‘প্রস্তুতিই যথেষ্ট’, নৌসেনার শক্তি দেখেই কাঁপে পাকিস্তান: রাজনাথ

নয়াদিল্লি: সম্প্রতি সফল ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর পর ভারতীয় নৌসেনাকে অভিনন্দন জানাতে শুক্রবার INS Vikrant-এ পৌঁছালেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। যুদ্ধজাহাজের ডেকে দাঁড়িয়ে তিনি জানিয়ে দিলেন, পাকিস্তান…

Rajnath Singh warns Pakistan from INS Vikrant

নয়াদিল্লি: সম্প্রতি সফল ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর পর ভারতীয় নৌসেনাকে অভিনন্দন জানাতে শুক্রবার INS Vikrant-এ পৌঁছালেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। যুদ্ধজাহাজের ডেকে দাঁড়িয়ে তিনি জানিয়ে দিলেন, পাকিস্তান যদি ফের উসকানি দেয়, তবে এবার আর ভারত থামবে না—প্রতিটি হামলার জবাব দেওয়া হবে “নিজের শর্তে”।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘আপনাদের প্রস্তুতিই ছিল এমন শক্তিশালী, যে পাকিস্তানের নৌসেনা ঘাঁটি ছেড়ে বেরোবার সাহস পর্যন্ত পায়নি। ওরা শুধু ভয় পেয়েই নয়, আন্তর্জাতিক মহলের কাছে আর্তি জানিয়েছে ভারত যেন হামলা বন্ধ করে!”

   

‘অপারেশন সিন্দুর’-এ নৌসেনার কৌশলেই পাল্টে যায় যুদ্ধের গতিপথ

‘অপারেশন সিন্দুর’-এর সময় ভারতের বিমানবাহিনী যখন পাক মাটিতে সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিগুলি গুঁড়িয়ে দিচ্ছে, ঠিক সেই সময় INS Vikrant-এর নেতৃত্বে ক্যারিয়ার ব্যাটেল গ্রুপ আরব সাগরের উত্তরে আক্রমণ-প্রস্তুত অবস্থায় ছিল। এতে তৈরি হয় এমন কৌশলগত চাপ, যার ফলে পাকিস্তান তার নৌসেনাকে করাচি নৌঘাঁটিতেই গুটিয়ে নেয়।

রাজনাথ সিং বলেন, ‘‘শত্রুর মনোবল ভাঙতে অস্ত্র নয়, কখনও কখনও শুধু প্রস্তুতিই যথেষ্ট। এই অপারেশন ভারতীয় নৌসেনার সামরিক দক্ষতা ও আধিপত্যের এক উজ্জ্বল নিদর্শন।’’

“সন্ত্রাসের আগুন খেললে এবার জবাব আগুনেই পাবেন” Rajnath Singh warns Pakistan from INS Vikrant

পাকিস্তানকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘‘স্বাধীনতার পর থেকে পাকিস্তান যে সন্ত্রাসের খেলা চালিয়ে এসেছে, তার সময় এবার শেষ। যদি কোনও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে ভারতকে টার্গেট করা হয়, তাহলে এবার তাদের জবাব দেওয়া হবে এমনভাবে, যাতে ভবিষ্যতে তারা ভাবতেও ভয় পায়।”

Advertisements

INS Vikrant: আত্মনির্ভর ভারতের নৌশক্তির প্রতীক

ভারতের প্রথম দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত বিমানবাহী রণতরী INS Vikrant দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে এক ঐতিহাসিক মাইলফলক। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত ধরে এই বিশাল রণতরীর কমিশনিং হয়। প্রায় ২০,০০০ কোটি টাকার খরচে নির্মিত এই যুদ্ধজাহাজটি তৈরি হয়েছে কোচিন শিপইয়ার্ড লিমিটেডে, আর এর নকশা প্রণয়ন করেছে নৌসেনার নিজস্ব Warship Design Bureau।

এই যুদ্ধজাহাজের নির্মাণে ৭৬ শতাংশ দেশীয় উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে, যা ভারতের আত্মনির্ভর প্রতিরক্ষা উদ্যোগে এক বড় সাফল্যের প্রতীক। Vikrant-এর অস্ত্রভাণ্ডারও অত্যন্ত শক্তিশালী। এর ডেকে রয়েছে MiG-29K ফাইটার জেট, সঙ্গে রয়েছে ব্রহ্মোস ক্রুজ মিসাইল, মিডিয়াম রেঞ্জ সারফেস টু এয়ার মিসাইল (SAM), এবং জলতলের শত্রুকে ধ্বংস করতে সক্ষম ভারুণাস্ত্র হেভিওয়েট টর্পেডো।

সূত্রের খবর, Vikrant-কে ঘিরে গঠিত ক্যারিয়ার ব্যাটেল গ্রুপে ছিল ৮-১০টি যুদ্ধজাহাজ, যার মধ্যে সাতটি ছিল BrahMos মিসাইল ও আধুনিক টর্পেডো সজ্জিত ডেস্ট্রয়ার। এর উপস্থিতি সামরিকভাবে পাকিস্তানের ওপর চাপ সৃষ্টি করে, যার ফলেই তারা সংঘর্ষ এড়াতে বাধ্য হয়।

‘অপারেশন সিঁদুর’ দেখিয়ে দিয়েছে, ভারত এখন শুধু সীমান্ত নয়, সমুদ্রেও পুরোপুরি প্রস্তুত ও সক্ষম। আর এই সামরিক শক্তির অন্যতম স্তম্ভ হয়ে উঠেছে INS Vikrant, যা একদিকে যেমন দেশের আত্মনির্ভরতার প্রতীক, অন্যদিকে তেমনই ভারতের প্রতিরক্ষা কৌশলের মেরুদণ্ড।