ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং (rajnath-singh) আগামী শুক্রবার (১৬ মে) গুজরাটের ভুজ এয়ারবেস পরিদর্শন করবেন বলে সূত্র জানিয়েছে। দুই দিনের এই সফরে তিনি ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত অঞ্চলও পরিদর্শন করবেন। সূত্র অনুযায়ী, এই সফরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী (rajnath-singh) ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর অপারেশনাল প্রস্তুতি মূল্যায়ন করবেন এবং পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ব্যর্থ ড্রোন অনুপ্রবেশের পর জোরদার করা নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যকারিতা পরীক্ষা করবেন।
ভুজ এয়ারবেসে অনুপ্রবেশ (rajnath-singh)
সাম্প্রতিক সামরিক উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ড্রোন ব্যবহার করে ভুজ এয়ারবেসে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছিল। তবে, ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সহায়তায় পাকিস্তানের বারবার আক্রমণ প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে। অবিরাম সামরিক ব্যর্থতা এবং কোনো সাফল্য না পাওয়ার পর পাকিস্তান অবশেষে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানায়। এই প্রেক্ষাপটে প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর (rajnath-singh) ভুজ সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
ভুজ রুদ্র মাতা এয়ার ফোর্স স্টেশন ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি। এটি গুজরাটের ভুজে অবস্থিত এবং সাউথ ওয়েস্টার্ন এয়ার কমান্ড (এসডব্লিউএসি)-এর অধীনে পরিচালিত হয়। এই স্টেশনটি বেসামরিক ভুজ বিমানবন্দরের সঙ্গে রানওয়ে ভাগ করে নেয় এবং ২৭ উইং-এর আবাসস্থল।
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের নৈকট্যের কারণে এই ঘাঁটি বিমান প্রতিরক্ষা এবং নজরদারির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তানের সাম্প্রতিক আক্রমণ প্রচেষ্টার সময় ভুজ এয়ারবেসে ক্ষয়ক্ষতি সীমিত ছিল, এবং ভারতের সমন্বিত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আক্রমণ প্রতিরোধে সফল হয়েছিল।
নরেন্দ্র মোদীর পাঞ্জাবের আদমপুর এয়ারবেস পরিদর্শন
এদিকে, মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পাঞ্জাবের আদমপুর এয়ারবেস পরিদর্শন করেন। এই সফরে তিনি বিমান বাহিনীর কর্মকর্তাদের কাছ থেকে অপারেশন সিন্দুর সহ বিভিন্ন অভিযানের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য গ্রহণ করেন এবং অভিযানে অংশগ্রহণকারী কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
আদমপুর এয়ারবেস ভারতীয় বিমান বাহিনীর ওয়েস্টার্ন এয়ার কমান্ডের অধীনে পরিচালিত হয়। ওয়েস্টার্ন এয়ার কমান্ডের প্রধান এয়ার মার্শাল জিতেন্দ্র চৌধুরী এয়ার স্টাফ প্রধানের সঙ্গে সমন্বয় করে অপারেশন সিঁদুর সহ বেশ কয়েকটি অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছেন।
ওয়েস্টার্ন এয়ার কমান্ড ভারতীয় বিমান বাহিনীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অপারেশনাল কমান্ডগুলির মধ্যে একটি। এটি জম্মু ও কাশ্মীর থেকে রাজস্থান পর্যন্ত বিস্তৃত একটি কৌশলগত অঞ্চলকে কভার করে, যার মধ্যে হিমাচল প্রদেশ, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি এবং পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ অন্তর্ভুক্ত।
এই অঞ্চলে ভারতের সবচেয়ে সংবেদনশীল সীমান্ত এবং ফরোয়ার্ড এয়ারবেস রয়েছে, যা এটিকে পাকিস্তানের সঙ্গে যেকোনো বায়ু সামরিক পদক্ষেপের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে। অপারেশন সিঁদুর , যা ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার প্রতিক্রিয়ায় শুরু হয়েছিল, এই কমান্ডের নেতৃত্বে পরিচালিত হয়। এই অভিযানে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটি এবং বিমান ঘাঁটিতে নির্ভুল আঘাত হানে, যার ফলে পাকিস্তানের সামরিক ক্ষমতার উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়।
