প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে ২৩তম ভারত-রাশিয়া বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নয়াদিল্লি পৌঁছাচ্ছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এটি গত চার বছরের মধ্যে তাঁর প্রথম ভারত সফর এবং ইউক্রেন সংঘাত শুরু হওয়ার পর প্রথম বিদেশ যাত্রা। কর্মকর্তারা এই ২৭ ঘণ্টার সফরকে ‘স্বল্প কিন্তু কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ’ বলে বর্ণনা করছেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ রাজধানীতে অবতরণের পর পুতিন সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে যাবেন এবং রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত একান্তে নৈশভোজ বৈঠকে যোগ দেবেন। এরপর তিনি রাতে হোটেলে ফিরবেন বলে সরকারি সূত্র জানিয়েছে।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক দিয়ে সফর শুরু
শনিবারের দিনটি রুশ প্রেসিডেন্টের জন্য অত্যন্ত ব্যস্ততাপূর্ণ হতে চলেছে। দিনের শুরু হবে সকাল ১১টা নাগাদ রাষ্ট্রপতি ভবনে ভারতের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক এবং আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনার মাধ্যমে। এরপর তিনি রাজঘাটে গিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন এবং সেখানে প্রায় ৩০ মিনিট অতিবাহিত করবেন। রাজঘাট থেকে পুতিন সরাসরি হায়দরাবাদ হাউসে যাবেন, যেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসবেন। দুপুর ২টা নাগাদ প্রধানমন্ত্রীর আতিথেয়তায় মধ্যাহ্নভোজ অনুষ্ঠিত হবে। উল্লেখ্য, মধ্যাহ্নভোজের ঠিক আগে প্রেসিডেন্ট পুতিন একটি প্রেস বিবৃতি দিতে পারেন বলেও খবর রয়েছে।
হায়দরাবাদ হাউসে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক Putin 27-Hour Strategic India Visit
মধ্যাহ্নভোজের পরের পুরো সময়টা হায়দরাবাদ হাউসে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের জন্য নির্ধারিত রয়েছে। এই আলোচনায় দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা, জ্বালানি, সার সরবরাহ এবং কৌশলগত অংশীদারিত্বসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। মধ্যাহ্নভোজের এক ঘণ্টা পর ভারত মণ্ডপমেও প্রেসিডেন্টের যাওয়ার কথা রয়েছে। সন্ধ্যায় তিনি আরটি (RT) টিভি-র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং সবশেষে রাত সাড়ে ৭টা নাগাদ রাষ্ট্রপতি ভবনে নৈশভোজে অংশ নেবেন। এই নৈশভোজ শেষে তিনি ২৭ ঘণ্টার সফর শেষে ভারতের মাটি ত্যাগ করবেন।
নতুন অর্থনৈতিক ব্যবস্থা তৈরির সুযোগ
এই সফর এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন নয়াদিল্লি একদিকে কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন বজায় রাখতে সচেষ্ট, অন্যদিকে ওয়াশিংটন ও পশ্চিমা দেশগুলির চাপ সামলে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম, অপরিশোধিত তেল ও সারের জন্য মস্কোর উপর নির্ভরতা বজায় রাখতে চাইছে। মস্কোর জন্য, এটি তাদের “বিশেষ ও বিশেষাধিকারপ্রাপ্ত কৌশলগত অংশীদারিত্বকে” আরও মজবুত করার এবং নিষেধাজ্ঞা এড়াতে নতুন অর্থনৈতিক ব্যবস্থা তৈরির একটি সুযোগ। ক্রেমলিন জানিয়েছে, ভারত-রাশিয়া সম্পর্ক আস্থা ও ধারাবাহিকতার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত এবং এই ধারাবাহিকতা মস্কোর বিদেশনীতির কেন্দ্রে রয়েছে। ভারতীয় কর্মকর্তারা বলছেন, বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনগুলি বৈশ্বিক অস্থিরতার মধ্যেও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গতি বজায় রাখতে সহায়তা করে। এটি উভয় দেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত ২৩তম শীর্ষ সম্মেলন।
