অমৃতসর, ২১ অক্টোবর: পাঞ্জাবের সীমান্তবর্তী অমৃতসর জেলায় বড়সড় জঙ্গি হামলার ছক ভেস্তে দিল পুলিশ। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে অমৃতসর গ্রামীণ পুলিশ ও কেন্দ্রীয় সংস্থার যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছে দুই যুবক—মেহকদীপ সিং ওরফে মেহক এবং আদিত্য ওরফে আদি। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ভয়ঙ্কর আরপিজি-২২ নেট্টো রকেট লঞ্চার, যা মূলত সাঁজোয়া যান বা শক্তিশালী টার্গেট ধ্বংস করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
কীভাবে ফাঁস হল ষড়যন্ত্র?
পাঞ্জাব পুলিশের ডিজিপি গৌরব যাদব জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে এই দুই অভিযুক্ত পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর এক অপারেটিভের সঙ্গে যোগাযোগে ছিল। ড্রোনের মাধ্যমে সীমান্ত পার করে পাঠানো হয়েছিল এই প্রাণঘাতী অস্ত্র। এ ছাড়া অমৃতসরের ফেরোজপুর জেলে বন্দি থাকা হারপ্রীত সিং ওরফে ভিকির সঙ্গেও তাদের যোগাযোগ ছিল। ভিকির নির্দেশেই এই অস্ত্র সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছিল মেহক ও আদিত্য।
নাটকীয় গ্রেপ্তার
অমৃতসর রুরাল জেলার এসএসপি মনিন্দর সিং জানান, সুনির্দিষ্ট ইনপুটের ভিত্তিতে পুলিশের একাধিক টিম নজরদারি চালায়। যখন দুই অভিযুক্ত মোটরবাইকে করে রকেট লঞ্চার সরবরাহ করতে যাচ্ছিল, তখনই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
উদ্দেশ্য ছিল ‘টার্গেটেড টেরর অ্যাটাক’
ডিজিপি স্পষ্ট জানিয়েছেন, উদ্ধার হওয়া অস্ত্র কোনও নির্দিষ্ট স্থানে বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলার জন্য ব্যবহার করার পরিকল্পনা ছিল। এখন তদন্ত চলছে—এই হামলার সম্ভাব্য টার্গেট কে ছিল, কারা অস্ত্র নেওয়ার কথা ছিল এবং পুরো নেটওয়ার্কের সঙ্গে আর কারা যুক্ত রয়েছে।
গ্রেপ্তার অভিযুক্তদের পরিচয়
👉 মেহকদীপ সিং (মেহক): অমৃতসরের ওয়াদালি গ্রামের বাসিন্দা।
👉 আদিত্য (আদি): ভগা চিনা গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ তাদের ব্যবহৃত মোটরবাইকও বাজেয়াপ্ত করেছে।
আইনি পদক্ষেপ
ঘটনার পর গরিন্দা থানায় Explosives Substances Act এবং Bharatiya Nyaya Sanhita (BNS)-এর 113 ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। পাশাপাশি জেলে বন্দি হারপ্রীত ওরফে ভিকিকে শিগগিরই প্রোডাকশন ওয়ারেন্টে হাজির করানো হবে জেরা করার জন্য।
সীমান্ত এলাকায় জঙ্গি হামলার জন্য পাকিস্তানি আইএসআই বারবার ড্রোনের মাধ্যমে অস্ত্র পাচারের চেষ্টা করছে। কিন্তু অমৃতসরে পুলিশের তৎপরতায় বড়সড় বিপদ এড়ানো গেল। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘটনাই প্রমাণ করছে—ড্রোনের মাধ্যমে অস্ত্র পাচারের কৌশল এখন সীমান্ত সন্ত্রাসবাদের নতুন রূপ, যার মোকাবিলা করতে আরও উন্নত প্রযুক্তি ও কড়া নজরদারি দরকার।