বিহার রাজনীতিতে ফের জমে উঠেছে জল্পনা। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে মহাজোটের প্রধান সহযোগী দল রাজদ (RJD)-এর তরুণ নেতা তেজস্বী যাদব রবিবার মঞ্চ থেকে এমন এক ইঙ্গিত দিলেন, যা কার্যত বিরোধী শিবিরে মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী নির্ধারণের ধোঁয়াশা দূর করল।
পাটনায় এক জনসভায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর পাশে বসে তেজস্বী বলেন, “আমাদের সংগ্রাম হচ্ছে ন্যায়ের জন্য, মানুষের অধিকারের জন্য। আর এই লড়াইয়ে রাহুলজি সামনের সারিতে আছেন। বিহারের আগামী পথচলায় তাঁর নেতৃত্বই হবে নির্ণায়ক।” তাঁর এই বক্তব্যকে রাজনৈতিক মহল স্পষ্ট ইঙ্গিত হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে যে রাহুল গান্ধীকেই মহাজোটের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে সামনে রাখা হচ্ছে।
রাহুলের উপস্থিতি ও বার্তা
জনসভায় রাহুল গান্ধীও তেজস্বীর বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে বিহারের বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানান। তিনি বলেন, “বিহারের যুবকরা বেকার, কৃষকরা সমস্যায় জর্জরিত, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। সময় এসেছে পরিবর্তনের।” তাঁর এই বক্তব্যে কর্মীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা ছড়িয়ে পড়ে।
তেজস্বীর কৌশল
তেজস্বী যাদব দীর্ঘদিন ধরেই মহাজোটকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করছেন। গত নির্বাচনে যদিও আরজেডি-কে বিরাট সাফল্য এনে দিয়েছিলেন, তবুও মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে শেষ পর্যন্ত জায়গা করে নিতে পারেননি। এবার তাই তিনি নিজে সরে গিয়ে রাহুলকে সামনে রেখে বিরোধী ভোটকে একত্রিত করার কৌশল নিয়েছেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত।
তাদের মতে, জাতীয় পর্যায়ে রাহুল গান্ধীর জনপ্রিয়তা ও কংগ্রেসের সাংগঠনিক জোর বিহারের নির্বাচনে বিরোধী শিবিরকে শক্তিশালী করবে। তাছাড়া তেজস্বী নিজে তরুণ মুখ হিসেবে পাশে থাকলে দলীয় কর্মীরা দ্বিগুণ শক্তিতে ঝাঁপাবে।
বিজেপি-জেডিইউ শিবিরের প্রতিক্রিয়া
অন্যদিকে, এই ইঙ্গিতকে রাজনৈতিক নাটক বলে কটাক্ষ করেছে শাসক শিবির। বিজেপি নেতারা দাবি করেছেন, “রাহুল গান্ধী বিহারের মাটিতে কখনওই গ্রহণযোগ্য নন। তিনি বহিরাগত এবং মানুষের সমস্যার সঙ্গে যুক্ত নন।” জেডিইউ-এর পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, তেজস্বী মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হতে সাহস পাচ্ছেন না বলেই রাহুলকে সামনে আনছেন।
তবে বিরোধী শিবির মনে করছে, এই সমালোচনা প্রমাণ করছে যে রাহুল গান্ধীর নামেই শাসকদল চিন্তিত।