Rahul Gandhi Leads ‘Palayaan Roko, Naukarri Do’ Rally in West Bengal’s Shaya Bihar
লোকসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী (rahul gandhi) আজ বেগুসরায়ে কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন ন্যাশনাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ ইন্ডিয়া (এনএসইউআই)-এর ‘পলায়ন রোকো, নৌকরি দো’ যাত্রায় যোগ দিয়েছেন। এই যাত্রার নেতৃত্বে রয়েছেন এনএসইউআই-এর জাতীয় প্রভারী কানহাইয়া কুমার।
রাহুল গান্ধী পরে পাটনায় একটি জনসভায় ভাষণ দেবেন বলে জানা গেছে। রবিবার এক্স-এ একটি পোস্টে রাহুল গান্ধী জানিয়েছিলেন যে তিনি ৭ এপ্রিল বেগুসরায়ে এই যাত্রায় অংশ নেবেন।
রাহুল গান্ধী (rahul gandhi) লিখেছেন
তিনি লিখেছেন, “বিহারের যুব বন্ধুরা, আমি ৭ এপ্রিল বেগুসরায়ে আসছি ‘পলায়ন রোকো, নৌকরি দো’ অভিযানে আপনাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হাঁটতে। লক্ষ্য হলো বিশ্বের কাছে বিহারের যুবকদের মনের কথা, তাদের সংগ্রাম ও কষ্ট তুলে ধরা।”
তিনি বিহারের যুবকদের সাদা টি-শার্ট পরে এই যাত্রায় যোগ দিতে এবং সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “সাদা টি-শার্ট পরে আসুন, প্রশ্ন করুন, আপনার কণ্ঠ তুলুন—সরকারের উপর আপনার অধিকারের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে, তাদের জবাবদিহি করতে। আসুন একসঙ্গে বিহারকে সুযোগের রাজ্যে পরিণত করি।”
রাহুল গান্ধী আরও জানান
রাহুল গান্ধী (rahul gandhi) আরও জানান, “আপনারা যে সমস্যার মুখোমুখি—বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি, পরীক্ষার পেপার ফাঁস, একের পর এক সরকারি চাকরি কমে যাওয়া এবং আপনাদের উপকার না করা বেসরকারিকরণ—এই সবই আমাদের এই অভিযানের কারণ। এটিকে বলা হয় ‘পলায়ন যাত্রা’। সাদা টি-শার্ট পরে আমাদের সঙ্গে যোগ দিন, যাতে বিশ্ব বিহারের যুবকদের ভাবনা দেখতে পায় এবং বিহার সরকারের উপর চাপ পড়ে। আমরা বিহারের যুবশক্তিকে জাগিয়ে একটি নতুন বিহার গড়তে চাই।”
এর আগে রাহুল গান্ধী এই বছরের ১৮ জানুয়ারি এবং ৫ ফেব্রুয়ারি বিহারে এসেছিলেন। বিহার বিধানসভার ২৪৩টি আসনের নির্বাচন এই বছরের অক্টোবর বা নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। গত বিধানসভা নির্বাচন ২০২০ সালের অক্টোবর-নভেম্বরে হয়েছিল। এই যাত্রাকে কংগ্রেসের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা আসন্ন নির্বাচনের প্রাক্কালে যুবকদের মধ্যে দলের প্রভাব বাড়াতে সাহায্য করবে।
যাত্রার উদ্দেশ্য ও প্রেক্ষাপট
‘পলায়ন রোকো, নৌকরি দো’ যাত্রা গত মাসে পূর্ব চম্পারণ জেলা থেকে শুরু হয়েছিল। এটি বিহারের যুবকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে, যারা দীর্ঘদিন ধরে বেকারত্ব, অভিবাসন এবং সুযোগের অভাবের মতো সমস্যার সঙ্গে লড়াই করছে। কানহাইয়া কুমার, যিনি বেগুসরায়ের স্থানীয় এবং প্রাক্তন জেএনইউ ছাত্রনেতা, এই যাত্রার প্রধান আকর্ষণ।
তিনি ২০১৯ সালে সিপিআই-এর টিকিটে বেগুসরায় থেকে লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন এবং পরে কংগ্রেসে যোগ দেন। তাঁর গ্রামীণ সংযোগ এবং যুব অধিকারের প্রতি তাঁর জোরালো কণ্ঠ এই যাত্রাকে আরও জনপ্রিয় করে তুলেছে।
এই অভিযানের মাধ্যমে কংগ্রেস বিহার সরকারের বিরুদ্ধে বেকারত্ব ও অভিবাসনের মতো বিষয়ে জবাবদিহি দাবি করছে। রাহুল গান্ধী (rahul gandhi) তাঁর বক্তব্যে বলেন, “বিহারের যুবকদের সংগ্রাম ও কষ্ট বিশ্বের সামনে তুলে ধরাই আমাদের লক্ষ্য। সরকারি চাকরি দিন দিন কমছে, আর বেসরকারিকরণে তাদের কোনো সুবিধা হচ্ছে না। আমরা এই সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করে পরিবর্তন আনতে চাই।”
মমতার মঞ্চে চাকরিহারাদের নয়া সিদ্ধান্ত, ঘোষণা পরবর্তী পদক্ষেপ
রাজনৈতিক প্রভাব
বিহারে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে মহাগঠবন্ধনের অংশ হিসেবে কংগ্রেস রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) এবং বাম দলগুলির সঙ্গে মিলে শাসক জোট এনডিএ-র বিরুদ্ধে লড়াই করবে। এনডিএ-র নেতৃত্বে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং বিজেপি। রাহুল গান্ধীর এই যাত্রায় অংশগ্রহণকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এনডিএ-র বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী বার্তা হিসেবে দেখছেন। এটি কংগ্রেসের জন্য যুব ভোটারদের সমর্থন সংগঠিত করার একটি কৌশলগত পদক্ষেপও।
বিজেপি নেতা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং এই সফরের সমালোচনা করে বলেন, “রাহুল গান্ধী বিহারে এসে বিভ্রান্তি ছড়াতে চান। কংগ্রেস ৬০ বছর শাসন করেও দারিদ্র্য দূর করতে পারেনি। নরেন্দ্র মোদী সরকার ২৫ কোটি মানুষকে দারিদ্র্যসীমার উপরে তুলেছে। বিহারে মোদীর রাস্তা আর নীতীশ কুমারের উন্নয়ন দেখে তাঁর চোখ ধাঁধিয়ে যাবে।”
যাত্রার গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ
এই যাত্রা ১৪ এপ্রিল পাটনায় শেষ হবে, যা বাবাসাহেব আম্বেদকরের জন্মবার্ষিকীর সঙ্গে মিলে যায়। এটি নির্বাচনের প্রাক্কালে এর গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বেগুসরায়ের পর রাহুল গান্ধী পাটনায় ‘সংবিধান সুরক্ষা সম্মেলন’-এ ভাষণ দেবেন, যেখানে তিনি সাংবিধানিক মূল্যবোধ এবং অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ নিয়ে কথা বলবেন।
বিহারের যুবকদের মধ্যে এই যাত্রা ব্যাপক উৎসাহ সৃষ্টি করেছে। কানহাইয়া কুমারের নেতৃত্বে এটি ছাত্র, যুব গোষ্ঠী এবং সুশীল সমাজের ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে। রাহুল গান্ধীর উপস্থিতি এই অভিযানকে আরও শক্তিশালী করেছে, যা বিহারের রাজনৈতিক ভূ-প্রকৃতিতে একটি বড় প্রভাব ফেলতে পারে। আগামী দিনে এই যাত্রা কীভাবে ভোটারদের মন জয় করে, সেটাই দেখার বিষয়।