নয়াদিল্লি: বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর ‘ভোট চুরি’ অভিযোগ ঘিরে অগ্নিগর্ভ রাজনৈতিক পরিস্থিতি। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপি ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন কংগ্রেস সাংসদ। তাঁর দাবি, কর্ণাটক নির্বাচনে সফটওয়্যারের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে ভোটার তালিকা থেকে হাজার হাজার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের ঝড় উঠতেই পাল্টা কড়া আক্রমণে নামলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর।
‘হাইড্রোজেন বোমা’ নাকি কেবল পটকা?
রাহুল গান্ধীর ঘোষণাই ছিল নাটকীয়৷ তিনি ‘ভোট চুরি’র অখণ্ড প্রমাণ নিয়ে হাজির হয়েছেন, যেন ‘‘হাইড্রোজেন বোমা’’ ফাটাবেন। কিন্তু অনুরাগ ঠাকুরের কটাক্ষ, ‘‘রাহুল গান্ধী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বোমা ফাটাবেন, অথচ বেরোল কেবল পটকা।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘রাহুল গান্ধী গণতন্ত্রকে দুর্বল করছেন, মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন, ভারতকে বাংলাদেশ ও নেপালের মতো অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে ঠেলে দিতে চাইছেন।’’
৯০টি নির্বাচনী পরাজয়ের হতাশা Rahul Gandhi Anurag Thakur clash
ঠাকুরের তোপ, ‘‘রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস প্রায় ৯০টি নির্বাচন হেরেছে। সেই হতাশা থেকেই এখন ভিত্তিহীন অভিযোগ ছড়াচ্ছেন তিনি। আদালতে ক্ষমা চাওয়া ও ভর্ৎসনা পাওয়া তাঁর নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।’’
রাহুলের পাল্টা অভিযোগ ও প্রমাণের দাবি
অন্যদিকে রাহুল গান্ধীর সাফ কথা, এই ষড়যন্ত্র ব্যক্তিগত চেষ্টার ফল নয়, বরং একটি ‘‘সমন্বিত অপারেশন’’। নকল লগইন, ভুয়ো ফোন নম্বর আর সফটওয়্যার ম্যানিপুলেশনের মাধ্যমে সংখ্যালঘু ভোটারদের টার্গেট করে নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। প্রমাণ হিসেবে তিনি কর্ণাটকের আলন্দ আসনের উদাহরণ তুলে ধরেন, যেখানে একবারে ৬,০১৮ ভোটারের নাম প্রায় মুছে ফেলা হচ্ছিল। তিনি একটি পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে তার নমুনাও দেখান।
কমিশনের জবাব
নির্বাচন কমিশন অবশ্য সমস্ত অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়ে বলেছে, ‘‘ভোটার তালিকা থেকে নাম কেটে দেওয়া অনলাইনে সম্ভব নয়। কারও শুনানি ছাড়া নাম বাদ দেওয়া যায় না।’’ কমিশনের বক্তব্যে এই অভিযোগ ‘‘ভিত্তিহীন ও ভুল’’।
শেষ প্রশ্ন: রক্ষা না ধ্বংস?
ঠাকুর শেষ প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ‘‘আলন্দ আসনে তো কংগ্রেস প্রার্থীই ২০২৩ সালে জিতেছিলেন ১০,৩৪৮ ভোটে। তাহলে কি কংগ্রেসও ভোট চুরির মাধ্যমে জিতেছে? আজ রাহুল গান্ধী নিজেই বললেন, তিনি গণতন্ত্র বাঁচাতে আসেননি। তবে কি গণতন্ত্র ধ্বংস করাই তাঁর লক্ষ্য?’’