ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে ফের একবার উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে শিল্পপতি গৌতম আদানির (Gautam Adani scam) বিরুদ্ধে ওঠা ঘুষ এবং আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ। সাম্প্রতিক একটি সংবাদ সম্মেলনে কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ শানিয়ে বলেন, “আদানিকে সুরক্ষা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।” তিনি দাবি করেছেন যে আদানির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলি অত্যন্ত গুরুতর এবং এই পরিস্থিতিতে আদানির গ্রেফতারি এবং জিজ্ঞাসাবাদ অবিলম্বে হওয়া উচিত।
গৌতম আদানি বিরুদ্ধে ২২০০ কোটি টাকা ঘুষের অভিযোগ, এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের
গৌতম আদানি, যিনি ভারতের অন্যতম বৃহত্তম ব্যবসায়ী এবং আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা, তার ব্যবসার বিস্তারের জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীর সরকারের সময় একটি বিশেষ সুযোগ পেয়েছেন। আদানির ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের উত্থানের পেছনে মোদীর সরকারের নীতিমালার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। রাহুল গান্ধী একাধিকবার এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং তিনি দাবি করেছেন যে আদানি এবং মোদী দুজনেই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত।
গান্ধী বলেছেন, “যদি আদানির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়, তাহলে তাকে শুধু গ্রেফতার করাই নয়, বরং তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।” এটি ইঙ্গিত করে যে কিভাবে উচ্চ পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের আইন প্রয়োগ করা হচ্ছে না।
আমেরিকায় গৌতম আদানি এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকার ঘুষ এবং আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগগুলি আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের ব্যবসায়ী এবং রাজনৈতিক চিত্রের প্রতি একটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি এসব অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে ভারতের ব্যবসায়ী সমাজের উপর একটি বিরাট প্রশ্নচিহ্ন উঠে যাবে।
মোদি সরকার ৬ কোটি রেশন কার্ড বাতিল করেছে, জানুন কীভাবে প্রভাবিত হবে আপনার রেশন সুবিধা
এই ঘটনার পর রাহুল গান্ধী সাংবাদিকদের সামনে এসে বলেছেন, “এই কেলেঙ্কারির পেছনে কেবল আদানির নামই নয়, বরং প্রধানমন্ত্রী মোদীর নামও জড়িত। তিনি আদানির জন্য একটি নিরাপদ গণ্ডি তৈরি করেছেন, যা আমাদের গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর।”
রাহুল গান্ধীর এই আক্রমণটি কংগ্রেসের নির্বাচনী কৌশলের একটি অংশ বলেও মনে হচ্ছে। আসন্ন নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে, কংগ্রেস নেতারা রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার জন্য এই ঘটনার যথাযথ ব্যবহার করতে চাইছেন। রাহুল বলেছেন, “এই ধরনের দুর্নীতির ঘটনা সাধারণ জনগণের বিশ্বাসকে নষ্ট করে। আমাদের গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হবে এবং এর জন্য আদানির গ্রেফতারি জরুরি।”
এছাড়াও, রাহুল গান্ধী বলেছেন, “মোদি সরকার একাধিকবার দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, কিন্তু বাস্তবে তারা নিজেদের সমর্থকদের দুর্নীতি লুকিয়ে রেখেছে। আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলি উঠছে, সেগুলি সরকারের দুর্নীতির একটি প্রতিফলন।”
রাহুলের এই দাবির পর সাধারণ জনগণের মধ্যে বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন যে, রাজনীতির এই ধরনের আচরণ দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে। কিছু মানুষ রাহুলের বক্তব্যকে সমর্থন করছেন, কারণ তারা বিশ্বাস করেন যে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। অন্যদিকে, কিছু সমর্থক মনে করছেন যে রাজনীতির এই ধরনের ব্যবহারে জনগণের সমস্যা সমাধানে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া হয় না।
Arpita Mukherjee: মায়ের মৃত্যু, প্যারোলে মুক্তি পেলেন পার্থ-সঙ্গিনী অর্পিতা
গৌতম আদানি এবং তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলি ভারতের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। রাহুল গান্ধীর বক্তব্যগুলো রাজনৈতিক দৌড়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে সাহায্য করবে। আদানি এবং মোদীর সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে, আগামীদিনগুলোতে রাজনৈতিক নাটকের নতুন পর্যায় শুরু হতে পারে।