পাঞ্জাবে সোমবার সাধারণ জীবনযাত্রা ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়েছে, কারণ কৃষকরা রাজ্যব্যাপী (Farmers Protest) ধর্মঘটের অংশ হিসেবে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেছে, ফলে যাত্রী এবং পণ্য পরিবহন ব্যাপকভাবে থমকে গেছে।
এই পাঞ্জাব বনধটি ৭০ বছর বয়সী কৃষক নেতা জগজিৎ সিং দল্লেওয়ালের সমর্থনে ডাকা হয়েছে, যিনি ২৬ নভেম্বর থেকে অনশনে বসেছেন এবং তার অনশন আজ ৩৫তম দিনে পা দিয়েছে। দল্লেওয়াল তার স্বাস্থ্যবিধি অগ্রাহ্য করে, চিকিৎসা গ্রহণ না করে, অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি দাবি করেছেন যে, তিনি অনশন চালিয়ে যাবেন, যতদিন না কেন্দ্রীয় সরকার ১৩টি কৃষক দাবি মেনে নেয়, যার মধ্যে অন্যতম হলো, সমস্ত ফসলের জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) আইনগতভাবে গ্যারান্টি দেওয়া।
শেখ হাসিনাকে ফেরত দেবে না ভারত, দাবি ইউনূসের উপদেষ্টার
কৃষকরা তাদের দাবির সমর্থনে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে রেলপথ ও সড়ক অবরোধ করেছে, যা পুরো পাঞ্জাবজুড়ে যান চলাচল এবং পণ্য পরিবহনে বিশাল ব্যাঘাত সৃষ্টি করেছে। সড়ক অবরোধের কারণে হাজার হাজার যাত্রী আটকে পড়েছে এবং পণ্য পরিবহনও বিপর্যস্ত হয়েছে। এই অবস্থায় সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হয়েছে।
দল্লেওয়ালের অনশন শুরু হওয়ার পর থেকেই পাঞ্জাবে কৃষকদের মধ্যে এক ধরনের উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা দাবি করছে, এমএসপি যদি আইনগতভাবে গ্যারান্টি না করা হয়, তবে কৃষকরা বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় ন্যায্য দাম পাবে না, যা তাদের জন্য একটি বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি করবে। কৃষকরা মনে করছেন, সরকার কৃষি ক্ষেত্রের উন্নতি না ঘটিয়ে শুধুমাত্র বড় কর্পোরেটদের স্বার্থে কাজ করছে, এবং তাদের দুরবস্থার কোনো সদর্থক সমাধান দিচ্ছে না।
লক্ষ্মীর খোঁজে নেপালের নজরে বিশাখাপত্তনম
পাঞ্জাবের বিভিন্ন অঞ্চলে কৃষকদের এই আন্দোলন দ্রুত শক্তি অর্জন করেছে, এবং এটি শুধু পাঞ্জাবের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, বরং ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে কৃষকদের মধ্যে সমর্থন পাচ্ছে। এই আন্দোলন কৃষি সংস্কারের জন্য একটি বৃহৎ জাতীয় আন্দোলনে রূপ নিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
কৃষকদের দাবির মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, ফসলের জন্য এমএসপি আইনত নিশ্চিত করা এবং কৃষকদের জন্য আরও সহায়ক নীতির প্রণয়ন। দল্লেওয়ালের এই আন্দোলন শুধু কৃষকদের অর্থনৈতিক স্বার্থের কথা বলে না, বরং এটি কৃষক সমাজের আত্মমর্যাদা এবং তাদের মর্যাদার বিষয়ও হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পাঞ্জাব সরকারের পক্ষ থেকে এই আন্দোলনের প্রতি সহানুভূতি দেখা গেলেও, কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনো কার্যকরী প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ফলে কৃষক আন্দোলন আরও তীব্র হতে পারে, যা দেশের অন্যান্য রাজ্যেও কৃষকদের মধ্যে প্রবল প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে।
সন্দেশখালিকে সমৃদ্ধ করেছে বাংলার মায়েরা, তাঁদের প্রণাম: মমতা
এদিনের অবস্থায়, পাঞ্জাবে সাধারণ মানুষের কাছে এই আন্দোলন কীভাবে প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। তবে, কৃষকরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, যতদিন পর্যন্ত তাদের দাবি পূর্ণ না হবে, ততদিন পর্যন্ত তারা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।