সম্প্রতি দেশের সীমান্ত অঞ্চলে চীন ও পাকিস্তানকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংকে (Rajnath Singh) দ্রুত সীমান্তে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। এই নির্দেশের প্রেক্ষিতে রাজনাথ সিং খুব শীঘ্রই লাদাখ সীমান্তে পৌঁছে সেনাবাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রীকে প্রদান করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। কারণ সীমান্তে যখন দুই প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়ছে, তখন শীর্ষ পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতৃত্বের সরাসরি তৎপরতা জওয়ানদের মনোবল বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, পূর্ব লাদাখে চীনা বাহিনীর সন্দেহজনক গতিবিধি এবং পাকিস্তান সীমান্তে বারবার সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘনের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সীমান্তে যুদ্ধসজ্জা অবস্থানে থাকা ভারতীয় সেনাবাহিনী ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত সতর্কতা বজায় রেখে দায়িত্ব পালন করছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং তাঁর সফরের সময় সেনা কর্তাদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসবেন। তিনি সীমান্তে নির্মিত নতুন অবকাঠামো, সেনাবাহিনীর রসদ, অস্ত্রসজ্জা এবং পরিবহণ ব্যবস্থার উপরও নজর দেবেন। লাদাখ ও অরুণাচল প্রদেশের বিভিন্ন পোস্ট ঘুরে দেখা হবে তাঁর এই সফরের মূল লক্ষ্য। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, সীমান্তে জওয়ানদের মনোবল বৃদ্ধির জন্য ও বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনার জন্য এই সফর অত্যন্ত জরুরি।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদির এই পদক্ষেপ একদিকে যেমন রাজনৈতিক বার্তা বহন করছে, অন্যদিকে তা কূটনৈতিকভাবেও গুরুত্বপূর্ণ। চীন ও পাকিস্তান উভয় দেশকেই এই মাধ্যমে একটি স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হচ্ছে যে, ভারত নিজের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কোনো ধরণের আপস করবে না।
রাজনাথ সিং ইতিপূর্বেও বিভিন্ন সময় সীমান্ত সফর করেছেন এবং সেনাবাহিনীর পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর প্রতিটি সফরে দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার সংকল্প ফুটে ওঠে। এই সফরেও সেই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, দেশের অভ্যন্তরেও সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে জনমনে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তবে সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, জনগণের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। ভারতীয় সেনাবাহিনী সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত এবং দেশের নিরাপত্তা অক্ষুণ্ণ রাখতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই সফর কেবল একটি রাজনৈতিক পদক্ষেপ নয়, বরং এটি সামরিক বাহিনী ও সরকারের মধ্যে একটি সুসমন্বয়ের প্রতিফলন। রাজনাথ সিংয়ের উপস্থিতি সীমান্তে মোতায়েন জওয়ানদের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠবে।
শেষ পর্যন্ত, প্রধানমন্ত্রী মোদির এই নির্দেশ এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রীর তৎপরতা দেশবাসীর কাছে একটি ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে—ভারত কখনোই তার সীমান্ত বা সার্বভৌমত্ব প্রশ্নে আপস করবে না, এবং প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণে পিছপা হবে না।