ডিএনএ টেস্টে নিশ্চিত, i20 গাড়িটি চালাচ্ছিলেন কাশ্মীরের জঙ্গি ডাক্তার উমর নবিই

নয়াদিল্লি: দিল্লির লালকেল্লার কাছে হওয়া ভয়াবহ বিস্ফোরণের তদন্তে বড় অগ্রগতি। ডিএনএ পরীক্ষায় নিশ্চিত হয়েছে, হামলার মূল অভিযুক্ত কাশ্মীরের চিকিৎসক ড. উমর উন নবি। বিস্ফোরণের সময় তাঁর দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়, ফলে এতদিন পরিচয় নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। তবে ফরেনসিক রিপোর্টে স্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে— বিস্ফোরক বোঝাই হুন্ডাই আই-২০ গাড়িটি তিনিই চালাচ্ছিলেন।

Advertisements

ব্যস্ত রাস্তায় বিস্ফোরণ

গত ১০ নভেম্বর বিকেলে লালকেল্লার বাইরে ব্যস্ত রাস্তায় ঘটে ওই বিস্ফোরণ। মুহূর্তের মধ্যেই কেঁপে ওঠে পুরনো দিল্লি, প্রাণ যায় অন্তত ১২ জনের। প্রাথমিক তদন্তেই সন্দেহ ওঠে যে হামলাটি সুপরিকল্পিত জঙ্গি চক্রের কাজ।

   

তদন্তকারীদের দাবি, ড. উমর ছিলেন জইশ-ই-মহম্মদ (JeM)-এর এক লজিস্টিক মডিউলের সদস্য, যা সক্রিয় ছিল ফরিদাবাদ, লখনউ ও দক্ষিণ কাশ্মীরে। এই চক্রে ছিল নয়-দশজন সদস্য, যাঁদের মধ্যে কয়েকজন চিকিৎসকও আছেন। তাঁদের পেশাগত পরিচয় ব্যবহার করে সংগৃহীত হতো রাসায়নিক ও বিস্ফোরক তৈরির উপকরণ।

সূত্র জানাচ্ছে, বিস্ফোরণের আগের দিন থেকেই উমর উধাও ছিলেন। তাঁর নাম যুক্ত হয়েছে ফরিদাবাদের এক গুদামঘরের সঙ্গেও, যেখানে সম্প্রতি উদ্ধার হয়েছে প্রায় ২,৯০০ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট।

তদন্তে তুরস্ক যোগ Red Fort Blast Accused DNA JeM

তদন্তে আরও সামনে এসেছে তুরস্ক যোগ। ড. উমর ও তাঁর সহযোগী ড. মুজাম্মিল গণাই কয়েক মাস আগে তুরস্কে যান, যেখানে তাঁদের জইশ হ্যান্ডলারদের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি হয় বলে মনে করা হচ্ছে। টেলিগ্রামের মাধ্যমে নির্দেশ মিলত পাকিস্তানে অবস্থানরত জইশ নেতাদের কাছ থেকে।

Advertisements

এছাড়া, ফরিদাবাদ থেকে গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন লেকচারার ড. শাহিন শাহিদ, যিনি জইশের মহিলা শাখা ‘জামাত-উল-মোমিনাত’-এর ভারতীয় ইউনিটের প্রধান হতে চলেছিলেন বলে গোয়েন্দাদের দাবি।

কাশ্মীরের কৈল গ্রামের মানুষরা বলছেন, ড. উমর ছিলেন শান্ত ও নিভৃতচারী। কিন্তু কয়েক মাস ধরে তাঁর আচরণে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়— প্রায়ই দিল্লি ও ফরিদাবাদের মধ্যে যাতায়াত করতেন, নামাজ পড়তেন রামলীলাময়দান ও সোনেহরি মসজিদের কাছে।

‘ডক্টর মডিউল’ ব্যবহার

এখন দিল্লি পুলিশ, জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ ও উত্তরপ্রদেশ এটিএস একযোগে কাজ করছে এই জঙ্গি চক্রের বাকি সদস্যদের ধরতে। তদন্তকারীদের মতে, ‘ডক্টর মডিউল’-এর মাধ্যমে শিক্ষিত তরুণদের ব্যবহার করে সন্ত্রাসের নতুন কৌশল নিচ্ছে জইশ-ই-মহম্মদ।

এই ঘটনার পর নিরাপত্তা সংস্থাগুলির মূল উদ্বেগ একটাই, চিকিৎসা ও বিজ্ঞান যাঁদের হাতে জীবন রক্ষার অস্ত্র, সেই শিক্ষিত হাতই যদি সন্ত্রাসের উপকরণ হয়ে ওঠে, তবে তার পরিণতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে?