তামিলনাড়ু এবং কেন্দ্রের মধ্যে ত্রিভাষা নীতি বাস্তবায়ন নিয়ে বিরোধ আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। বিজেপি নেত্রী রচনা রেড্ডি তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিনকে আক্রমণ করে অভিযোগ করেছেন যে, স্টালিন এই বিষয়টিকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছেন। তিনি দাবি করেন, “কেউ তামিল ভাষা কেড়ে নিচ্ছে না। তামিলনাড়ুর শিক্ষার্থীরা তাদের মাতৃভাষার পাশাপাশি জাতীয় ভাষা এবং অন্য কোনো ভাষা শিখলে তাতে ভুল কি? এটা তো এক ধরনের বহু-ভাষিক শিক্ষা।”
এছাড়া, রেড্ডি বলেন, “তামিলনাড়ুতে তামিল ভাষা নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তাহলে, মুখ্যমন্ত্রী স্টালিন কেন এত আক্রমণাত্মক হচ্ছেন? তিনি কি দেশের বিরুদ্ধে মতাদর্শ প্রচার করছেন? তিনি বিভেদমূলক ধারণা ছাত্রদের মধ্যে ছড়াচ্ছেন।” রেড্ডি আরও বলেন, “এম কে স্টালিন এখন আর সঠিকভাবে পরিস্থিতি সামলাতে পারছেন না। রাজ্যে অপরাধের পরিমাণ বেড়ে গেছে। একের পর এক নারী ও শিশুদের উপর অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, কিন্তু স্টালিন সরকার তাতে কোনও কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারছে না।”
এদিকে, ২০২৬ সালের নির্বাচনের আগে তামিলনাড়ুতে ডিএমকে এবং বিজেপির মধ্যে বিরোধ আরও গহীন হচ্ছে। তামিলনাড়ুর প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের বরাদ্দকৃত তহবিল এবং ত্রিভাষা নীতি নিয়ে উত্তপ্ত আলোচনা চলছে। গত শুক্রবার, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিনের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে লেখা চিঠির প্রতি তীব্র সমালোচনা করেন। প্রধান চিঠিতে অভিযোগ করেন যে, স্টালিন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে প্রধানমন্ত্রীকে ত্রিভাষা নীতি নিয়ে ‘কাল্পনিক উদ্বেগ’ জানিয়েছিলেন। ধর্মেন্দ্র প্রধান স্পষ্টভাবে বলেন, “জাতীয় শিক্ষানীতি (NEP) ২০২০ কোনও রাজ্যে কোনো ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার কথা বলে না। অর্থাৎ, তামিলনাড়ুতে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই।”
এছাড়া, প্রধান বলেছেন, “নির্দেশনাগুলোর মধ্যে যদি ত্রিভাষা নীতির কথা বলা হয়, তাহলে তা একমাত্র শিক্ষার্থীদের ভাষাগত দক্ষতা বৃদ্ধি এবং তাদের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা সম্প্রসারণের জন্য।” তিনি আরও বলেন, “কোনো ধরনের ভাষার ওপর জোরাজুরি করা হচ্ছে না। রাজ্যগুলির ভাষাগত বৈচিত্র্য রক্ষা করার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রয়েছে।” তামিলনাড়ু মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন প্রধানমন্ত্রী মোদিকে একটি চিঠি লিখে অভিযোগ করেছিলেন যে, কেন্দ্রের ‘সমগ্র শিক্ষা’ তহবিল মুক্তি দেওয়ার জন্য তামিলনাড়ুতে ত্রিভাষা নীতি বাস্তবায়ন করা আবশ্যক। স্টালিন এই পরিস্থিতিকে কেন্দ্রীয় সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের একটি কৌশল হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
তামিলনাড়ুর বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেখাচ্ছে যে, ত্রিভাষা নীতি এবং অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি ২০২৬ সালের নির্বাচনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে উঠতে চলেছে। বিজেপি এবং ডিএমকের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়ছে, এবং রাজ্যের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে দেশব্যাপী আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।