পাঞ্জাব পুলিশের আত্মহত্যার জন্য দায়ী বিজেপি ও আরএসএস, অভিযোগ রাহুলের

হরিয়ানার প্রবীণ আইপিএস অফিসার ওয়াই পুরণ কুমারের আত্মহত্যা ঘিরে দেশজুড়ে শোক ও বিতর্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) এই মর্মান্তিক ঘটনার…

rahul-gandhi-blames-bjp-rss-for-social-poison-behind-punjab-police-officers-suicide

হরিয়ানার প্রবীণ আইপিএস অফিসার ওয়াই পুরণ কুমারের আত্মহত্যা ঘিরে দেশজুড়ে শোক ও বিতর্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) এই মর্মান্তিক ঘটনার তীব্র নিন্দা করে একে ‘জাতপাতের নামে ছড়িয়ে পড়া গভীর সামাজিক বিষের প্রতীক’ বলে মন্তব্য করেছেন। একাধিক টুইটের মাধ্যমে তিনি জাতপাতের ভিত্তিতে বৈষম্য ও দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন এবং জানান, এই ঘটনা শুধুমাত্র একজন অফিসারের নয়, এটি দেশের প্রতিটি প্রান্তিক মানুষের লড়াইয়ের প্রতিচ্ছবি।

Advertisements

রাহুল গান্ধী লেখেন, “যদি একজন উচ্চপদস্থ আইপিএস অফিসারকেও জাতের কারণে অপমান, হেনস্থা ও অত্যাচারের শিকার হতে হয়, তাহলে একজন সাধারণ দলিত নাগরিক কী ধরনের অবমাননার মুখোমুখি হন, তা সহজেই কল্পনা করা যায়।”

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, জাতপাতের অবিচার এবং মানসিক নিপীড়ন শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতির সীমায় সীমাবদ্ধ নয় — এটি একটি বৃহত্তর সামাজিক ও প্রশাসনিক ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি। পুরণ কুমারের মতো একজন অভিজ্ঞ ও কর্তব্যপরায়ণ অফিসার যদি বারবার হেনস্থার শিকার হন এবং শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার পথ বেছে নেন, তবে এটি প্রশাসনিক কাঠামোর ভিত কাঁপিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা।

রাহুল গান্ধী তাঁর বক্তব্যে বিজেপি ও আরএসএসের নাম করে তাদের বিরুদ্ধে সমাজে ‘ঘৃণা ও মনুবাদী মানসিকতা’ ছড়ানোর অভিযোগ আনেন। তিনি বলেন, এই মানসিকতার কারণে আজ দলিত, আদিবাসী, অনগ্রসর শ্রেণি এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষরা ন্যায়বিচারের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন।

তিনি উল্লেখ করেন, শুধুমাত্র পুরণ কুমারের ঘটনা নয় — রায়বেরেলিতে হরিওম বাল্মিকীর হত্যাকাণ্ড এবং প্রধান বিচারপতির প্রতি অবমাননার অভিযোগও আমাদের সমাজে প্রান্তিক শ্রেণির মানুষদের বিরুদ্ধে দীর্ঘস্থায়ী অবিচারের ইঙ্গিত দেয়।

“এই লড়াই শুধু পুরণ কুমারের নয়,” — রাহুল লেখেন, “এটি তাদের সবার, যারা সংবিধানে বিশ্বাস রাখে, সমতা ও ন্যায়ের পক্ষে লড়াই করে।” তার এই মন্তব্য স্পষ্টতই এই সংকটকে রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে তুলে ধরছে।

ওয়াই পুরণ কুমার ছিলেন হরিয়ানা পুলিশের একজন প্রবীণ ও দক্ষ আইপিএস অফিসার। তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের ভিতরে জাতপাতের ভিত্তিতে বৈষম্য, অবহেলা এবং মানসিক হেনস্থার শিকার হয়ে আসছিলেন। ওই চাপ ও অবিচার সহ্য করতে না পেরেই তিনি আত্মহত্যার মতো চরম সিদ্ধান্তে পৌঁছান বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই ঘটনাটি সামনে আসার পর সমাজের বিভিন্ন মহলে কড়া প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। জাতপাতের ভিত্তিতে বৈষম্য, প্রশাসনিক হেনস্থা ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর চাপ — এই তিনটি বিষয় আবারও আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে।