অমিত শাহের “৫০ বছরের শাসন” মন্তব্যে তোপ দাগলেন রাহুল গান্ধী

কংগ্রেস নেতা এবং লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) ফের বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ শানালেন। মঙ্গলবার তিনি অভিযোগ করেন, বিজেপি যতই দশকের পর দশক ক্ষমতায়…

Rahul Gandhi Slams Amit Shah's 'BJP Will Rule 50 Years' Remark, Links It to 'Vote Chori'

কংগ্রেস নেতা এবং লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) ফের বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ শানালেন। মঙ্গলবার তিনি অভিযোগ করেন, বিজেপি যতই দশকের পর দশক ক্ষমতায় থাকার দাবি করুক না কেন, তার ভিত্তি আসলে “ভোট চুরি” বা নির্বাচনী কারচুপির উপর দাঁড়িয়ে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সম্প্রতি দাবি করেছিলেন, বিজেপি আগামী ৪০ থেকে ৫০ বছর দেশ চালাবে। এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে রাহুল বলেন, “অমিত শাহ যা বলেছেন, তাতে বিজেপির আসল সত্যিটাই ফাঁস হয়ে গেল।”

বিজেপির দীর্ঘমেয়াদি শাসনের স্বপ্ন

   

অমিত শাহ গত সপ্তাহে এক জনসভায় বক্তব্য রাখার সময়ে বলেন, “বিজেপি এমন এক সংগঠন, যার ভিত্তি অটল, তাই আগামী ৪০-৫০ বছর আমাদেরই শাসন চলবে।” শাহের এই মন্তব্য কার্যত বিজেপির আত্মবিশ্বাসকে সামনে আনে। কিন্তু বিরোধী শিবিরের মতে, এটি গণতান্ত্রিক কাঠামোর জন্য বিপজ্জনক ইঙ্গিত।

রাহুল গান্ধীর কথায়, “যে দল সত্যিকারের গণতান্ত্রিক উপায়ে মানুষের বিশ্বাস অর্জন করে, তাদের নেতারা কখনও এই ধরনের মন্তব্য করতে পারেন না। বিজেপি জানে, তারা মানুষের সমর্থন হারাচ্ছে। তাই এখন ভোট চুরি ছাড়া আর কোনও ভরসা নেই।”

ভোট চুরি’ প্রসঙ্গ সামনে আনলেন রাহুল

বিরোধী দলনেতা স্পষ্ট ভাষায় বলেন, বিজেপির কাছে নির্বাচন আর নিছক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নয়। বরং এটি এমন এক যন্ত্র, যার মাধ্যমে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরা যায়। “ইভিএমে কারচুপি, সরকারি যন্ত্রকে ব্যবহার, বিরোধীদের কণ্ঠরোধ— সবই তাদের পরিকল্পনার অঙ্গ,” দাবি রাহুলের।

তিনি আরও যোগ করেন, “অমিত শাহ যখন বলেন বিজেপি ৫০ বছর শাসন করবে, তখন তিনি আসলে জানাচ্ছেন, এই সময়সীমা জুড়ে ভোটচুরি চলবে। কিন্তু দেশের মানুষ চুপ করে বসে থাকবে না। গণতন্ত্রকে বাঁচাতে আমরা লড়বই।”

বিরোধীদের কৌশল ও রাহুলের হুঁশিয়ারি

Advertisements

কংগ্রেস(Rahul Gandhi) নেতার মতে, বিজেপির স্বপ্ন ভাঙার একমাত্র উপায় বিরোধীদের ঐক্য। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “বিজেপি যতই ‘অপরাজেয়’ হওয়ার দাবি তুলুক, দেশের মানুষই তাদের জবাব দেবে। ভোট চুরি যতদিন চলবে, ততদিন লড়াই আরও তীব্র হবে।”

বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ (INDIA bloc)-এর পক্ষ থেকেও শাহের মন্তব্যকে অগণতান্ত্রিক বলা হয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, এক দলে সারাজীবনের ক্ষমতার গ্যারান্টি গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দেয়।

বিজেপির পাল্টা অবস্থান

অন্যদিকে বিজেপির পক্ষ থেকে এই অভিযোগ খারিজ করা হয়েছে। দলের মুখপাত্ররা বলেছেন, “বিজেপি মানুষের আশীর্বাদ নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে, কোনও চুরি করে নয়। রাহুল গান্ধীর মন্তব্য শুধু রাজনৈতিক হতাশা থেকে বলা।” তাঁদের মতে, দেশজুড়ে বিজেপির উন্নয়ন প্রকল্প, গরিবদের জন্য কল্যাণমূলক কর্মসূচি এবং শক্তিশালী নেতৃত্বই দলকে আরও দীর্ঘসময় ক্ষমতায় রাখবে।

রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, শাহের বক্তব্য আসলে বিজেপির আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করে। কিন্তু বিরোধী দলগুলি এটিকে হাতিয়ার করে ভোটারদের কাছে গণতন্ত্র বাঁচানোর ডাক দেবে। বিশেষত ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের পর বিজেপি-বিরোধী কণ্ঠস্বর আরও জোরদার হয়েছে।

রাহুলের এই মন্তব্যকে কংগ্রেস সমর্থকরা স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, “বিজেপির ৫০ বছরের শাসন মানে গণতন্ত্রের মৃত্যু। তাই রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে এই লড়াই জারি থাকবে।”