নয়াদিল্লি: স্যার ক্রিক সেক্টরে পাকিস্তান কোনও রকম অপ্রয়োজনীয় কর্মকাণ্ড চালালে, ভারতের প্রতিক্রিয়া এত শক্তিশালী হবে যে তা ইতিহাস এবং ভূগোল উভয়কেই বদলে দিতে সক্ষম। গুজরাতের ভূজে সীমান্তবর্তী সামরিক ঘাঁটিতে দশেরার অনুষ্ঠান থেকে কড়া বার্তা দিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি বলেন, “১৯৬৫ সালে ভারতীয় সেনা লাহোরে পৌঁছেছিল, ২০২৫ সালে পাকিস্তানকে মনে রাখতে হবে—করাচির পথে যাত্রার একটি অংশ স্যার ক্রিক হয়ে গিয়েছে।”
স্যার ক্রিকের কৌশলগত গুরুত্ব
স্যার ক্রিক হল গুজরাতের কাচ্ছ অঞ্চল এবং পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের মধ্যে ৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ জোয়ার-ভাটার খাল। এটি কেবল সীমান্তরক্ষা বা কৌশলগত কারণে গুরুত্বপূর্ণ নয়; মাছধরা ও সম্ভাব্য তেল ও গ্যাস ভাণ্ডারের দিক থেকেও এই অঞ্চলের গুরুত্ব অপরিসীম। ভারতের মতে, উচ্চ জোয়ারের সময় এটি নৌগম্য, এবং স্থানীয় মাছ ধরার ট্রলারও এই চ্যানেল ব্যবহার করে। পাকিস্তান নৌগম্যতা অস্বীকার করলেও, ভারত থালভেগ প্রিন্সিপল অনুযায়ী সীমান্ত নির্ধারণের দাবিতে দৃঢ়।
পাকিস্তানের সম্প্রসারণ ও ভারতীয় সতর্কতা Rajnath Singh Pakistan Sir Creek
রাজনাথ সিং উল্লেখ করেছেন, “স্যার ক্রিকের পার্শ্ববর্তী এলাকায় পাকিস্তানের সামরিক অবকাঠামো সম্প্রসারণ তার উদ্দেশ্য স্পষ্টভাবে প্রকাশ করছে। ভারত দীর্ঘদিন ধরে সংলাপের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে চেয়েছে, কিন্তু পাকিস্তান এখনও সীমান্তে অশান্তি সৃষ্টি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
সেক্টরে আধুনিকীকরণ ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতা
রাজনাথ সিং ভার্চুয়ালি স্যার ক্রিক সেক্টরে টিডাল-বার্থিং সুবিধা এবং জয়েন্ট কন্ট্রোল সেন্টার (JCC) উদ্বোধন করেছেন। এই নতুন অবকাঠামো সমন্বিত উপকূলীয় অভিযান, যৌথ অপারেশন সক্ষমতা, কোস্টাল সিকিউরিটি সমন্বয় এবং যেকোনো হুমকির দ্রুত প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করবে।
মন্ত্রী আরও উল্লেখ করেছেন, “অপারেশন সিঁদুরে পাকিস্তান ভারতের প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছিল। ভারতীয় বাহিনী তা প্রতিহত করেছে, পাকিস্তানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে এবং বিশ্বের কাছে বার্তা গিয়েছে—ভারত চাইলে যে কোনও সময়, স্থানে ও উপায়ে ক্ষতি করতে সক্ষম।”
সীমান্ত নিরাপত্তা ও বার্তাবহুল সতর্কতা
স্যার ক্রিক সেক্টরে ভারতের আধুনিকীকরণ এবং প্রতিরক্ষা শক্তি বৃদ্ধি, সীমান্তে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার পাশাপাশি পাকিস্তানকে যেকোনো প্ররোচনার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার বার্তা দিচ্ছে। দেশের কৌশলগত নিরাপত্তা আরও দৃঢ় হচ্ছে, এবং ভারত যে কোনও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষম তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।