সাত কোটির জালিয়াতি! আরবিআই অফিসার সেজে বড় চক্র শহরে

RBI Officer Impersonation Leads to 7 Crore Racket in the City

দক্ষিণ বেঙ্গালুরুর ব্যস্ত রাস্তায় বুধবার দুপুরে ঘটল সিনেমার মতো চাঞ্চল্যকর ঘটনা। লোকজন ভর্তি রাস্তায় একটি টাকা ভরা ভ্যান থেকে সাত কোটিরও বেশি নগদ লুট করে পালাল এক চক্র, যারা নিজেদের আরবিআই (RBI) অফিসার হিসেবে পরিচয় দিয়েছিল। বেলা সাড়ে ১২টা থেকে ১টার মধ্যে মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যবধানে এই চমকপ্রদ ডাকাতি ঘটেছে। ঘটনার নাটকীয়তা, পরিকল্পনার নিখুঁততা এবং দুষ্কৃতীদের সাহস—সব মিলিয়ে দক্ষিণ বেঙ্গালুরুতে এই মুহূর্তে তীব্র চাঞ্চল্যের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

Advertisements

ঘটনাস্থল সূত্রে জানা যায়, একটি প্রাইভেট সিকিউরিটি সংস্থার ভ্যান নিয়মমতো ব্যাংকে টাকা পৌঁছে দেওয়ার কাজে বের হয়েছিল। ভ্যানে ছিল বিপুল পরিমাণ নগদ—প্রাথমিক অনুমান অনুযায়ী সাত কোটিরও বেশি টাকা। শহরের ব্যস্ত সড়ক দিয়ে ভ্যানটি এগোচ্ছিল ঠিক তখনই হঠাৎ দু’টি গাড়িতে করে কয়েকজন ব্যক্তি পথ আটকায়। তাঁদের গায়ে ছিল সরকারি দপ্তরের লোগো-সহ জ্যাকেট, হাতে আইডি কার্ড, মুখে ছিল কড়া সরকারি ভাবভঙ্গি। তারা নিজেদের পরিচয় দেয়—“আমরা আরবিআই তদন্ত দল, জরুরি তল্লাশি প্রয়োজন।”

   

হঠাৎ এমন পরিস্থিতিতে ভ্যানের কর্মীরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। কারণ আরবিআই-এর পরিচয়ে কেউ তল্লাশি চাইলে সাধারণত সন্দেহ করার সুযোগ থাকে না। ঘটনার সুযোগ নিয়ে ওই ভুয়ো আরবিআই অফিসাররা তৎক্ষণাৎ ভ্যানের দরজা খুলে তল্লাশির নাটক শুরু করে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই মূল পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়—দুষ্কৃতীরা ভ্যান থেকে বড় বড় ব্যাগে ভরে টাকা বের করে নিজেদের গাড়িতে তুলতে শুরু করে। সবকিছু এত দ্রুত ঘটে যে আশপাশের লোকজনও ব্যাপারটি সরকারি কাজ ভেবে চুপচাপ দাঁড়িয়ে দেখছিলেন।

ভ্যানের কর্মীরা যখন পরিস্থিতি বুঝে ওঠার চেষ্টা করছিলেন, তখনই দু’টি গাড়ি ভয়ঙ্কর গতিতে সেখান থেকে উধাও হয়ে যায়। পুরো ঘটনাটি ঘটে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে। দুষ্কৃতীদের পেছনে ধাওয়া করা তো দূরের কথা, কিভাবে, কখন, কীভাবে এত টাকা চলে গেল—তা বুঝে ওঠার আগেই সব শেষ। পরে জানা যায়, ওই গাড়িগুলোর নম্বরপ্লেটও ছিল ভুয়ো, যা আগেই পরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হয়েছিল।

Advertisements

এই ঘটনার পরেই এলাকা জুড়ে শুরু হয়ে যায় হইচই। ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছয় স্থানীয় থানার পুলিশ। পরে সিআইডি ও সাইবার সেলের দলও তদন্ত শুরু করে। আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সূত্রের দাবি, দুষ্কৃতীদের মোট সংখ্যা ৬ থেকে ৮ জনের মতো। তাদের কার্যকলাপ দেখে মনে হচ্ছে, এটি কোনও সাধারণ ডাকাতি নয়, বরং সুপরিকল্পিত একটি বড় চক্রের কাজ।