সিন্ধু পুনরুদ্ধারের হুঁশিয়ারি দিয়ে পাকিস্তানকে তীব্র বার্তা দিলেন রাজনাথ

rajnath-singh-sindh-statement-border-change-controversy

নয়াদিল্লি, ২৩ নভেম্বর। ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের ইতিহাসে আরেকবার উত্তেজনার ঝড় উঠেছে। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের একটি বক্তব্য দেশ-বিদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। সিন্ধু অঞ্চলকে নিয়ে তিনি মন্তব্য করেছেন “আজ সিন্ধুর ভূমি ভারতের অংশ নাও হলেও সভ্যতাগতভাবে সিন্ধু সর্বদা ভারতের অংশ থাকবে। আর যতদুর ভূমির কথা, সীমান্ত তো পরিবর্তনশীল কে জানে, কালকেই সিন্ধু ভারতে ফিরে আসতে পারে।

Advertisements

রাজনাথের এই মন্তব্য পাকিস্তানকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে মারার মতো। এই উক্তি সাম্প্রতিক এক অনুষ্ঠানে বলা হয়েছে, যা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক মিডিয়া পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে।রাজনাথ সিংয়ের এই বক্তব্যটি শুধু রাজনৈতিক নয়, সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক গভীরতায় ভরা। তিনি বলেছেন, সিন্ধুর মানুষ, বিশেষ করে সিন্ধু নদীকে পবিত্র মানা হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা, সর্বদা ভারতের সঙ্গে যুক্ত।

   

PNB-তে অফিসার হওয়ার সুযোগ, ৭৫০টি পদে নিয়োগ, আবেদন করুন আজই

“সিন্ধুর লোকেরা সিন্ধু নদীকে যেমন পবিত্র মানে, তেমনি আমরাও। তারা যেখানেই থাকুক, তারা আমাদেরই” এমন আবেগময় কথায় তিনি সিন্ধু হিন্দুদের প্রতি ভারতের অটুট বন্ধনের কথা তুলে ধরেছেন। এটি শুধু সিন্ধু নয়, পাকিস্তান দখলের কাশ্মীর (পিওকে) নিয়েও তাঁর পূর্ববর্তী বক্তব্যের সঙ্গে মিলে যায়। মে মাসে তিনি বলেছিলেন, পিওকের মানুষ ভারতের পরিবারের অংশ এবং তারা নিজেরাই একদিন ফিরে আসবে।

Advertisements

সিন্ধুর ইতিহাস ভারতের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। প্রাচীন সভ্যতার জন্মস্থান হিসেবে পরিচিত সিন্ধু উপত্যকা ভারতীয় ইতিহাসের মূল প্রবাহের অংশ। ১৯৪৭-এর দেশভাগের সময় সিন্ধু পাকিস্তানের অংশ হয়ে যায়, যা লক্ষ লক্ষ হিন্দু ও সিক সিন্ধুদের ভারতে পাড়ি দিতে বাধ্য করে। আজও ভারতে বসবাসকারী সিন্ধু সম্প্রদায় এই বিচ্ছেদের ক্ষত বহন করে।

বিজেপি নেতা এল.কে. আদবানির মতো ব্যক্তিত্বরা তাঁর বইয়ে লিখেছেন, তাঁদের প্রজন্ম এখনও সিন্ধুর বিচ্ছেদ মেনে নেয়নি। রাজনাথ সিংয়ের উক্তি এই আবেগকে জাগিয়ে তুলেছে। অনেকে বলছেন, এটি শুধু স্মৃতির নয়, ভবিষ্যতের দাবিরও প্রতীক। কিন্তু এই বক্তব্য পাকিস্তানের কাছে কাঁটা হয়ে বিধেছে। ইসলামাবাদ থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া এসেছে এটিকে “জিঙ্গোয়িস্টিক” এবং প্ররোচনামূলক বলে অভিহিত করা হয়েছে।

পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এমন কথা সীমান্তে অস্থিরতা বাড়াবে এবং শান্তি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে। অক্টোবরে সির ক্রিক এলাকায় পাকিস্তানের কোনও “ভুল পদক্ষেপ” হলে ভারতের “কঠোর প্রতিক্রিয়া” ইতিহাস ও ভূগোল পরিবর্তন করতে পারে এমন রাজনাথের পূর্ববর্তী সতর্কতাও এখন নতুন প্রেক্ষাপট পেয়েছে। পাকিস্তান মিডিয়ায় বলা হচ্ছে, এটি “ধ্বংসের” সংকেত এবং ভারতের আগ্রাসী মনোভাবের প্রমাণ।