অপারেশন সিঁদুরের প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান ৯ ও ১০ মে মধ্যরাতে ভুজ, আদমপুর, উধমপুর, পাঠানকোট সহ ভারতের ২৬টি কৌশলগত স্থানে ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র এবং বিমান হামলা চালানোর চেষ্টা করে। তবে, ভারতের এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং দ্রুত হুমকি সনাক্তকরণ ব্যবস্থার কারণে এই আক্রমণগুলি ব্যর্থ হয়।
পাকিস্তানের দাবি
পাকিস্তানের দাবি, তারা ভুজ এবং আদমপুরে এস-৪০০ সিস্টেম ধ্বংস করেছে, যা ভারত স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদীর আদমপুর সফর এবং এস-৪০০ সিস্টেমের সামনে তাঁর উপস্থিতি পাকিস্তানের এই দাবিকে মিথ্যা প্রমাণ করেছে।
সীমান্ত নিয়ে চিনকে কড়া জবাব ভারতের
সফরের তাৎপর্য
রাজনাথ সিংয়ের (rajnath-singh) ভুজ সফরের মাধ্যমে ভারত সীমান্তে তার সামরিক প্রস্তুতি এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার শক্তি প্রদর্শন করতে চায়। ভুজ এয়ারবেস, যা ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, সামরিক নজরদারি এবং প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই সফরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী (rajnath-singh) সম্ভবত বিমান বাহিনীর কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন এবং সীমান্তে নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবেন। পাকিস্তানের সাম্প্রতিক আক্রমণ প্রচেষ্টা এবং ভারতের সফল প্রতিরোধ এই অঞ্চলে সতর্কতা বাড়িয়েছে।
ভারতীয় বিমান বাহিনীর বীরত্বের প্রশংসা
প্রধানমন্ত্রী মোদী (rajnath-singh) তাঁর আদমপুর সফরে ভারতীয় বিমান বাহিনীর বীরত্বের প্রশংসা করেন এবং বলেন, “অপারেশন সিঁদুর কেবল একটি সামরিক অভিযান নয়, এটি ভারতের নীতি, সংকল্প এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতার সংমিশ্রণ।” তিনি পাকিস্তানকে সতর্ক করে বলেন, “যদি পাকিস্তানের মাটি থেকে সন্ত্রাসবাদ অব্যাহত থাকে, তবে তারা ধ্বংস হয়ে যাবে।” এই বক্তব্য ভারতের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার নীতিকে পুনর্ব্যক্ত করে।
ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক বর্তমানে সংবেদনশীল পর্যায়ে রয়েছে। অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে ভারত পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটি এবং বিমান ঘাঁটিতে বড় ধরনের ক্ষতি সাধন করেছে। স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, সারগোধা, নুর খান, ভোলারি, জ্যাকবাবাদ, সুক্কুর এবং রহিম ইয়ার খানের মতো পাকিস্তানি বিমান ঘাঁটিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভারতীয় বিমান বাহিনীর নির্ভুল আক্রমণ পাকিস্তানের সামরিক ক্ষমতাকে দুর্বল করেছে।
রক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের (rajnath-singh) আসন্ন ভুজ সফর ভারতের সামরিক শক্তি এবং সীমান্তে সতর্কতার একটি শক্তিশালী বার্তা দেবে। এই সফর কেবল ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর মনোবল বাড়াবে না, বরং পাকিস্তানের যেকোনো প্রকার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ভারতের দৃঢ় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করবে। ভুজ এবং আদমপুরের মতো এয়ারবেসগুলি ভারতের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মেরুদণ্ড হিসেবে কাজ করে এবং অপারেশন সিঁদুরের মতো অভিযানে তাদের গুরুত্ব অপরিসীম।