চণ্ডিগড়: মাদক পাচার (Smuggling Racket) রুখতে ফের বড় সাফল্য পেল পাঞ্জাব পুলিশ। অমৃতসর ও তরণতারনে দুটি পৃথক অভিযানে মোট ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছেন দু’জন মহিলা ও এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। ধৃতদের কাছ থেকে প্রায় ৯ কেজি হেরোইন উদ্ধার হয়েছে। এই ঘটনার পর রাজ্যের বিভিন্ন মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল গৌরব যাদব বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ধৃতরা হলেন হানি (১৮), পরমদীপ সিং ওরফে পরাস (১৮), হরবিন্দর সিং ওরফে হিন্দা (১৯), গুরপ্রীত সিং ওরফে গোপি (২৫) – এরা সকলেই অমৃতসরের বাসিন্দা। অন্যদিকে, তরণতারনের জসবীর কৌর (৪০) ও কুলবিন্দর কৌর (৫৪) নামের দুই মহিলা গ্রেফতার হয়েছেন, যাদের মধ্যে কুলবিন্দর কৌর অমৃতসরের একটি সরকারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা।
এই অভিযান শুরু হয় হানি নামের এক যুবকের গ্রেফতারির মাধ্যমে। তার কাছ থেকে ২০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার হওয়ার পর জেরায় উঠে আসে পরমদীপ সিং-এর নাম। পরমদীপের কাছ থেকে ৫.০৩২ কেজি হেরোইন উদ্ধার হয়। এরপর ধরা পড়ে আরও দুই যুবক—হরবিন্দর হিন্দা ও গুরপ্রীত গোপি। গুরপ্রীতের কাছ থেকে মেলে ৩.০১০ কেজি হেরোইন। সব মিলিয়ে এই মডিউল থেকে ৮.০৬২ কেজি হেরোইন উদ্ধার হয়েছে।
পুলিশ কমিশনার গুরপ্রীত সিং ভুল্লর জানান, ধৃত গুরপ্রীত ও পরমদীপ পাকিস্তান থেকে ড্রোনের মাধ্যমে পাচার হওয়া হেরোইনের চালান সংগ্রহ করত। নির্দিষ্ট জায়গায়, যেমন আবর্জনার স্তূপ বা খুঁটির পাশে প্যাকেট ফেলে দেওয়া হত। পরে সেখান থেকে তারা মাদক সংগ্রহ করে চক্রের মাথা হরপ্রীত ওরফে হ্যাপি জাটের নির্দেশে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দিত।
এছাড়া অন্য অভিযানে পুলিশ তরণতারনের বাসিন্দা জসবীর কৌর ও কুলবিন্দর কৌরকে গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় ১.০০৪ কেজি হেরোইন। তদন্তে উঠে এসেছে, জসবীর কৌর সরাসরি পাকিস্তানের মাদক পাচারকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত। দুটি মডিউলের পিছনে একই পাকিস্তানি চক্র কাজ করছে বলে পুলিশের অনুমান।
ডিজিপি যাদব জানিয়েছেন, পাকিস্তান-ভিত্তিক পাচারকারীরা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করে এই নেটওয়ার্ক চালাচ্ছে। হ্যাপি জাট নামে কুখ্যাত গ্যাংস্টার, যিনি বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করছেন, পুরো চক্রটির মূল ষড়যন্ত্রকারী।
পুলিশের শীর্ষ কর্তারা মনে করছেন, সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় ড্রোন ব্যবহার করে পাকিস্তান থেকে মাদক পাচারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। এবার স্কুল শিক্ষিকার মতো সমাজের একটি দায়িত্বশীল পেশার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তির নাম উঠে আসায় আতঙ্ক আরও বাড়ছে। তদন্তকারীরা বলছেন, শুধুমাত্র জাতীয় পর্যায় নয়, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ছাড়া এই চক্র পুরোপুরি ধ্বংস করা কঠিন হবে।