ভারত চিন টানাপোড়েন কাটাতে কিংদাও সফরে রাজনাথ

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং (rajnath-singh) এই মাসের শেষে চিনের কিংদাও শহরে সফর করতে পারেন। তিনি সেখে শঙ্ঘাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের বৈঠকে অংশ…

rajnath-singh china visit

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং (rajnath-singh) এই মাসের শেষে চিনের কিংদাও শহরে সফর করতে পারেন। তিনি সেখে শঙ্ঘাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের বৈঠকে অংশ নেবেন। এ বছর চিন এই শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক এবং রাজনাথ সিংকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। ২০২০ সালের গালওয়ান সংঘর্ষের পর এটি হবে সিংয়ের চিনে প্রথম সফর।

এই সফরটি ভারত ও চিনের (rajnath-singh) মধ্যে গত অক্টোবর ২০২৪-এ পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) বরাবর টহল পুনরায় শুরু এবং সৈন্য প্রত্যাহারের চুক্তির পর প্রথম মন্ত্রী-স্তরের সফর হিসেবে চিহ্নিত হবে। এই চুক্তি দুই দেশের মধ্যে সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমন এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

   

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে অগ্রগতি

ভারত ও চিন গত কয়েক বছর ধরে সীমান্ত উত্তেজনা কমাতে এবং সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে(rajnath-singh)। গালওয়ান সংঘর্ষের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে উভয় পক্ষই সংযম ও আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথে এগিয়েছে। গত বছর অক্টোবরে এলএসি বরাবর সৈন্য প্রত্যাহার এবং টহল পুনরায় শুরুর চুক্তি এই প্রক্রিয়ার একটি বড় মাইলফলক।

রাজনাথ সিং (rajnath-singh) গত নভেম্বরে লাওসে অনুষ্ঠিত এডিএমএম-প্লাস শীর্ষ সম্মেলনে চিনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী অ্যাডমিরাল ডং জুনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এটি ছিল সৈন্য প্রত্যাহারের চুক্তির পর তাদের প্রথম বৈঠক। এই আলোচনায় দুই নেতা সীমান্তে শান্তি বজায় রাখার গুরুত্ব এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।

এসসিও এবং চিনের সভাপতিত্ব

এসসিও হল একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক সংগঠন, যেখানে ভারত, চিন, (rajnath-singh) রাশিয়া, পাকিস্তানসহ বেশ কয়েকটি দেশ সদস্য। এ বছর চিন এসসিও-এর সভাপতিত্ব করছে। ভারত চিনের এই ভূমিকাকে সমর্থন করেছে, যা সম্প্রতি দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি এবং চিনের ভাইস ফরেন মিনিস্টার সান ওয়েইডংয়ের মধ্যে আলোচনায় উঠে এসেছে। মিসরি এসসিও-এর কাঠামোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রতি ভারতের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

রাজনাথ সিংয়ের (rajnath-singh) সম্ভাব্য কিংদাও সফর এসসিও-এর প্ল্যাটফর্মে ভারতের সক্রিয় অংশগ্রহণের একটি অংশ। এই বৈঠকে আঞ্চলিক নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।

সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা

ভারত ও চিনের (rajnath-singh) মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য বেশ কিছু কূটনৈতিক উদ্যোগ চলছে। এর মধ্যে রয়েছে কৈলাস মানসরোয়ার যাত্রা পুনরায় চালু করার সম্ভাব্য আলোচনা, সরাসরি বিমান যোগাযোগ পুনঃস্থাপন, হাইড্রোলজিকাল তথ্য বিনিময় পুনরায় শুরু করা এবং ভিসা সুবিধা ও জনগণের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় বাড়ানো। এই পদক্ষেপগুলো দুই দেশের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনতে এবং অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদার করতে গুরুত্বপূর্ণ।

২০২০ সালের গালওয়ান সংঘর্ষের পর ভারত চিনের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থান নিয়েছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে উভয় দেশই সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ নিচ্ছে। চিনের বাজারে ভারতীয় পণ্যের প্রবেশাধিকার বাড়ানো এবং ভারতে চিনা বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত করার বিষয়েও আলোচনা চলছে।

Advertisements

আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট (rajnath-singh)

রাজনাথ সিংয়ের (rajnath-singh) সম্ভাব্য চিন সফর এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনা এবং ইউক্রেন সংকটের মতো বৈশ্বিক ঘটনাগুলো আঞ্চলিক নিরাপত্তার উপর প্রভাব ফেলছে। এসসিও-এর মাধ্যমে ভারত ও চিন এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় সহযোগিতার সুযোগ খুঁজছে। ভারত সবসময়ই এসসিও-কে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচনা করে, যেখানে সন্ত্রাসবাদ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার মতো বিষয়ে আলোচনা হয়।

ইরানের পাশে শেহবাজ শরীফ, দিলেন ভ্রাতৃত্বের বার্তা

চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাবনা

রাজনাথ সিংয়ের (rajnath-singh) সফর যদিও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে ইতিবাচক বার্তা দেবে, তবুও ভারত ও চিনের মধ্যে পুরোপুরি আস্থা ফিরিয়ে আনতে সময় লাগবে। সীমান্তে শান্তি বজায় রাখা এবং অতীতের উত্তেজনা এড়ানো উভয় দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। ভারত স্পষ্ট করে দিয়েছে যে সীমান্তে শান্তি ছাড়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পূর্ণ স্বাভাবিকীকরণ সম্ভব নয়।

অন্যদিকে, চিনের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও কৌশলগত সহযোগিতা ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এসসিও-এর মাধ্যমে উভয় দেশ মধ্য এশিয়ার সঙ্গে সংযোগ বাড়ানো এবং আঞ্চলিক বাণিজ্য উন্নয়নের সুযোগ পেতে পারে। রাজনাথ সিংয়ের সফর এই দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।

রাজনাথ সিংয়ের (rajnath-singh) সম্ভাব্য কিংদাও সফর ভারত-চিন সম্পর্কের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। এটি শুধু এসসিও-এর কাঠামোর মধ্যে সহযোগিতার প্রতিফলন নয়, বরং দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে আস্থা পুনর্নির্মাণের একটি সুযোগ।

সীমান্তে শান্তি, কূটনৈতিক আলোচনা এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার মাধ্যমে ভারত ও চিন একটি স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ আঞ্চলিক পরিবেশ গড়ে তুলতে পারে। এই সফরের ফলাফল দুই দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্কের দিক নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।