীমান্ত অঞ্চলের সাম্প্রতিক গতিবিধির সম্ভাব্য প্রভাব যাচাই করা
তদন্ত সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্তে আসা যাচ্ছে না। তবে দুটি ক্ষেত্রেই নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং আরও তথ্য অপেক্ষায় রাখা হয়েছে।


