নয়াদিল্লি, ১ অক্টোবর: রাশিয়র রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার (Geo Politics) পর প্রথমবারের মতো ভারতে আসবেন বলে সরকারি সূত্র জানিয়েছে। তিনি ৫-৬ ডিসেম্বর নয়াদিল্লিতে ২৩তম ভারত-রাশিয়া শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেবেন, যা দুই দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্বকে নতুন মাত্রা দেবে।
এই সফরের খবর এসেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে চীনের তিয়ানজিনে শাঙ্ঘাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনের মার্জানে ১ সেপ্টেম্বর তাঁদের বৈঠকের পর। ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, পুতিন মে মাসে মোদীর আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছিলেন, যদিও তারিখ নির্ধারণে কিছু বিলম্ব হয়েছে।
এই সফরের পটভূমি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০২২ সালের ইউক্রেন আক্রমণের পর পুতিনের ভারত সফর বাতিল হয়ে যায়, এবং এটি তাঁর প্রথম সফর হবে যুদ্ধের পর। ভারত রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক অটুট রেখেছে, যা পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়ান তেল আমদানি এবং সামরিক সহযোগিতার মাধ্যমে প্রমাণিত।
গত বছর দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ৬০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে, এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এই শীর্ষ সম্মেলনে দুই নেতা এই লক্ষ্য অর্জনের পথে ‘অর্থনৈতিক রোডম্যাপ’ নিয়ে আলোচনা করবেন, যার মধ্যে চেন্নাই-ভ্লাদিভোস্টক মেরিটাইম ট্রেড করিডরের মতো নতুন বাণিজ্য পথ অন্তর্ভুক্ত।
ক্রেমলিনের বিদেশ মন্ত্রকের উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ সাংবাদিকদের জানান, “এসসিও সম্মেলনে মোদী ও পুতিনের বৈঠকে ডিসেম্বর সফরের প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এটি দুই দেশের বন্ধুত্বের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।” মোদী এবং পুতিনের মধ্যে এটি ২০২৪ সালের ব্রিক্স সম্মেলনের পর দ্বিতীয় মুখোমুখি বৈঠক।
চীনের তিয়ানজিনে হওয়া এই বৈঠকে তাঁরা ইউক্রেন সংকট, মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি এবং দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলেন। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের মস্কো সফরের পরও এই সফরের তারিখ ‘প্রায়’ নির্ধারিত হয়েছে বলে জানা গেছে। এই সফরের প্রেক্ষাপটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক পদক্ষেপও উল্লেখযোগ্য।
“ভারতের ঐক্যের শত্রু অনুপ্রবেশকারীরা!” মোদীর ভাষণে বড় ইঙ্গিত
ট্রাম্প প্রশাসন রাশিয়ান তেল কেনার কারণে ভারতের উপর শুল্ক আরোপ করেছে, যা নয়াদিল্লি-মস্কো সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ করে তুলেছে। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “ইউরোপীয় দেশগুলির কারণে রাশিয়ান তেলের ঐতিহ্যগত সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে, এবং ভারতের আমদানি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য প্রয়োজনীয়।” এছাড়া, সামরিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা অব্যাহত। এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের ডেলিভারি ২০২৫ সালে শুরু হবে, এবং শীর্ষ সম্মেলনে এরকম চুক্তিগুলির অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হবে।